ইস্টবেঙ্গল কোচ মারিয়ো রিভেরা
সাতসকালে এক মনে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠে অনুশীলন করছিলেন তিনি। চলতি বছরের শুরুতে গোয়ায় ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে তাঁর গোলেই জিতেছিল চার্চিল ব্রাদার্স। লাল-হলুদ শিবিরের সেই প্রাক্তন ফুটবলার উইলিস প্লাজ়া অনুশীলন সেরে টিম বাসে উঠছিলেন নিস্পৃহ ভাবে। শনিবার তাঁর পুরনো দল ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে যুবভারতীতে কী হবে? জানতে চাইলে আই লিগে সাত গোল করা ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগোর স্ট্রাইকার উত্তর দেন, ‘‘আমার কাজই তো গোল করা। গত ম্যাচে ঘরের মাঠে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে হার মানা যাচ্ছে না। সেই ভুলগুলো শুধরে শনিবার জিততেই হবে আমাদের। ’’
আই লিগে এই মুহূর্তে ১২ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে ১১ দলের আই লিগে চার নম্বরে রয়েছে চার্চিল। তাদের প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গল ১৩ ম্যাচের পরে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে পাঁচ নম্বরে। যারা নতুন স্পেনীয় কোচ মারিয়ো রিভেরার প্রশিক্ষণে শেষ তিন ম্যাচে অপরাজিত। প্লাজ়ার হুঙ্কার শুনে বিনয়ী সুরে ইস্টবেঙ্গল কোচ মারিয়োও পাল্টা বলেন, ‘‘বেশ কিছু নতুন পদ্ধতি আয়ত্ত করেছি আমরা। এখন আমাদের আক্রমণের পদ্ধতি অনেকটা বদলেছে। আরও উন্নতি করতে হবে। বিপক্ষে বিশেষ কাউকে দেখে কুঁকড়ে যাওয়ার কিছু হয়নি। চার্চিল ব্রাদার্সে প্লাজ়া ছাড়াও বেশ কিছু ভাল ভারতীয় ও বিদেশি ছেলে রয়েছে। দেখা যাক নব্বই মিনিট খেলার পরে কী হয়।’’ যোগ করেন, ‘‘জোড়া জয়ের পরে আমাদের দলের আত্মবিশ্বাস কিন্তু এখন তুঙ্গে। ছেলেরাও অনুশীলনে নিজেদের নিংড়ে দিচ্ছে।’’ তবে ইস্টবেঙ্গল কোচ মারিয়ো বা চার্চিলের পর্তুগিজ কোচ রবের্তো তাভারেস দু’জনেই লিগে উত্থান-পতন নিয়ে মন্তব্য করতে চান না। দু’জনেই বলছেন, ‘‘আমরা ম্যাচ প্রতি চিন্তাভাবনা করছি।’’
গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে কার্ড সমস্যার জন্য আবার ইস্টবেঙ্গল খেলাতে পারবেন না কাশিম আইদারা। সেই জায়গায় প্লাজ়া, দওদা সিসেদের আক্রমণ ভোঁতা করার জন্য চার ব্যাকের আগে খেলবেন ইস্টবেঙ্গলের নবাগত রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার ভিক্তর পেরেস আলোন্সো। অতীতে লা লিগার দল ভায়াদোলিদ, লেভন্তে ও ভারতে বেঙ্গালুরু এফসি-তে খেলে আসা এই ফুটবলার লাল-হলুদ জার্সি পরে মাঠে নেমেই সমর্থকদের মন জিতেছেন। বিপক্ষের আক্রমণ রোখার পাশাপাশি নিখুঁত ঠিকানা লেখা পাস বাড়িয়ে তিনি গত ম্যাচেই সচল করেছেন খুয়ান মেরা গঞ্জালেস ও খাইমে সান্তোস কোলাদোকে। দ্বিতীয় জনের খেলায় ফের গত বছরের ঝলক। ইস্টবেঙ্গল কোচ মারিয়োও মানছেন, ‘‘ভিক্তরের আগমনে শক্তিশালী হয়েছে আমাদের দল।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘কল্যাণীর পরিবর্তে যুবভারতীতে খেলায় আমরা আরও আক্রমণাত্মক খেলতে পারব।’’ যা শুনে ভিক্তরও বলছেন, ‘‘প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে জিতেছি। চার্চিলের বিরুদ্ধে সেই ধারাও বজায় রাখতে হবে আমাদের।’’
তবে এরই মধ্যে খচখচ করছে ক্রোমা-কাঁটা। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে সে প্রশ্নও উঠল। যা শুনে সতর্ক ইস্টবেঙ্গল কোচ বলে দেন, ‘‘ক্রোমা আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ওর মন খারাপ নিয়ে কিছু জানা নেই। আমার দলে গুরুত্বপূর্ণ হল ফুটবলারদের পারফরম্যান্স। আমি তো প্রত্যেককে নিয়ে বেশ রয়েছি।’’ ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে পরমুহূর্তেও যদিও যোগ করেন, ‘‘বিরতিতে কোনও ফুটবলারকে তুলে নিলে তার যদি মন খারাপ হয়, তা হলে দলের স্বার্থেই তার মন ভাল রাখা জরুরি। এটা তাকে বুঝতে হবে।’’
ইস্টবেঙ্গল কোচ জানেন শনিবার সমর্থকদের সামনে যুবভারতীতে চার্চিলকে হারাতে পারলে লিগ তালিকায় তিন নম্বরে উঠে আসবে তাঁর দল। তাই এ দিন অনুশীলন দেখেই স্পষ্ট ক্রোমাকে দলে রেখেই চার্চিলকে হারানোর পরিকল্পনা করছেন তিনি। কিন্তু জনি আকোস্তা চলে এলে? এ বার কোনও মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। আর আকোস্তার এই ম্যাচে না থাকা নিয়েও মুখে ইঙ্গিতপূর্ণ হাসি খেলে যায় চার্চিল ব্রাদার্সের গাম্বিয়া থেকে আসা ফুটবলার দওদা সিসের মুখে। বলেন, ‘‘এই সুযোগ আমাদের কাজে লাগাতেই হবে।’’
পর পর দুই ম্যাচে জেতার কারণেই বহু দিন পরে ইস্টবেঙ্গল অনুশীলনে ছিল সমর্থকদের ভিড়। এদেরই কেউ কেউ এ দিন যুবভারতীর বিভিন্ন গেটে ব্যানার ঝুলিয়ে দেন, যুবভারতীতে ‘‘নো ইস্টবেঙ্গল, নো আইএসএল।’’ ফলে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে আগামী বছর প্রিয় দল আইএসএলে খেলবে কি না তা নিয়ে ক্লাব ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে জটিলতাও।
শনিবার আই লিগে: ইস্টবেঙ্গল বনাম চার্চিল ব্রাদার্স (যুবভারতী, বিকেল ৫টা)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy