নজিরবিহীন: বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ বন্ধ। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় মেসি ও নেমার। রয়টার্স
করোনা সংক্রমণ সংক্রান্ত সুরক্ষাবিধি অগ্রাহ্য করা এবং সেনা অভ্যুত্থান—এই দু’য়ের জেরে বিশ্বের দুই প্রান্তে দু’দিনে বন্ধ হল বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের দুই ম্যাচ।
সাও পাওলোয় কাতার বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনার ম্যাচে নিভৃতবাসের নিয়ম উপেক্ষা করেই মাঠে নেমে পড়েছিলেন লিয়োনেল মেসির দেশের চার ফুটবলার। যে কারণে ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কর্তারা পুলিশ নিয়ে মাঠে ঢুকে পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ম্যাচ বন্ধ করে সংশ্লিষ্ট চার ফুটবলারকে মাঠ ছাড়তে বলেন। ফলে আর্জেন্টিনা দল ড্রেসিংরুমে ফিরে যায়। লাতিন আমেরিকার ফুটবল নিয়ামক সংস্থা কনমেবল এর পরেই ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। বিষয়টি ভাল ভাবে নেয়নি ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা ফিফা। সোমবার এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ‘‘কনমেবল গ্রুপে ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনার ম্যাচ বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব গিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশ্বের অন্যতম সেরা দুই দলের ফুটবল দ্বৈরথ দেখা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন কোটি কোটি দর্শক। তার জন্য দুঃখপ্রকাশ করা হচ্ছে। ম্যাচ পরিচালকদের রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
অন্য দিকে, গিনিতে সেনা অভ্যুত্থানে ভেস্তে যায় গিনি বনাম মরক্কো ম্যাচ। যা হওয়ার কথা ছিল সোমবার। জানা গিয়েছে, মরক্কো দল যে হোটেলে ছিল তার কাছাকাছি এলাকায় গুলি চলে। এর পরেই ফুটবলারদের নিরাপত্তার কারণে মরক্কোর ফুটবলারদের দেশে ফেরত পাঠানো হয় ম্যাচ বন্ধ করে।
সাও পাওলোর ম্যাচের আগে থেকেই সমস্যার শুরু হয়েছিল। ইংল্যান্ড থেকে ভেনেজ়ুয়েলার রাজধানী কারাকাস হয়ে সরাসরি ব্রাজিলে প্রবেশ করেছিলেন আর্জেন্টিনার চার ফুটবলার। এরা হলেন অ্যাস্টন ভিলার এমিলিয়ানো মার্তিনেস, এমিলিয়ানো বুয়েনদিয়া এবং টটেনহ্যাম হটস্পারের ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো ও জিয়োভানি লো সেলসো। ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নিয়ম অনুসারে এই চার ফুটবলারকেই ১৪ দিন নিভৃতবাসে থাকতে হত। কিন্তু সেই সুরক্ষাবিধি সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে আর্জেন্টিনা কোচ লিয়োনেল স্কালোনি প্রথম দলে রেখেছিলেন গোলকিপার মার্তিনেস, রোমেরো এবং লো সেলসোকে। কিন্তু খেলা শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিকেরা পুলিশ নিয়ে স্টেডিয়ামের ভিতরে ঢুকে খেলা বন্ধ করেন। তার পরে আটক করা হয় সংশ্লিষ্ট চার ফুটবলারকে। উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা ভারত থেকে কোনও ব্যক্তি ব্রাজিলে গেলে এই নিয়মই এখন অনুসরণ হচ্ছে। ছাড় পাবেন কেবল ব্রাজিলের নাগরিকেরা। করোনা সংক্রমণে ব্রাজিলে পাঁচ লক্ষ, তিরাশি হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সে কারণেই স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এই পদক্ষেপ।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে এক সময়ে আর্জেন্টিনার অতিরিক্ত তালিকায় থাকা ফুটবলার ও কর্তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় প্রায় হাতাহাতির পর্যায়ে্ যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। এর পরেই লিয়োনেল মেসি-সহ আর্জেন্টিনা দল ড্রেসিংরুমে ফিরে গিয়েছিলেন। যদিও ব্রাজিল দল ও তাদের কোচ তিতে মাঠেই ছিলেন। বার্সেলোনায় একদা সতীর্থ মেসিকে ড্রেসিংরুম থেকে বার করে ফের মাঠে আনেন দানি আলভেস। আর্জেন্টিনা অধিনায়ক মাথা গরম না করলেও গোটা ঘটনায় যে অসন্তুষ্ট, তা তাঁর চোখেমুখেই প্রকাশ ছিল। মাঠে দাঁড়িয়েই তিনি কথা বলেন নেমার দা সিলভা স্যান্টোস জুনিয়র, আলভেসদের সঙ্গে।
টিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে মেসির মন্তব্য। যেখানে তিনি বলছিলেন, ‘‘খেলা পাঁচ মিনিট চলার পরে বন্ধ হল। তা হলে শুরু করা হয়েছিল কেন? তারও এক ঘণ্টা আগে আমরা মাঠে এসেছিলাম। ওঁরা আমাদের আগে বলতে পারতেন।’’ এর কিছু পরে মেসি ফের ড্রেসিংরুমে ফিরে যান। শেষ পর্যন্ত খেলা শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা পরে ম্যাচ বন্ধ করার কথা ঘোষণা হয় সরকারি ভাবে। লাতিন আমেরিকার ফুটবল নিয়ামক সংস্থা কনমেবলের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘ম্যাচ পরিচালকদের রিপোর্ট খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy