সেরিনাকে সান্ত্বনা। (ডান দিকে) লকাররুমে ট্রফি হাতে চ্যাম্পিয়ন মুগুরুজা। ছবি: এএফপি
স্টেফি গ্রাফ এখন কোথায়? লাস ভেগাসে? ম্যানহেইমে? নাকি প্যারিসেই! শনিবারের ফরাসি ওপেন ফাইনাল কি টিভিতে দেখেছে? বা ইন্টারনেটে? যেখানেই থাক, খেলা দেখুক কি না, রেজাল্ট জানার পরে মনে মনেও কি একটু হাসেনি?
এক বার নয়, দু’বার নয়, টানা তিন বার স্টেফির সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার রেকর্ড ছোঁয়ার তীরে এসে তরী ডুবিয়ে বসল সেরিনা উইলিয়ামস। একুশ থেকে বাইশে পৌঁছনো হচ্ছে না আর কিছুতেই! প্রায় এক বছর আগে উইম্বলডন জেতার পর মনে হয়েছিল, স্টেফিকে ওই মরসুমেই না টপকে যায়। অথচ প্রথমে ইউএস ওপেন সেমিফাইনাল, তার পরে অস্ট্রেলীয় আর ফরাসি ওপেন ফাইনালে হারল সেরিনা। প্রতি বার হটফেভারিট থাকা সত্ত্বেও।
তবু এর পরেও সেরিনা-যুগ শেষ আমি মনে করি না। এখনও যে মেয়েটা বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর, প্রতিটা গ্র্যান্ড স্ল্যামে শীর্ষ বাছাই, গত বছরও চারটের মধ্যে তিনটে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছে, এ মরসুমে দু’টো মেজরেই ফাইনালিস্ট, রোলাঁ গারোয় আসার ঠিক আগে রোমে চ্যাম্পিয়ন, পেশাদার ট্যুরে তার যুগ শেষ বলি কী ভাবে? মাসখানেকের মধ্যেই হয়তো উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হবে। ঘাসের কোর্টে বল স্কিড করায় সেরিনার পাওয়ারফুল সার্ভ-ভলি গ্রাউন্ডস্ট্রোক আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে।
আমার বরং মনে হচ্ছে, ভাবীকাল সেরিনাকে সেরার পাশাপাশি সেরা চোকার্সও বলবে। মনে করে দেখুন, ইউএস ওপেন সেমিফাইনালে এক সেট এগিয়েও শেষমেশ হেরেছে রবার্তা ভিঞ্চির কাছে। অস্ট্রেলীয় ওপেন ফাইনালে দ্বিতীয় সেট জিতে সমতা ফিরিয়েও চূড়ান্ত সেটে পারেনি কের্বারের বিরুদ্ধে। এ দিন রোলাঁ গারোয় প্রথম সেটে ‘ব্রেক ব্যাক’ করে ৫-৫ এসেও দু’টো গেম পরেই ফের নিজের সার্ভিস নষ্ট করে ৫-৭ হেরে বসল। এমনকী দ্বিতীয় সেটের গোড়ায় সেই যে সার্ভিস গেম হারাল আর উঠে দাঁড়াতে পারল না। হারল ৫-৭, ৪-৬। এগুলো চোকিং নয়তো কী!
এ দিন সেরিনার ডোবার আরও দু’টো ফ্যাক্টর আছে। চব্বিশ ঘণ্টা আগের সেমিফাইনাল থেকে ওর অ্যাডাক্টর মাসলের চোট। আর ওর ক্রমশ খেলার স্ট্যান্ডার্ড পড়ে যাওয়া। পেশিবহুল সেরিনার শটে পাওয়ার হয়তো কমেনি, কিন্তু কোর্ট কভারিং আগের চেয়ে স্লো হয়ে গিয়েছে। এ দিন বিগ পয়েন্টগুলোর বেশির ভাগ যে রিটার্ন শটে হেরেছে তার বড় কারণ বলের কাছে আসতে আগের চেয়ে কয়েক সেকেন্ড দেরি করে ফেলা। নইলে ফাইনালের স্ট্যাটস যদি দেখেন, তাতে ‘এস’, ডাবল ফল্ট, নেটে আসা, উইনার মারা, আনফোর্সড এরর, কোর্টে মোট দৌড়নো (মিটারের হিসেবে)— সব কিছুতে প্রতিপক্ষ মুগুরুজার চেয়ে সেরিনার পরিসংখ্যান ভাল!
মুগুরুজার লম্বা (ছয়-এক) ছিপছিপে চেহারা, পাওয়ারফুল সার্ভ-ভলি, গ্রাউন্ডস্ট্রোক সেরিনার টেনিস-স্টাইলকে বশ মানানোর জন্য আমার মতে আদর্শ। ভেনেজুয়েলায় জন্ম, সুইৎজারল্যান্ডে বসবাস, খেলে স্পেনের হয়ে—অদ্ভুত প্যাকেজ এই মুগুরুজা। উইম্বলডন ফাইনালেও তো সেরিনার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সেটে ৩-০ এগিয়ে গিয়েছিল। জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালের প্রবল চাপ থাকায় সে দিন হয়তো শেষমেশ জেতেনি। কিন্তু দ্বিতীয় বার আর সেই ভুল করেনি বাইশের মেয়েটা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy