হার্দিকদের হারিয়ে আবার আইপিএলের ফাইনালে চলে গেলেন ধোনিরা। — ফাইল চিত্র
গত তিন বারের মুখোমুখি সাক্ষাতে হারতে হয়েছে। কিন্তু আসল সময়ে বাজিমাত করল চেন্নাই সুপার কিংস। মঙ্গলবার প্রথম কোয়ালিফায়ারে গুজরাত টাইটান্সকে ১৫ রানে হারিয়ে দিল তারা। টসে জিতে পরে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন গুজরাত অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ড্য। ব্যুমেরাং হল সেই সিদ্ধান্ত। প্রথমে ব্যাট করে ১৭২-৭ তুলেছিল চেন্নাই। জবাবে গুজরাত থেমে গেল ১৫৭ রানে।
এই নিয়ে দশ বার আইপিএলের ফাইনালে উঠল চেন্নাই। এর মধ্যে তারা জিতেছে চার বার। আগামী রবিবার ফাইনালে জিতলে মুম্বইয়ের ট্রফি জয়কে ছুঁয়ে ফেলবে তারা। প্লে-অফের বিচারে এমনিতেই তারা আইপিএলের সবচেয়ে ধারাবাহিক দল। অন্য দিকে, টানা দু’টি আইপিএল জেতার পথে কিছুটা ধাক্কা খেল গুজরাত। কিন্তু হার্দিকদের সামনে আরও একটি সুযোগ থাকছে। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে তাঁরা খেলবেন লখনউ বনাম মুম্বই ম্যাচের বিজয়ীর বিরুদ্ধে। সেটি জিতলে রবিবার আবার দুই দল মুখোমুখি হতে পারে।
টসে জেতাই এই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়ে গেল। আগে ব্যাট করতে হবে জেনে কিছুটা খুশিই হয়েছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। সঞ্চালক রবি শাস্ত্রীকে বলেই দেন, পরের দিকে পিচ ধীরগতির হয়ে যাবে। অর্থাৎ রান তোলা কঠিন হবে। তার আগে হার্দিক বলে যান, পরের দিকে শিশির পড়ার সম্ভাবনা দেখছেন। টসে হেরেও মাঠের লড়াইকে শিষ্যকে হারিয়ে দিলেন গুরু। দেখা গেল, ধোনির কথাই ঠিক।
১৭৩ রান তাড়া করতে নেমে কোনও সময়েই গুজরাতকে দেখে মনে হয়নি তারা ভাল জায়গায় রয়েছে। ঋদ্ধিমান সাহা এবং শুভমন গিলের জুটি গত কয়েকটি ম্যাচে দানা বাঁধেনি। এ দিনও তার ব্যতিক্রম নয়। ঋদ্ধিটা শুরুটা ভালই করেই আউট হয়ে গেলেন। দলের বিপদে তিন নম্বরে নেমেছিলেন হার্দিক। কিন্তু বেশি ক্ষণ টানতে পারলেন না।
গুজরাতকে যাঁরা ম্যাচের পর ম্যাচ জিতিয়েছেন, সেই ডেভিড মিলার, রাহুল তেওতিয়ারা চূড়ান্ত ব্যর্থ। এক মাত্র রশিদ খান একটু হলেও চেষ্টা করেছিলেন। ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে আউট হওয়ায় ওখানেই গুজরাতের সুযোগ শেষ হয়ে যাওয়ায়।
তার আগে, প্রথমে ব্যাট করতে নেমে চেন্নাই শুরুটা খুবই ভাল করেছিল। রুতুরাজ গায়কোয়াড় এবং ডেভন কনওয়ে প্রতিটি ম্যাচে ধারাবাহিক ভাবে ওপেনিংয়ে চেন্নাইকে ভরসা দিয়েছেন। কোয়ালিফায়ারেও তার ব্যতিক্রম হল না। পাওয়ার প্লে পর্যন্ত প্রতি ওভারেই আটের উপর রান উঠছিল। এর পরেই পিচ আস্তে আস্তে মন্থর হতে শুরু করে। যে কারণে কমে যায় রান তোলার গতিও।
রুতুরাজ এবং কনওয়ে, দু’জনেই ইচ্ছেমতো হাত খুলে খেলতে পারছিলেন না। অপেক্ষা করছিলেন খারাপ বলের। যে বলে অনায়াসে চার-ছয় মারার কথা, সেখানেও খুচরো রান নিয়ে স্কোরবোর্ড সচল রাখতে হচ্ছিল। কনওয়ে একটা দিক ধরে রাখছিলেন। আক্রমণ করছিলেন মূলত রুতুরাজই। কিন্তু তাঁরও ব্যাটে-বলে হচ্ছিল না। অর্ধশতরান করেন ৩৬ বলে। তার পরে অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে উইকেট খোয়ালেন।
তবে রুতুরাজের অর্ধশতরানের পিছনে দায়ী দর্শন নালকান্ডে। নিজের প্রথম ওভারেই রুতুরাজকে আউট করে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি ‘নো বল’ ছিল। সেই ওভারেই নালকান্ডেকে একটি চার এবং একটি ছয় মারেন রুতুরাজ। আউট হওয়ার আগে পর্যন্ত আর সুযোগ দেননি।
মারকুটে ব্যাটিংয়ের লক্ষ্যে তিনে শিবম দুবেকে নামিয়ে ফাটকা খেলতে চেয়েছিল চেন্নাই। তা কাজে লাগল না। ১ রানেই ফিরলেন দুবে। অজিঙ্ক রাহানে নামলেন। কিন্তু কনওয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে খুব বেশি চালিয়ে খেলতে পারলেন না। রাহানেও মারতে গিয়ে আউট হলেন। চেন্নাইয়ের রানের গতি বাড়ল অম্বাতি রায়ডু নামায়। প্রথম বলে চার মেরে শুরু করলেন। কনওয়ে আউট হওয়ার পর রবীন্দ্র জাডেজাও চালিয়ে খেললেন।
কিন্তু চেন্নাইয়ের সমর্থকদের কাছে ধোনির ব্যাট থেকে বড় রান দেখার স্বপ্ন পূরণ হল না। ১৮তম ওভারে ব্যাট করতে নেমেছিলেন ধোনি। পরের ওভারেই মোহিত শর্মার বলে হার্দিকের হাতে ক্যাচ দিলেন (১)। তবে চেন্নাই বাজিমাত করল তাঁর বুদ্ধির জেরেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy