প্রত্যয়ী: বিরাটদের দক্ষতায় পূর্ণ আস্থা রয়েছে শাস্ত্রীর। ফাইল চিত্র
বেসিন রিজার্ভ টেস্টে হার ঠিক সময়ে তাঁদের সতর্ক করে দিয়েছে। দ্বিতীয় টেস্টে ‘খোলা মনে’ নামতে পারবে দল। সঙ্গে মাথায় থাকবে পরবর্তী পাঁচ দিন নিউজ়িল্যান্ড ঠিক কী কী চ্যালেঞ্জের সামনে তাঁদের ফেলতে পারে, সেটাও। মনে করছেন ভারতের হেড কোচ রবি শাস্ত্রী।
ভারত প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটে হারে নিউজ়িল্যান্ডের কাছে। এই হার শাস্ত্রীর কাছে এক দিক থেকে ‘শাপে বর’। বিশেষ করে সেই সব ক্রিকেটারদের কাছে, যাঁরা শুধু জিততেই অভ্যস্ত। ‘‘আমি সব সময় বিশ্বাস করি, আমরা যে ভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলাম সেই সময় এ রকম একটা ধাক্কা খাওয়া এক দিক থেকে ভাল। তাতে মানসিকতায় বদল আসে। যখন কেউ শুধু জিততেই থাকে, হারের স্বাদ পায় না, তাঁর মানসিকতা বদ্ধ বা স্থির হয়ে যায়,’’ বলেন শাস্ত্রী। তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘নিউজ়িল্যান্ড কোন কৌশল প্রয়োগ করতে পারে, সেটা মাথায় রাখতে হবে। সেই মতো প্রস্তুতি নিয়ে নিজের পাল্টা পরিকল্পনা প্রয়োগ করো। এটা খুব ভাল শিক্ষা। আমি নিশ্চিত, ছেলেরা এই চ্যালেঞ্জটা নিতে মুখিয়ে রয়েছে।’’
শাস্ত্রীর কথায় আরও ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে, এখন ভারতীয় দলের সামনে সব চেয়ে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি। তাঁর কারণ পরপর দু’বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ রয়েছে, পাশাপাশি ২০২১ সালে আছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। ‘‘এই মুহূর্তে আমাদের কাছে সব চেয়ে কম গুরুত্ব পাচ্ছে ওয়ান ডে ক্রিকেট। তাঁর কারণ সূচি। তা ছাড়া আগামী দু’বছর আমাদের সামনে কী চ্যালেঞ্জ আসতে চলেছে, সেটাও দেখতে হচ্ছে। আমরা তাই জোর দিচ্ছি টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে,’’ বলেন শাস্ত্রী।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় এখন শীর্ষে ভারতই। ভারতের হেড কোচ মনে করেন, একটা হারের পরেই চাপে পড়ে যাওয়ার কোনও কারণ নেই। ‘‘আমরা আটটা টেস্ট খেলেছি (দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তিনটি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দুটি, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দুটি এবং নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি) তার মধ্যে জিতেছি সাতটায়। একটা হারের জন্য চাপে পড়ার কোনও কারণ নেই। এই দলের কেউ সে রকম ভাবছেও না।’’
বিদেশ সফরে ভারতীয় দল জিততে গিয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়ে কেন? প্রশ্ন করলে শাস্ত্রী বলেন, ‘‘সাদা আর লাল বলের ক্রিকেটের ব্যাপারটা পুরো আলাদা। একটা দেশে সাদা বলের ক্রিকেটে খেলতে যাওয়া আর লাল বলের ক্রিকেটে খেলা এক নয়। বিশেষ করে ইংল্যান্ড এবং নিউজ়িল্যান্ডের মতো দেশে। যেখানে পরিবেশ প্রায় একই রকম।’’ তাঁর আরও বিশ্লেষণ, ‘‘যে দলই হোক না কেন, পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগে। তবে আমরা কোনও অজুহাত দিতে চাই না। প্রথম টেস্টে প্রতিপক্ষ আমাদের বিপর্যস্ত করেছিল।’’
কেন ঋদ্ধিমান সাহার চেয়ে ঋষভ পন্থকে এগিয়ে রাখা হয়েছে, সেটাও জানান শাস্ত্রী। ‘‘আমরা চেয়েছিলাম ভারতে সাহা কিপিং করুক। কারণ ওখানে বল অনেক স্পিন করে। ঘূর্ণি পিচে বাউন্সও অসমান থাকে। তাই অভিজ্ঞ কিপার চাই। সাহা সে দিক থেকে অন্যতম সেরা। কিন্তু এখানে বেশি জোর দেওয়া হয় পেস বোলিংয়ে। তা ছাড়া ব্যাটিংও একটা বড় কারণ। পন্থ আবার বাঁ-হাতি। লোয়ার অর্ডারে আগ্রাসী ব্যাটিং করে। এই কারণেই ওকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে,’’ বলেন শাস্ত্রী।
শুক্রবার আবার ভারতীয় দলকে অভিনব এক অনুশীলন করতে দেখা যায়। বোর্ডের টুইট করা ভিডিয়োয় ভারতীয় দলের স্ট্রেংথ ও কন্ডিশনিং কোচ নিক ওয়েব ব্যখ্যা করেন এই অনুশীলনের। যা আদতে একটি খেলার মতো। যাঁকে বলা হচ্ছে ‘টার্বো টাচ’। ক্রিকেট বলের আকারে নরম বলে এই অনুশীলন হয়। তিনি বলেন, ‘‘দুটো দলে ভাগ করে এই খেলাটা হয়। যে বেশি গোল করবে, সেই জিতবে।’’ যাঁর হাতে বল থাকবে তাঁকে প্রতিপক্ষ দু’বার ছুঁয়ে ফেলার আগে বিপক্ষের গোলে পৌঁছতে হবে। বল হাতে গোল করতে যাওয়ার সময় বিপক্ষ যাতে তাঁকে ছুঁয়ে না ফেলে, সেটা দেখতে হবে খেলোয়াড়কে। বিপক্ষের খেলোয়াড়কে এড়াতে নিজের দলের খেলোয়াড়কে বল ছুড়ে দেওয়া যেতে পারে। বল হাতে যে কোনও দিকে ছুটে পারে খেলোয়াড়। নিক মাঝে মধ্যে নিয়ম পাল্টে দেন যাতে আরও উত্তেজনা বাড়তে পারে খেলায়। পাশাপাশি নরম বল ব্যবহার করার কারণ তাতে সুইং বেশি হয় এবং ক্যাচ ধরার সময় বেশি সতর্ক থাকতে হয়। এতে মনঃসংযোগ এবং ক্ষিপ্রতা বাড়ে।
বোঝাই যাচ্ছে, ক্রাইস্টচার্চের চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুতিতে কোনও খামতি রাখতে চায় না ভারতীয় দল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy