Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Mohun Bagan

সেরা হয়েও চার্চিলের কাছে হারের যন্ত্রণা ভোলেননি কিবু

আই লিগের দ্বিতীয় ম্যাচে এই কল্যাণী স্টেডিয়ামেই চার্চিল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে প্রথম পর্বে হারের পরে ‘গো ব্যাক’ ধ্বনি শুনতে হয়েছিল তাঁকে। মঙ্গলবার সেই কিবু ভিকুনাকে একবার ছোঁয়ার জন্য প্রাণ বাজি রাখতেও তৈরি ছিলেন মোহনবাগান সমর্থকেরা।

অপ্রতিরোধ্য: কোচ কিবুকে কাঁধে তুলে নিয়ে ফের আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উৎসব মোহনবাগান ফুটবলারদের। মঙ্গলবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

অপ্রতিরোধ্য: কোচ কিবুকে কাঁধে তুলে নিয়ে ফের আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উৎসব মোহনবাগান ফুটবলারদের। মঙ্গলবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
কল্যাণী শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২০ ০৪:৩৮
Share: Save:

আই লিগের দ্বিতীয় ম্যাচে এই কল্যাণী স্টেডিয়ামেই চার্চিল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে প্রথম পর্বে হারের পরে ‘গো ব্যাক’ ধ্বনি শুনতে হয়েছিল তাঁকে। মঙ্গলবার সেই কিবু ভিকুনাকে একবার ছোঁয়ার জন্য প্রাণ বাজি রাখতেও তৈরি ছিলেন মোহনবাগান সমর্থকেরা। এক জনকে দেখা গেল দৌড়ে এসে স্পেনীয় কোচের মুখে সবুজ আবির মাখিয়ে দিচ্ছেন। টিম ম্যানেজমেন্টের এক সদস্য বোতল থেকে জল ছেটাচ্ছেন। শিশুর মতো চিৎকার করছেন সুহের ভি পি, কোমরন তুর্সুনভ। উৎসবের আবহেও কিবুর মনে কাঁটার মতো বিঁধে রয়েছে চার্চিলের বিরুদ্ধে হারের যন্ত্রণা।

সমর্থকদের মধ্যে দাঁড়িয়েই উত্তেজিত মোহনবাগান কোচ বললেন, ‘‘চার্চিলের বিরুদ্ধে আমরা সে দিন অসাধারণ খেলেছিলাম। দুর্ভাগ্য যে জিততে পারিনি। অথচ আজ প্রত্যাশা অনুযায়ী না খেলেও জিতলাম। এই কারণেই ফুটবল এত রোমাঞ্চকর।’’

মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে ফিরে ফুটবলারদের সঙ্গে কেক কাটার পরে যখন পাপা বাবাকর জিয়োহারাকে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে এলেন কিবু, তখন অনেকটাই শান্ত। বললেন, ‘‘চার ম্যাচ বাকি থাকতেই আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দটাই আলাদা। ফুটবলার নির্বাচন করা অনেকটা ধাঁধার মতো। মেলাতে না পারলেই সর্বনাশ।’’ তিনি যোগ করলেন, ‘‘সব চেয়ে ভাল লাগছে সমর্থকদের খুশি করতে পেরে।’’

শুধু চার্চিল ম্যাচের হার নয়। ডুরান্ড ও কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ জিততে না পারার হতাশাও এখনও ভুলতে পারেননি মোহনবাগান কোচ। বললেন, ‘‘ভাল খেলেও ডুরান্ড কাপ আমরা জিততে পারিনি। কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে বেশ কিছু ম্যাচে নিজেদের ভুলে জয় হাতছাড়া করেছিলাম।’’ মঙ্গলবার আইজল যে চাপে ফেলে দিয়েছিল, স্বীকার করে নিয়েছেন কিবু। বললেন, ‘‘আইজল আমাদের কঠিন পরীক্ষার মুখে ফেলে দিয়েছিল। নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারিনি বলেই চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত, লড়াই করতে পেরেছি বলেই জিতেছি।’’

মোহনবাগান সমর্থকদের মতো কিবুও উচ্ছ্বসিত পাপাকে নিয়ে। বলছিলেন, ‘‘আমাদের দলের অন্যতম সেরা অস্ত্র পাপা। প্রায় সব ম্যাচেই গোল করছে ও। পাপাই পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে।’’

মোহনবাগানের আই লিগ জয়ের পরে কার্যত গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে রবিবারের ডার্বি। কিবু যদিও তা মানছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা পেশাদার। সব ম্যাচেই আমরা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে নামি। ডার্বিতেও তার ব্যতিক্রম হবে না। সেরা দলই নামাব আমরা।’’

মঙ্গলবার ম্যাচ চলাকালীন থমথমে মুখে প্রেসবক্সে বসেছিলেন মোহনবাগানের আর এক স্পেনীয় তারকা ফ্রান মোরান্তে। কার্ড সমস্যায় তিনি খেলতে পারেননি। কিন্তু পাপা গোল করার পরেই ব্যাগ থেকে জার্সি বের করে পরে নীচে নেমে যান তিনি। কিন্তু ম্যাচ শেষ না হওয়ায় তাঁকে ভিতরে ঢুকতে দিচ্ছিলেন না নিরাপত্তারক্ষীরা। রেফারি শেষ বাঁশি বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে আর আটকানো যায়নি মোরান্তেকে। মাঠে ঢুকেই জড়িয়ে ধরলেন কোমরন তুর্সুনভকে। বলছিলেন, ‘‘খেলতে না পারার যন্ত্রণা কিছুটা লাঘব হল দল

চ্যাম্পিয়ন হওয়ায়।’’

তাজিকিস্তানের তুর্সুনভ এ মরসুমেই সই করেছেন মোহনবাগানে। যদিও ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল তিনি। তাঁর প্রিয় দুই তারকার নাম যে মিঠুন চক্রবর্তী ও শাহরুখ খান! চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে মাঠে দাঁড়িয়েই গাইছিলেন, ‘তুম পাস আয়ে...’। বললেন, ‘‘তাজিকিস্তানে মিঠুন ও শাহরুখ প্রচণ্ড জনপ্রিয়। সকলেই হিন্দি সিনেমা দেখে।’’ মোহনবাগানে অভিষেকের মরসুমেই আই লিগ জয়ের অনুভূতি কী? সবুজ-মেরুন পতাকা কাঁধে মাঠ প্রদক্ষিণ করতে করতে বললেন, ‘‘এই অনুভূতি প্রকাশ করা কঠিন। তবে গোল করতে পারলে ভাল লাগত।’’

উচ্ছ্বসিত ড্যানিয়েল সাইরাসও। ব্রায়ান চার্লস লারার দেশের ডিফেন্ডার বললেন, ‘‘বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খেললেও ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগোর বাইরে কখনও ট্রফি জিতিনি। সেই আক্ষেপ এত দিনে দূর হল।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy