মেয়ের সঙ্গে মৌমা। নিজস্ব চিত্র
পদ্মশ্রী পাচ্ছেন, প্রথমে বিশ্বাস করেননি। কারণ এর আগে সারা দেশে টেবিল টেনিসে পদ্মশ্রী পেয়েছেন শুধু শরথ কমল। তাই বিশ্বাস করতে কিছুটা সময় লেগেছিল বাংলার টেবিল টেনিস তারকা মৌমা দাসের। তারপর একের পর এক অভিনন্দন বার্তায় ভেসে যেতে থাকেন। পদ্মশ্রী ইতিমধ্যেই উৎসর্গ করেছেন নিজের মেয়ে অদিত্রীকে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকেই শুরু করবেন অনুশীলন। একেবারে শূন্য থেকে শুরু করতে হবে সবকিছু। কাজটা খুব কঠিন, মানছেন মৌমাও। মঙ্গলবার আনন্দবাজার ডিজিটালকে সাক্ষাৎকার দিলেন তিনি।
প্রশ্ন: টেবিল টেনিস বেছে নেওয়ার কারণ কী?
মৌমা: ছোট থেকেই খুব দুষ্টু, চঞ্চল ছিলাম। তার ওপর আমাদের এলাকায় টেবিল টেনিস খেলা হত। সেটা আমাকে টানত। আমার কাকা টিটি কোচ ছিলেন। ওঁর কাছেই প্রথম খেলা শেখা। বল কুড়োতে কুড়োতে আমার এই খেলাটা ভাল লেগে যায়। তারপর টিটিকেই বেছে নিয়েছি।
প্রশ্ন: ভারতের দ্বিতীয় টেবিল টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে পদ্মশ্রী পাওয়াটা কীভাবে দেখছেন?
মৌমা: সত্যিই এটা দারুণ ব্যাপার। খুবই সম্মানের। দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেল। ভবিষ্যতের খেলোয়াড়রা হয়ত এটা দেখে অনুপ্রাণিত হবে। আমিও অনেকদিন প্র্যাকটিস করিনি। এই পুরস্কারটা আমাকেও অনুপ্রাণিত করবে আরও এগিয়ে যাওয়ার জন্য।
প্রশ্ন: ৩৬ বছর বয়সে কি তাহলে অলিম্পিক্স খেলার স্বপ্ন দেখছেন?
মৌমা: খুব কঠিন। তাই এই অলিম্পিক্স নিয়ে আমি ভাবছি না। ফেব্রুয়ারি থেকেই নতুন করে সবকিছু শুরু করব। ঘরোয়া টুর্নামেন্টে ভাল খেলে ধাপে ধাপে এগোতে চাই। দীর্ঘদিন প্র্যাকটিসের বাইরে রয়েছি। তাই দেখেশুনে এগোতে চাই। এছাড়া ২০২০-তে যে অলিম্পিক্স হওয়ার কথা ছিল, তার জন্য অনেক প্লেয়ারকেই নির্বাচন করা হয়ে গেছে। সেই সময় আমি অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম। তাই খেলতে পারিনি। এবার অলিম্পিক্সে জায়গা পাব কিনা জানি না। এখনই এসব নিয়ে ভাবছি না।
প্রশ্ন: মা হওয়ার পর খেলায় ফিরেছেন। নিজের সঙ্গে সেরেনা উইলিয়ামসের মিল পান?
মৌমা: মিল ঠিক নয়, তবে আমি সেরেনার খেলা দেখি। ওঁর কথা পড়েছি। আমার ক্ষেত্রেও দুই পরিবারই আমাকে খুব সাহায্য করে। মেয়ে খুব ছোট। আর এখন যা পরিস্থিতি, অন্য কাউকে ওর দেখভালের জন্য রাখতেও পারছি না। আমার মা, শাশুড়ি, কাকিমা দেখাশোনা করেন। বাবা, স্বামীও খুব সাহায্য করেন। মেয়েও চায় আমি খেলি। আর সবার ওপর ঈশ্বর তো আছেনই।
প্রশ্ন: মেয়েকে নিয়ে কী স্বপ্ন?
মৌমা: ও এখন অনেকটাই ছোট। একটু বড় হোক, তারপর ভাবব। তবে ও গান শুনতে খুব ভালবাসে। আমার মেয়ে আমার জন্য খুব লাকি।
প্রশ্ন: বাংলার আরও একজন টেবিল টেনিস খেলোয়াড় পৌলমী ঘটক আপনার দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং প্রতিদ্বন্দ্বী। এই প্রতিযোগিতা কতটা উপভোগ করেন?
মৌমা: আমাদের এই প্রতিযোগিতা আমাকে প্রথম থেকেই খুব সাহায্য করেছে। আমরা টেবিলে একে অপরের প্রতিপক্ষ। তার বাইরে খুব ভাল বন্ধু। একসঙ্গে বহু জায়গায় গিয়েছি। সবকিছুই শেয়ার করতাম।
প্রশ্ন: ভবিষ্যতের পরিকল্পনা কী?
মৌমা: আমি কোন কিছুই পরিকল্পনা করে করি না। তাই পরপর এগোতে চাই। ধাপে ধাপে পুরনো জায়গা ফিরে পেতে হবে। কাজটা খুব কঠিন। আগে ব্যাট, বল ধরে নিজেকে ফিট করব। তারপর ঘরোয়া টুর্নামেন্টে ভাল খেলতে পারলেই আন্তর্জাতিক স্তরে খেলার ছাড়পত্র পাওয়া যাবে।
প্রশ্ন: খেলা ছাড়ার পর টেবিল টেনিসকে কীভাবে সাহায্য করতে চান?
মৌমা: অবশ্যই যা শিখেছি, সেটা সবার মধ্যে ভাগ করে দিতে চাইব। চেষ্টা করব আরও খেলোয়াড় তুলে আনতে। তবে পুরোপুরি কোচিংয়ে আসার পরিকল্পনা এখনই নেই। তবে তখন সবটা ভাবব। চাইব ভারতে যাতে আরও মেডেল আসে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy