Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

রজার আছেন সেই রাজার মেজাজে

একশো একানব্বই দিন! ২০১৬-র ৮ জুলাই থেকে ২০১৭-র ১৬ জানুয়ারির মধ্যে। টেনিসপ্রেমী, আরও স্পষ্ট ভাবে বললে ফেডেরার-ভক্তরা তিতিক্ষার প্রতীক্ষায় ছিলেন এতগুলো দিন। অপেক্ষার সমাপ্তি। কিংবদন্তির প্রত্যাবর্তন ঘটল সোমবার স্বমেজাজে।

অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে জিতে ফেডেরার।

অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে জিতে ফেডেরার।

মেলবোর্ন শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:৪৩
Share: Save:

একশো একানব্বই দিন! ২০১৬-র ৮ জুলাই থেকে ২০১৭-র ১৬ জানুয়ারির মধ্যে। টেনিসপ্রেমী, আরও স্পষ্ট ভাবে বললে ফেডেরার-ভক্তরা তিতিক্ষার প্রতীক্ষায় ছিলেন এতগুলো দিন। অপেক্ষার সমাপ্তি। কিংবদন্তির প্রত্যাবর্তন ঘটল সোমবার স্বমেজাজে।

গত বছর উইম্বলডন সেমিফাইনাল রাওনিকের কাছে হারলেও যে ভাবে পাঁচ সেট রাজার মতো লড়েছিলেন রজার ফেডেরার, সাড়ে পঁয়ত্রিশের মহাতারকা এ বছর অস্ট্রেলীয় ওপেনে প্রথম রাউন্ড টপকালেন সে রকমই রাজসিক লড়াকু ভঙ্গিতে। যার মাঝে হাঁটুর অস্ত্রোপচার, দীর্ঘ রিহ্যাব সেশন, পনেরো বছর বাদে হপম্যান কাপ খেলা, গত দেড় দশকে প্রথম বার বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রথম পনেরোর বাইরে (১৭ নম্বর) ছিটকে পড়া— অনেক কিছু ঘটে গিয়েছে টেনিসের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি (১৭) গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ীর জীবনে। কিন্তু একটা জিনিস হয়নি। গত ১৯১ দিনে একটাও পেশাদার ট্যুরের ম্যাচ খেলেননি ফেডেরার। তা সত্ত্বেও গ্র্যান্ড স্ল্যাম টু গ্র্যান্ড স্ল্যাম প্রত্যাবর্তনে এই বয়সেও কী সাবলীল, কী মসৃণ টেনিস তাঁর! নৈশালোকোজ্জ্বল রড লেভার এরিনায় রাত প্রায় বারোটাতেও সম্পূর্ণ ভরা গ্যালারির সামনে ছ’ফুটি অস্ট্রিয়ান য়ুরগেন মেলজারের বিরুদ্ধে ৭-৫, ৩-৬, ৬-২, ৬-২ জিতে উঠে ফেডেরার বলেও ফেলেন, ‘‘খুব ভাল লাগছে আবার স্বাভাবিক টেনিস খেলতে পারছি বলে। সার্কিটে, মেজরে ফিরে আসতে পেরেছি, এর চেয়ে আনন্দের আমার কাছে আর কিছু হতে পারে না। আশা করি আরও বেশ কিছু দিন খেলব।’’

নতুন বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামের প্রথম দিনটার সব আলো ফেডেরার শুষে নিয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত মেলবোর্ন পার্ক দিনভর অবশ্য নানা নাটকীয়তায় মোড়া ছিল। গরমের গ্র্যান্ড স্ল্যামের শুরুর দিনই দুপুরে তাপমাত্রা ছুঁল তেত্রিশ ডিগ্রি। স্থানীয় টেনিস তারকা কিরিয়সের শরীর গরম হয়ে উঠে প্রথম সেটেই নাক দিয়ে রক্ত বেরনোয় কোর্টের ধারে আট মিনিট মেডিক্যাল টাইম আউট নিতে হল। সুস্থ হয়ে উঠে স্ট্রেট সেটে জেতেন।


দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার পথে বুশার্ড।

কিন্তু তিন শীর্ষস্থানীয় বাছাই— চার নম্বর ওয়ারিঙ্কা, পঞ্চম নিশিকোরি, সাত নম্বর চিলিচকে প্রথম রাউন্ড জিততেই ম্যারাথন পাঁচ সেট লড়তে হয়েছে। যা এই গরমে তাঁদের স্ট্যামিনার ক্ষয় নিঃসন্দেহ আরও বেশি করেছে। শীর্ষ বাছাই ও বিশ্বের নতুন এক নম্বর অ্যান্ডি মারে স্ট্রেট সেটে জিতলেও মারচেঙ্কোর বিরুদ্ধে প্রথম দু’টো সেট জিততে যথেষ্ট লড়তে হয় তাঁকে। মারে জেতেন ৭-৫, ৭-৬ (৭-৫), ৬-২।

আবার জেরেমি চাডির বিরুদ্ধে প্রথম সেটে ০-৪ পিছিয়ে থাকার সময় মাত্র আটাশ মিনিটে ম্যাচ ওয়াকওভার দেওয়ায় নিকোলাস আলমাগ্রো নিয়ে গড়াপেটার ফিসফাস শুরু হয়। সরকারি ঘোষণায় কাফ মাসলের যন্ত্রণায় কাবু আলমাগ্রো সম্পর্কে টিভি ধারাভাষ্যে প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় ডাবলস তারকা টড উজব্রিজ কটাক্ষ করেন, ‘‘একটা প্রশ্ন আছে। আলমাগ্রো কি প্রথম রাউন্ডে পরাজিত প্লেয়ারের বরাদ্দ ৫০ হাজার অস্ট্রেলীয় ডলার নিতেই এসেছিল?’’ যার পর বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় দৈনিকের ওয়েবসাইটে আলমাগ্রোর তীব্র প্রতিবাদ, ‘‘আমি ভেবেছিলাম খেলতে পারব। তাই কোর্টে নেমেছিলাম। আমি এক সময় বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রথম দশে ছিলাম। এক কোটি ডলারের বেশি খেলে রোজগার করেছি। পঞ্চাশ হাজারের পিছনে ছোটার আমার ইচ্ছে নেই।’’

ভাষ্যকারের মতো সংগঠকেরাও প্রথম দিন বিতর্ক লাগিয়েছেন। ইয়ারা নদীর পার ধরে মশাল জ্বালিয়ে, এমনকী সেই মশাল ছুড়তে ছুড়তে মেলবোর্নের পার্কের দিকে এগোনো জনা পনেরো-কুড়ি তরুণ-তরুণী টেনিস দর্শককে এ দিন তাঁদের টিকিট থাকা সত্ত্বেও অস্ট্রেলীয় ওপেনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি!

ছবি: এএফপি

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE