আবার শেষ বলে কেকেআরকে জেতালেন রিঙ্কু সিংহ। —ফাইল চিত্র
সেই রিঙ্কু সিংহ। সেই শেষ বল। আবার দেখা গেল রিঙ্কুর দাপট। মাঠ বদলে গেলেও বদলাল না তাঁর খেলা। এখন কলকাতা নাইট রাইডার্স যাঁকে চোখ বন্ধ করে ভরসা করে সেই রিঙ্কুই আর এক বার জেতালেন দলকে। তার আগে অবশ্য ইডেনে উঠল আন্দ্রে রাসেল ঝড়। তিনিই দলকে জয়ের কাছে নিয়ে গেলেন। বাকি কাজ করলেন রিঙ্কু।
এ বারের আইপিএলে ইডেন দেখেছে ব্যাটারদের দাপট। প্রায় সব ম্যাচেই প্রথমে ব্যাট করা দল ২০০ রানের বেশি করেছে। কিন্তু পঞ্জাবের বিরুদ্ধে পিচের চরিত্রে কিছুটা বদল ছিল। উইকেট একটু মন্থর থাকায় গতির হেরফের করলে সুবিধা পাচ্ছিলেন বোলাররা। টসে হেরে প্রথমে বল করতে গিয়ে সেটাই করেন কেকেআরের পেসাররা। তার ফলে শুরুটা ভাল করতে পারেনি পঞ্জাব। কেকেআরের পেসার হর্ষিত রানা পাওয়ার প্লে-তেই প্রভসিমরন সিংহ ও ভানুকা রাজাপক্ষকে আউট করেন।
ছন্দে ছিলেন শিখর ধাওয়ান। তাঁকে সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করেন লিয়াম লিভিংস্টোন। কিন্তু পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারে তাঁকে আউট করে পঞ্জাবকে বড় ধাক্কা দেন বরুণ চক্রবর্তী। জীতেশ শর্মা শুরুটা ভাল করলেও বড় রান করতে পারেননি। ২১ রান করে বরুণেরই শিকার হন তিনি।
আগের ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে বল করে দলকে জিতিয়েছিলেন বরুণ। ইডেনেও ছন্দে দেখা গেল তাঁকে। ৩ উইকেট নিলেন তিনি। এক দিকে উইকেট পড়লেও অন্য দিকে ছিলেন ধাওয়ান। এ বারের মরসুমে আরও একটি অর্ধশতরান করেন তিনি। পঞ্জাবের ইনিংসকে বড় রানে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে। কিন্তু কেকেআর অধিনায়ক নীতীশ বল হাতে ৫৭ রানের মাথায় আউট করেন ধাওয়ানকে।
অধিনায়ক আউট হওয়ার পরে রানের গতি কমে গিয়েছিল পঞ্জাবের। দেখে মনে হচ্ছিল, ১৬০ রানের বেশি করতে পারবে না তারা। কিন্তু শেষ দুই ওভারে আবার বদলাল খেলার ছবি। শাহরুখ খান ও হরপ্রীত ব্রার শেষ ১২ বলে ৩৬ রান করলেন। ফলে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৯ রান করে পঞ্জাব।
এই উইকেটে ১৮০ রান তাড়া করা যে খুব সহজ নয় তা কলকাতার ইনিংসের শুরু থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। পঞ্জাবের পেসাররাও গতির হেরফের করছিলেন। ফলে শট খেলা সমস্যা হচ্ছিল। কেকেআরকে প্রথম ধাক্কা দিলেন নেথান এলিস। তাঁর বলের গতি বুঝতে না পেরে ১৫ রানের মাথায় এলবিডব্লিউ হলেন রহমানুল্লা গুরবাজ়। কলকাতার অন্য ওপেনার জেসন রয় ভাল খেলছিলেন। রানের গতি বাড়ান তিনি। কিন্তু স্পিনারকে বলে আনতেই আউট জেসন। হরপ্রীতের বলে সুইপ মারতে গিয়ে ৩৮ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন ইংল্যান্ডের ব্যাটার।
জেসন আউট হওয়ার পরে কলকাতার রানের গতি কিছুটা কমে যায়। অধিনায়ক নীতীশ ও বেঙ্কটেশ চেষ্টা করলেও হাত খুলে খেলতে পারছিলেন না। চাপ বাড়ছিল কেকেআরের উপর। শেষ ১০ ওভারে জিততে দরকার ছিল ১০৪ রান। অর্থাৎ, প্রতি ওভারে ১০ রানের বেশি করতে হত কলকাতাকে।
ঠিক তখনই হাত খোলা শুরু করলেন নীতীশ। লিভিংস্টোনের এক ওভারে ১৬ রান নিলেন তিনি। সেখান থেকে খেলা আবার কেকেআরের দিকে ঘুরতে শুরু করে। পঞ্জাবের স্পিনারদের বিরুদ্ধে ভাল খেললেন কেকেআর অধিনায়ক। কিন্তু তাঁকে সঙ্গ দিতে পারলেন না বেঙ্কটেশ। রাহুল চাহারের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ১১ রানের মাথায় আউট হলেন তিনি।
শেষ ৩০ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৫৮ রান। ক্রিজে নীতীশের সঙ্গে ছিলেন আন্দ্রে রাসেল। একটি বড় ওভার প্রয়োজন ছিল কেকেআরের। তার মাঝেই ৩৭ বলে অর্ধশতরান করেন নীতীশ। কিন্তু তার পরেই চাহারকে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ৫১ রানের মাথায় আউট হয়ে ফেরেন কেকেআর অধিনায়ক।
কেকেআরকে জয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব ছিল রাসেল ও রিঙ্কুর কাঁধে। শেষ তিন ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৩৬ রান। তখনই হাত খোলা শুরু করলেন রাসেল। তাঁকে সঙ্গ দিলেন রিঙ্কু। পরের দু’ওভারে উঠল ৩০ রান। শেষ ওভারে ৬ রান দরকার ছিল। আরশদীপ সিংহের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সমস্যা হচ্ছিল। পঞ্চম বলে রাসেল ৪২ রান করে রান আউট হয়ে যান। শেষ বলে দরকার ছিল ২ রান। আরশদীপের বল ফাইন লেগ অঞ্চলে চার মারেন রিঙ্কু। আরও এক বার দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন এই বাঁ হাতি ক্রিকেটার। ১০ বলে ২১ রান করে অপরাজিত থাকলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy