—প্রতীকী চিত্র।
সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস এবং ভোটকুশলী সংস্থার এক শীর্ষকর্তার নাম ব্যবহার করে ফোনে ৫ লক্ষ টাকা দাবি এবং তা না দিলে গ্রেফতার করানোর ভয় দেখানো— কালনার পুরপ্রধানের এমন অভিযোগে তিন যুবককে হাতেনাতে ধরল কলকাতার শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম জুনেইদুল হক চৌধুরী, শুভদীপ মল্লিক ও শেখ তসলিম।
পুলিশ এবং তৃণমূল সূত্রের খবর, ২৪ ডিসেম্বর ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোক’ বলে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি পূর্ব বর্ধমানের কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান আনন্দ দত্তকে বিকেলে ওয়টস্যাপ কল করে। প্রায় ৭ মিনিট কথা হয় দু’জনের। অভিযোগ, প্রথমে পুরপ্রধানের কাছে পুরসভার হাল-হকিকত এবং কারা তাঁকে সহযোগিতা করছে না— এ সব নিয়ে নানা কথা বলে অভিযুক্ত। এর পরে অভিযুক্ত কালনা পুরপ্রধানের কাছে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। শুধু তাই নয়, টাকা না দিলে পুলিশকে দিয়ে হয়রানি বা গ্রেফতারির ভয় দেখানো হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরপ্রধানকে ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে ২৫ ডিসেম্বর প্রথমে ক্যামাক স্ট্রিটে আসতে বলা হয়। পরে এমএলএ হস্টেলের একটি ঘরের নম্বর দেওয়া হয় পুরপ্রধানকে। নির্দিষ্ট দিনে দুপুরে পৌঁছে যেতে বলা হয় বলে অভিযোগ।
সন্দেহ হওয়ায় তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ও রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে গোটা বিষয়টি জানান পুরপ্রধান। এর পরে নেতৃত্বের কথামতো তিনি পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। অভিযুক্তদের জন্য ফাঁদ পাতে পুলিশ। পুরপ্রধানকে নির্দিষ্ট দিনে নির্ধারিত সময়ের কিছুটা পরে বিধায়ক হস্টেলের সামনে পৌঁছে যেতে বলা হয়। সেইমতো দেহরক্ষীকে নিয়ে বুধবার কলকাতা রওনা দেন পুরপ্রধান। পথে শেক্সপিয়র সরণি থানার এক পুলিশ আধিকারিক তাঁর সহযোগী সেজে গাড়িতে ওঠেন। অভিযোগ, বিকেল ৩টে নাগাদ ফের পুরপ্রধানকে ফোন করে প্রতারকেরা জেনে নেন, তিনি কলকাতা আসছেন কি না। এর পরে নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছতেই অভিযুক্তেরা টাকা নিতে আসে এবং তখনই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয় বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ জানায়, ধৃতদের মধ্যে জুনেইদুল এবং শুভদীপ হগলির বাসিন্দা এবং শেখ তসলিম পার্ক স্ট্রিটের বাসিন্দা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, তোলা আদায়-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
পুরপ্রধান বলেন, ‘‘আমি ক্যামাক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ করেছিলাম। পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘কিছু প্রতারক কখনও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, আবার কখনও দলের ভোটকুশলী সংস্থার নাম করে এমন ফোন করছে। কাটোয়ার পুরপ্রধানও এমন ফোন পেয়েছিলেন।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতির দাবি, কালনার পুরপ্রধানকে বিধায়ক হস্টেলের যে ঘরে দেখা করতে বলা হয়েছিল, সেটি এক বিজেপি বিধায়কের। যদিও তিনি সেখানে থাকেন না।
বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের সেই বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, ‘‘কেউ যদি আমার নামে ঘর বুক করতে চায়, তাহলে চিঠি দিয়ে অনুমতি নিতে হবে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কাউকে আমি চিনি না। আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে টাকা চেয়েছে, তার মানে ওরা সবাই তৃণমূল। বিজেপি বিধায়কদের বদনাম করার জন্য পরিকল্পিত ভাবে এটা করেছে। এর সঙ্গে বিধায়ক হস্টেলের কর্মীরাও জড়িত। ঠিকমতো তদন্ত করলে সব স্পষ্ট হবে। এর পরে বিধায়ক হস্টেলের ঘর বুক করার বিষয়ে আরও সুরক্ষিত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এটা আশা করি।’’
প্রাথমিক ভাবে ঘটনাটিকে সংগঠিত অপরাধ বলেই অনুমান করছেন তদন্তকারীরা। ওই চক্রের বিশদ তথ্য পেতে এবং আর কেউ জড়িত কি না জানতে তিন অভিযুক্তকে জেরা করা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy