Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
ফোনে বিধ্বস্ত ভ্যালেন্সিয়া তারকা ফ্রাঁসিস ককেলাঁ

বার্সার চেয়েও কঠিন ছিল রিয়াল ম্যাচ

কোপা দেল রে সেমিফাইনালের প্রথম ম্যাচে নাটমেগের শিকার হয়েছিলেন ককেলাঁ। তাঁর দু’পায়ের ফাঁক দিয়ে বল নিয়ে চলে গিয়েছিলেন মেসি।

অভিনব: মেসির জার্সি খুলে নেওয়ার সেই দৃশ্য। ছবি: টুইটার।

অভিনব: মেসির জার্সি খুলে নেওয়ার সেই দৃশ্য। ছবি: টুইটার।

কৌশিক দাশ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:৪৪
Share: Save:

লা লিগায় দু’জনের লড়াই একেবারেই অসম মানের হলেও, আলোচনার কেন্দ্রে কিন্ত এখন তাঁরাই। এক জনের নাম লিওনেল মেসি। অন্য জন সদ্য আর্সেনাল থেকে ভ্যালেন্সিয়া যোগ দেওয়া ফ্রাঁসিস ককেলাঁ।

কোপা দেল রে সেমিফাইনালের প্রথম ম্যাচে নাটমেগের শিকার হয়েছিলেন ককেলাঁ। তাঁর দু’পায়ের ফাঁক দিয়ে বল নিয়ে চলে গিয়েছিলেন মেসি।

শুক্রবার ভারতীয় সময় সূর্য ওঠার আগে যে ভ্যালেন্সিয়া বনাম বার্সেলোনা সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের খেলা হল, তাতে নাটকীয়তা আরও চরমে উঠল। এ বার মেসির জার্সি টেনে মাথায় ওপরে তুলে দিলেন ককেলাঁ। যার পরে টুইটারের প্রতিক্রিয়া, ‘মেসির জার্সির প্রতি যদি এতই লোভ, তা হলে অন্তত হাফটাইফ পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত ছিল!’’

এ বছরই আর্সেনাল থেকে লা লিগায় এসেছেন এই ফরাসি ফুটবলার। এবং এসেই পড়তে হয়েছে ফুটবল গ্রহের সব চেয়ে ধ্বংসাত্মক দুই ফুটবলারের মুখে। মেসি এবং রোনাল্ডো। মেস্তালায় (ভ্যালেন্সিয়ার ঘরের মাঠ) বার্সেলোনার কাছে ০-২ গোলে হারার ঘন্টা বারো পরে ককেলাঁ ফোনে যখন কথা বললেন আনন্দবাজারের সঙ্গে, তখন গলা শুনে মনে হল, অনেকটাই সামলে নিয়েছেন হারের ধাক্কা।

‘ফুটবল ঈশ্বর’-এর বিরুদ্ধে খেলার অভিজ্ঞতাটা কেমন লাগল? ম্যাচের পরে মুখে কুলুপ এঁটে থাকা ককেলাঁ ভারতের একমাত্র সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলে ফেললেন, ‘‘দেখুন মেসির মতো কিংবদন্তিদের বিরুদ্ধে খেলতে নামার সুযোগ পাওয়াই ভাগ্যের ব্যাপার। একটা বিশেষ অনুভূতি তো হয়ই যখন দেখি মেসির মতো ফুটবলার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে আছে।’’ দু’বার মেসির বিরুদ্ধে খেললেন। দু’বারই হার মানতে হল ভ্যালেন্সিয়াকে। কতটা ভয়ঙ্কর লাগে মেসিকে? ককেলাঁর জবাব, ‘‘এরা সব বিশেষ ফুটবলার। সবাই জানে মেসিরা কী করতে পারে। তবে এটুকু বলব, আমি কিন্তু এই সব ফুটবলারের বিরুদ্ধে খেলার জন্যই লা লিগায় এসেছি।’’ আর মাঠে যে জার্সি টানাটানির ঘটনাটা ঘটল? এ নিয়ে অবশ্য হাল্কা হাসি ছাড়া আর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল না ককেলাঁর কাছ থেকে।

এ বছরের জানুয়ারিতেই আসের্নাল থেকে ভ্যালেন্সিয়ায় যোগ দিয়েছেন এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। এই অল্প সময়ের মধ্যে খেলতে হয়েছে মেসি-রোনাল্ডোর বিরুদ্ধে। এই মাস খানেক সময়ের মধ্যে যে ক’টা ম্যাচ খেলেছেন, তার মধ্যে সব চেয়ে কঠিন কোন ম্যাচটাকে বাছবেন? মেসির কাছে ‘নাটমেগ’ হওয়া ফরাসি ফুটবলার এগিয়ে রাখছেন রিয়াল মাদ্রিদকেই। বলছিলেন, ‘‘এখানে আসার পরে বি‌শ্বের অন্যতম সেরা দু’টো দলের বিরুদ্ধে খেলেছি। রিয়াল এবং বার্সেলোনা। (একটু হেসে) বুঝতেই পারছেন, আমার জীবনটা কিছু সহজ হয়ে যায়নি। তবে দু’টো ম্যাচের মধ্যে যদি বলেন, আমি রিয়াল ম্যাচটাকেই জীবনের কঠিনতম ম্যাচ বলব। আমাকে ডিফেন্সিভ পজিশনে খেলতে হয়েছিল। সেন্টার ব্যাকের জায়গায়। তখন বুঝেছিলাম, রিয়ালের আক্রমণের শক্তি কতটা।’’ (ওই ম্যাচে চার গোল দিয়েছিলেন রোনাল্ডোরা)। তবে দুই কিংবদন্তির মধ্যে তুলনায় যেতে নারাজ ককেলাঁ।

২৬ বছরের এই তরুণ যখন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ থেকে লা লিগায় আসেন, নিজের সামনে লক্ষ্য রেখেছিলেন, যত বেশি সম্ভব ম্যাচ খেলা। নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু কেরিয়ারের শুরুর দিকে এ রকম একের পর এক ধাক্কা কি আপনার সামনে চ্যালেঞ্জটা আরও কঠিন করে তুলছে না? জবাব এল, ‘‘দেখুন, আপনাদের হয়তো স্কোর দেখে মনে হচ্ছে আমরা খারাপ খেলছি, কিন্তু ব্যাপারটা তা নয়। আমাদের গত কয়েক সপ্তাহের ম‌ধ্যে বিশ্বের সেরা দু’টো দলের সঙ্গে খেলতে হয়েছে। তা ছাড়া আটলেটিকো মাদ্রিদের বিরুদ্ধেও খেলেছি। আমাদের খেলা খারাপ হচ্ছে না। এ বার রেজাল্টটা ঠিকঠাক হলেই হবে।’’

এ বার তা হলে সামনে কী লক্ষ্য ভ্যালেন্সিয়ার? দু’টোর কথা বলছেন ককেলাঁ। প্রথমটা লেভন্তের বিরুদ্ধে রবিবারের ভ্যালেন্সিয়া ডার্বি। যেখানে জিতে তিন পয়েন্ট তুলতে চান। দ্বিতীয়টা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতাঅর্জন করা। মেসির কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার পরে প্রাক্তন আর্সেনাল ফুটবলার এখন কী ভাবে ঘুরে দাঁড়ান, সেটাই দেখার।

ভ্যালেন্সিয়া ডার্বি: ভ্যালেন্সিয়া বনাম লেভন্তে (রবিবার রাত ১.১৫ সোনি টেন টু/সোনি টেন টু এইচডি চ্যানেলে)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE