হতাশ বিনেশ ফোগাট। ছবি: রয়টার্স।
১০০ গ্রাম ওজন বেশি হওয়ায় অলিম্পিক্স থেকে বাতিল করা হয়েছে ভারতীয় কুস্তিগির বিনেশ ফোগাটকে। ফাইনালে নামতে পারেননি তিনি। হাতছাড়া হয়েছে সোনা জেতার সুযোগ। বিনেশের ঘটনার পরেই প্রকাশ্যে এসেছে অলিম্পিক্সের নিয়ম বদলের বিষয়। নিয়ম বদলের খেসারতই কি দিতে হল বিনেশকে?
২০২১ টোকিয়ো অলিম্পিক্সের আগে কুস্তির নিয়ম আলাদা ছিল। অর্থাৎ, ২০১৬ রিয়ো অলিম্পিক্স পর্যন্ত কুস্তিতে একটি বিভাগের সব ম্যাচ এক দিনেই হয়ে যেত। ফলে কুস্তিগিরদের এক দিনই খেলতে হত। সেই দিনই তাঁদের ওজন মাপা হত। পরের দিনের কোনও বিষয় ছিল না।
অবশ্য যাট-সত্তরের দশকে কুস্তির নিয়ম অন্য রকম ছিল। কুস্তিতে অলিম্পিক্সে ভারতের হয়ে প্রথম পদক জিতেছিলেন কেশব যাদব। ১৯৫২ হেলসিঙ্কি অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন তিনি। সেই সময় আগে পাঁচটি রাউন্ড হত। তার পরে শুরু হত পদক জয়ের লড়াই। ২০ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত তিন দিন ধরে চলেছিল প্রতিযোগিতা। সেই নিয়ম পরে বদলে যায়। তার সুবিধা পান ভারতের আরও তিন পদক জয়ী কুস্তিগির।
২০০৮ সালে বেজিং অলিম্পিক্সে ৬৬ কেজি বিভাগে ব্রোঞ্জ জেতেন সুশীল সিং। গোটা প্রতিযোগিতা হয় ২০ অগস্ট। সুশীল প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেন সকাল ১০টায়। পরে বিকাল ৪টে ও ৪.২০ মিনিটে দু’টি রেপেশাজ রাউন্ড খেলতে হয় সুশীলকে। ব্রোঞ্জ পদকের ম্যাচ তিনি খেলেন বিকাল ৫.১০ মিনিটে।
২০১২ লন্ডন অলিম্পিক্সে পুরুষদের ৬০ কেজি বিভাগে যোগেশ্বর দত্তও একই সুবিধা পান। ১১ অগস্ট হয় পুরো প্রতিযোগিতা। বেলা ১.০৯ মিনিটে যোগ্যতাঅর্জন পর্ব খেলেন তিনি। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেন বেলা ২.৩০টেয়। বিকাল ৫.৪৫ মিনিট ও সন্ধ্যা ৬.০৫ মিনিটে দু’টি রেপেশাজ রাউন্ড খেলেন তিনি। পরে সন্ধ্যা ৬.৩৮ মিনিটে ব্রোঞ্জ পদকের ম্যাচ খেলে ব্রোঞ্জ জেতেন তিনি।
লন্ডন অলিম্পিক্সেই পুরুষদের ৬৬ কেজি বিভাগে রুপো জেতেন সুশীল। ১২ অগস্ট হয় গোটা প্রতিযোগিতা। সকাল ৮.৪৮ মিনিটে সুশীল প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেন। ৯.৪২ মিনিটে খেলেন কোয়ার্টার ফাইনাল। ১০.১৮ মিনিটে খেলেন সেমিফাইনাল। দুপুর ২.০৩ মিনিটে ফাইনালে নামেন সুশীল।
২০১৬ রিয়ো অলিম্পিক্সে মহিলাদের ৫৮ কেজি বিভাগে রুপো জেতেন সাক্ষী মালিক। ১৭ অগস্ট সকাল ১০টা থেকে হয় যোগ্যতাঅর্জন পর্ব। বিকাল ৪টে থেকে শুরু হয় রেপেশাজ রাউন্ড। বিকাল ৫টায় হয় ফাইনাল।
২০২১ টোকিয়ো অলিম্পিক্স থেকে ছবিটা বদলে যায়। পুরুষদের ৬৫ কেজি বিভাগে ব্রোঞ্জ জেতেন বজরং পুনিয়া। ৬ অগস্ট বেলা ১১টা থেকে যোগ্যতাঅর্জন পর্ব ও সন্ধ্যা ৬.১৫ মিনিট থেকে সেমিফাইনাল হয়। পরের দিন অর্থাৎ, ৭ অগস্ট সন্ধ্যা ৬.৪৫ মিনিট থেকে রেপেশাজ রাউন্ড হয়। সে দিনই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হয় ফাইনাল।
সে বারই পুরুষদের ৫৭ কেজি বিভাগে রুপো জেতেন রবি দাহিয়া। ৪ অগস্ট বেলা ১১টা থেকে যোগ্যতাঅর্জন পর্ব ও সন্ধ্যা ৬.১৫ মিনিট থেকে সেমিফাইনাল হয়। পরের দিন অর্থাৎ, ৫ অগস্ট বেলা ১১টা থেকে রেপেশাজ রাউন্ড হয়। সে দিনই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হয় ফাইনাল।
এ বারও সেই ঘটনা হয়েছে। ৬ অগস্ট প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল, কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনাল খেলেছেন বিনেশ। ৭ অগস্ট ফাইনাল খেলার কথা ছিল তাঁর। এক দিনে পুরো প্রতিযোগিতা হয়ে গেলে এক বারই ওজন মাপা হয়। সেই সুবিধা সুশীল, সাক্ষীরা পেয়েছিলেন। কিন্তু দু’দিন ধরে খেলা হলে দু’দিনই ওজন মাপা হয়। সে ক্ষেত্রে দু’দিনই নিজের ওজন ঠিক রাখতে হয় কুস্তিগিরদের। বজরং ও রবি সেটা করতে পেরেছিলেন বলেই পরের দিন খেলে পদক জিতেছিলেন। কিন্তু বিনেশ তা পারলেন না। প্রথম দিন ওজন ঠিক থাকলেও পরের দিন ১০০ গ্রাম ওজন বেড়ে যাওয়ায় বাতিল হতে হল তাঁকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy