আজ সৌরভকে দেখতে আসতে পারেন জয় শাহ ও অনুরাগ ঠাকুর।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবারই হাসপাতালে গিয়ে তাঁকে দেখে এসেছিলেন। গিয়েছিলেন তৃণমূলের অন্যান্য মন্ত্রী, নেতারাও। এ বার হৃদ্রোগে আক্রান্ত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে ফোন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার ফোন করে সৌরভের স্ত্রী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন মোদী। তাঁর কাছে সৌরভের দ্রুত আরোগ্য কামনা করার পাশাপাশি সব রকম ভাবে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। পরে সৌরভের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। সৌরভকেও বলেন, তাঁর দ্রুত সেরে ওঠার জন্য প্রার্থনা করছেন।
অমিত শাহ শনিবারই সৌরভের ব্যাপারে একাধিক বার খোঁজ নেন। অমিত-পুত্র জয় শাহ বার বার সৌরভের পরিবারের সদস্যেদের সঙ্গে কথা বলেন। বোর্ড সচিব জয় আজ সোমবার, সৌরভকে দেখতেও আসতে পারেন। তাঁর সঙ্গে থাকতে পারেন বোর্ডের প্রাক্তন প্রধান এবং বিজেপির আর এক শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। এখন আর সরাসরি বোর্ড প্রশাসনে না থাকলেও অনুরাগের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক সৌরভের। তাঁর বোর্ড প্রেসিডেন্ট হওয়ার নেপথ্যে অনুরাগের বড় ভূমিকাও ছিল বলে শোনা যায়।
হৃদ্রোগে আক্রান্ত সৌরভকে দেখার জন্য বিশেষ ভাবে উড়িয়ে আনা হচ্ছে দেবী শেঠিকেও। মঙ্গলবার সকালে বেঙ্গালুরু থেকে চার্টার্ড ফ্লাইটে তাঁর টিম নিয়ে আসছেন এই বিশেষজ্ঞ।
শনিবার জিম করতে করতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন সৌরভ। হাসপাতালে আনার পরে সৌরভের তিনটি করোনারি আর্টারিতেই ‘ব্লকেজ’ ধরা পড়ে। একটি স্টেন্ট বসানো হয় শনিবারই। বাকি দু’টি করোনারি আর্টারির সমস্যা কী ভাবে মেটানো হবে, তা খতিয়ে দেখবেন দেবী শেঠি। ইতিমধ্যেই তাঁর কাছে সৌরভের সমস্ত রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরও স্টেন্ট বসাতে হবে, না কি আপাতত ওষুধেই কাজ চালানো যাবে, সেই সিদ্ধান্তও নেবেন তিনি।
আরও পড়ুন: মহারাজকে ফোন মোদীর, শরীরের খোঁজ নিয়ে চিকিৎসায় সাহায্যের আশ্বাস
সৌরভ ভক্তদের জন্য ভাল খবর হচ্ছে, তিনি অনেক ভাল আছেন। খাবার খাচ্ছেন, ঘুমও ভাল হয়েছে। পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলেছেন। উদ্বেগের কোনও কারণ দেখেননি ডাক্তারেরা বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। তাই এখনই বাইপাস অস্ত্রোপচারের দিকে না যাওয়ারই চেষ্টা করছেন ডাক্তারেরা। যে-হেতু প্রথম স্টেন্ট বসানোর পরে সৌরভ অনেকটাই ভাল আছেন, ওষুধে খুব ভাল সাড়া দিয়েছেন, সেটা ভাল লক্ষণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
সৌরভের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই জল্পনা চলছে। এবং জল্পনার কেন্দ্রে ছিল, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গে তিনি বিজেপির মুখ হয়ে উদয় হতে পারেন কি না। নতুন বছরে এ নিয়ে এসপার-ওসপার সিদ্ধান্ত হতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছিল। বোর্ড প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে শুরু করে সৌরভের। রবিবার স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর ফোন সেই ঘনিষ্ঠতার দিকে আরও বেশি করে ইঙ্গিত করছে বলে কোনও কোনও মহলের বিশ্লেষণ।
আরও পড়ুন: রাজ্যে ওয়েইসি, বিজেপির ‘অঙ্ক’ স্পষ্ট করলেন লকেট
যদিও সৌরভের ঘনিষ্ঠ মহল সেই তত্ত্বকে উড়িয়ে দিয়েছে এই বলে যে, প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক এবং বর্তমান বোর্ড প্রেসিডেন্ট তিনি। সৌরভ এক জন জাতীয় নায়ক। মাত্র ৪৮ বছর বয়সে তাঁর এমন আকস্মিক হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে প্রধানমন্ত্রী তো ফোন করতেই পারেন। এর মধ্যে রাজনৈতিক যোগাযোগ দেখতে যাওয়া ঠিক হবে না। এঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, নবান্ন এবং রাজভবনের মধ্যে যতই মতপার্থক্য থাকুক, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় দু’জনেই দেখতে এসেছেন। রবিবার গিয়েছিলেন সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য ও সীতারাম ইয়েচুরি।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেকে ফোন করেছেন। তাঁদের মধ্যে যেমন রাজনীতির শীর্ষ নেতারা আছেন তেমনই রয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর বা লতা মঙ্গেশকরের মতো কিংবদন্তিরা।
রবিবারও সারা দিন ধরে হাসপাতালের সামনে অনেকে ভিড় করেন, প্রিয় ‘দাদার’ জন্য প্রার্থনা করতে। অনেকে পোস্টার ‘দ্রুত সেরে ওঠো দাদা’ লেখা পোস্টারও নিয়ে গিয়েছিলেন। পুরীর সমুদ্রসৈকতে বালি দিয়ে সৌরভের মূর্তি গড়ে সুদর্শন পট্টনায়কের লেখা ‘গেট ওয়েল সুন’ টুইটারের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। তবে সব চেয়ে বেশি চর্চা প্রধানমন্ত্রীর ফোন নিয়েই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy