টেস্ট ম্যাচের আগের দিন ভারতীয় দলের প্র্যাকটিসে মাত্র দু’জন? বাকি দল কোথায়? কোনও বোলারের দেখা নেই! খোঁজ নিয়ে জানা গেল, প্রাক-ম্যাচ অনুশীলন পর্বকে ‘অপশনাল’ করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, আসতেও পারো, না-ও আসতে পারো। যার যার ইচ্ছা। বাধ্যতামূলক কিছু নেই। এর আগে কখনও এমন জিনিস দেখা যায়নি যে, টেস্ট ম্যাচের আগের দিন পুরো টিম বিশ্রাম করছে।
কিন্তু এখন থেকে এটাই নতুন রীতি হতে চলেছে। যেহেতু টেস্ট ম্যাচে পাঁচ দিন ধরে ধকল নিতে হয়, ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট ঠিক করেছে, আগের দিন একেবারেই ধকল নেওয়া যাবে না। বরং বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা হচ্ছে, পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচে নামার আগের দিনটা বিশ্রাম নিয়ে তরতাজা থেকে পুরো এনার্জি নিয়ে খেলতে নামো।
রবি শাস্ত্রী-বিরাট কোহালি জমানায় এতকালের একটা প্রথা তাই পাল্টে যাচ্ছে। ভাবনাটা প্রথম আসে বোলারদের বিশ্রাম দেওয়ার পরিকল্পনা থেকে। শ্রীলঙ্কাতে রোদের খুব তেজ। আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি। এই পরিবেশে পর-পর দু’দিন পুরোদস্তুর প্র্যাকটিস করলে মহম্মদ শামি-রা ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারেন। পেশিতে টান লাগার আশঙ্কা রয়েছে। চোট-আঘাতও হতে পারে।
অতীতে বহু বার এমন দেখা গিয়েছে যে, টেস্টের আগের দিন অতিরিক্ত ধকল নিতে গিয়ে কেউ চোট পেয়েছেন বা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। শেষ বেলায় কোনও গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার ছিটকে যাক দল থেকে, এই ঝুঁকি আর নেওয়া হবে না। সেই কারণেই টেস্টের আগের দিন প্র্যাকটিসকে আর বাধ্যতামূলক রাখা হবে না। এ দিন যেমন কে এল রাহুল এবং চেতেশ্বর পূজারাই শুধু এলেন। ঘণ্টাখানেক নেটে ব্যাটিং করে তাঁরা ফিরে গেলেন হোটেলে। শ্রীলঙ্কার গরমের কারণে নতুন এই প্রথা চালু হলেও অন্যান্য জায়গাতেও একই রুটিন অনুসরণ করা হবে বলে খবর।
আরও পড়ুন: লর্ডস থেকে ফিরে ক্যামেরায় মুখোমুখি ঝুলন
টিমের সঙ্গে যুক্ত এক জন যেমন বলছিলেন, ‘‘একদিনে তো আর কারও বাড়তি স্কিল যোগ হবে না। বা ভুলগুলো শুধরে যাবে না। তাই আমরা ঠিক করেছি, টেস্টের আগের আগের দিন নিংড়ে নেওয়া সেরা অনুশীলন পর্বটা সেরে নেব। আর টেস্টের আগের দিন ক্রিকেটারদের বিশ্রামে থাকার সুযোগ দেওয়া হবে যাতে সম্পূর্ণ তরতাজা অবস্থায় ওরা টেস্ট ম্যাচে খেলতে নামতে পারে।’’
এই ফর্মুলা মেনে মঙ্গলবার এসএসসি-তে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে প্র্যাকটিস করেছিল ভারত। কোহালি দু’বার ব্যাট করেন। কে এল রাহুলও তাই। মহম্মদ শামি, উমেশ যাদব, ইশান্ত শর্মারা টানা নেটে বল করে যাচ্ছিলেন। চুটিয়ে ফিল্ডিং প্র্যাকটিস করে টিম। পুরোদস্তুর সেই ট্রেনিং দেখে যদিও বোঝা যায়নি যে, টিমের প্র্যাকটিস নীতিতে পরিবর্তন করে ফেলা হয়েছে। এ দিন মাত্র দু’জন অনুশীলনে আসায় নতুন ফর্মুলার খোঁজ পাওয়া গেল।
এর আগে সচিন তেন্ডুলকরকে দেখা যেত, ম্যাচের আগের দিন পুরোপুরি ‘রিল্যাক্স’ করতেন। মাঠে দলের প্র্যাকটিসে ঠিকই আসতেন সচিন। কিন্তু নেটে ব্যাটিং করতেন না। মনে করা হতো, খিদে বাড়ানোর জন্য সচিন ম্যাচের আগের দিন ব্যাট করতেন না। এখন দেখা যাচ্ছে কোহালির টিমও একই পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কতটা ফল দেবে এই নতুন ফর্মুলা সময়ই বলবে। তবে কলম্বোর চড়া রোদ আর গলা শুকিয়ে আসা আবহাওয়ায় অভিনব পরিকল্পনা বলেই মনে হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy