ফান গলের মুখোশে থেকে গিয়েছেন মোয়েসই! টুইটে এমনই ‘ছবি’ পোস্ট করে ম্যান ইউকে কটাক্ষ।
টি-ব্যাগ আর ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের মধ্যে পার্থক্য কী?
প্রথমটা কাপের সঙ্গে যতটা সময় কাটায়, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড তার অর্ধেকও সময়ও কাটাতে পারে না!
স্যান্ডওয়েল লেডিস ক্লাবের তরফে টুইট, আমরা ম্যান ইউকে ই-মেল পাঠিয়েছি একটা ফ্রেন্ডলি খেলার অনুরোধ জানিয়ে। আশা করছি, মরসুম শুরুর আগে একটা সহজ ম্যাচ পেয়ে যাব!
সামান্য দুটো উদাহরণ। কিন্তু তাতেই পরিষ্কার কী ভাবে তীব্র বিদ্রুপ আর কটাক্ষ আছড়ে পড়ছে লুই ফান গলের টিমের উপর। মঙ্গলবার রাতে ০-৪ বিধ্বস্ত হওয়ার পর।
মঙ্গলবারের রাতটা ছিল ম্যাঞ্চেস্টারের রেকর্ডের রাত! কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দু’ দু’টো। অ্যাঞ্জেল দি মারিয়াকে রেকর্ড অর্থে সই করানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তৃতীয় ডিভিশনের টিমের কাছে প্রায় দু’দশকে নিকৃষ্টতম হারের রেকর্ড!
ক্যাপিটাল ওয়ান কাপে লুই ফান গলের টিম ০-৪ হারল কোনও এক মিল্টন কেইন্স ডনস টিমের কাছে! যে ম্যাচে ৭২ মিনিট পর্যন্ত টার্গেটে একটা শট পর্যন্ত রাখতে পারেনি ম্যান ইউ। যারা কিনা এই টুর্নামেন্টেই চার বারের চ্যাম্পিয়ন!
ডেভিড মোয়েসের হটসিটে বসার পর কোচ ফান গলকে নিয়ে আশায় বুক বাঁধা সমর্থকরা টিমের পারফরম্যান্সে এতটাই ক্ষুব্ধ যে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে ডাচ কোচকে। এমনিতেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নেই এ বার ম্যান ইউ। টুর্নামেন্ট বলতে প্রিমিয়ার লিগ আর এফএ কাপ। ১৯ বছর পর ক্যাপিটাল ওয়ান কাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার যাও বা সুযোগ এল তাতে এ ভাবে হাস্যকর হার কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না সমর্থকরা। রীতিমতো হাসাহাসি শুরু হয়ে যায় ফান গলকে নিয়ে। দি মারিয়াও বাদ যাননি। ‘সই করার পরই নিশ্চয় দি মারিয়া বুঝতে পারছেন কী ভুলটাই না করে ফেলেছেন ম্যান ইউয়ে এসে!!!’ এমন টুইটও ভাসতে দেখা যায়।
গত মরসুমের ব্যর্থ কোচ ডেভিড মোয়েসের সঙ্গে ফান গলের কোনও পার্থক্য খুঁজে পাচ্ছেন না ম্যান ইউ সমর্থকরা। যিনি মরসুমের প্রথম তিন ম্যাচে এখনও জয় পাননি। প্রথম ম্যাচে সোয়ানসির কাছে হার। সান্ডারল্যান্ডের কাছে দ্বিতীয় ম্যাচে ড্র তবু মানা যায়। কিন্তু এমকে ডনস যে একেবারে নিজেদের মাঠে ঝামা ঘষে দিয়ে গেল রেড ডেভিলসদের মুখে! যে ক্লাবের এক দশক আগেই কোনও অস্তিত্ব ছিল না তারাই কিনা আজ ‘ডন’!
সমর্থকদের এই বিদ্রূপকে অবশ্য খুব একটা পাত্তা দিচ্ছেন না ফান গল। “চমকে যাইনি। জানতাম ম্যাচটায় কী হতে পারে। আর এমকে ডনস খুব ভাল খেলেছে,” বলেছেন ইউনাইটেড কোচ। ম্যাচে ১০টা পরিবর্তন করেন ডাচ কোচ। ওয়েন রুনি, রবিন ফান পার্সি, খুয়ান মাতাদের মতো তারকাদের নামাননি। পরীক্ষা করছিলেন রিজার্ভ বেঞ্চ নিয়ে। যা শেষ পর্যন্ত ডুবিয়ে দিয়ে গেল ফান গলকে। ডাচ কোচের সাফাই, “৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে হল আমাদের। তাও টিমের ন’জনের চোট রয়েছে। তাই রবিবারের টিমটা এই ম্যাচে নামাতে পারতাম না। দ্বিতীয় টিমটা নামিয়েছিলাম। কিন্তু প্রথম পর্ব থেকেই আমাদের প্রচুর ভুল হয়েছে। এ রকম ভুল করলে ম্যাচ জেতা যায় না।”
কিন্তু এতেও চিড়ে ভিজছে কোথায়! ফুটবল মহলে প্রশ্ন উঠছে, গত দু’দশকে এ বার সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলতে হবে ম্যান ইউকে। কেননা গত বারের হতশ্রী পারফরম্যান্সের জেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মতো টুর্নামেন্টে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি ম্যান ইউ। সব মিলিয়ে এ মরসুমে খুব বেশি হলে ৪৬টা ম্যাচে নামতে হবে রুনিদের। ম্যাঞ্চেস্টার সিটির ক্ষেত্রে সংখ্যাটা যেখানে ৬৫ বা তারও বেশি। সোজা কথা এ মরসুমে প্লেয়ারদের অনেক বিশ্রামের সুযোগ রয়েছে অন্য টিমের থেকে। তার পরও কেন শুরু থেকেই প্রথম দল সেট করার চেষ্টা করবেন না ফান গল? বিশেষ করে এমন একটা পরিস্থিতিতে যেখানে প্রথম থেকেই তিনি ৩-৫-২ ছকে দলকে অভ্যস্ত করাতে চাইছেন?
“আমরা একটা টিম তৈরি করছি। এটা এক মাস বা এক বছরে হয়ে যায় না। তবে এটা ঠিক এমন হার সত্যিই হতাশাজনক। ঠিক কী করছি, সেটা আমরা জানি। সমর্থকদের জন্য এখন লুই ফান গলের দর্শনে বিশ্বাস করাটা কঠিন,” বলে দেন ডাচ কোচ।
এ দিকে আবার শোনা যাচ্ছে মার্কোস রোখো, অ্যাঞ্জেল দি মারিয়ার পর এ বার জুভেন্তাসের মিডফিল্ডার আর্তুরো ভিদালকে সই করানোর পথে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে ম্যান ইউ। ম্যাঞ্চেস্টারের আকাশে এই নতুন তারাদের উপস্থিতিই এখন ফান গলের একমাত্র ভরসা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy