ইডেনে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে জয়ের উচ্ছ্বাস কলকাতার ক্রিকেটারদের। ছবি: আইপিএল।
বৃষ্টি বিঘ্নিত প্রথম ম্যাচ হারতে হলেও ঘরের মাঠে জয় দিয়েই শুরু করল কলকাতা। বিরাট কোহলিদের বেঙ্গালুরুকে ৮১ রানে হারালেন নাইটরা। প্রথমে ব্যাট করে কেকেআর করে ৭ উইকেটে ২০৪ রান। জবাবে আরসিবির ইনিংস শেষ হল ১৭.৪ ওভারে ১২৩ রানে।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ইডেনে কিছুটা হলেও ব্যর্থ কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্যাটিং লাইন আপ! স্কোর বোর্ড দেখে অবশ্য তা বোঝার উপায় নেই। সৌজন্যে রহমানুল্লা গুরবাজ় এবং শার্দূল ঠাকুর। দুই ব্যাটারের দাপটে ঢাকা পড়ে গেল নীতীশ রানা, বেঙ্কটেশ আয়ারদের ব্যর্থতা। রিঙ্কু সিংহের কথাও বলতে হবে। ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া কলকাতার ইনিংসকে নির্ভরতা দিলেন উইকেটের এক দিক আগলে রেখে। টেস্ট বা এক দিনের ক্রিকেটে এমন ব্যাটিং দেখা গেলেও টি-টোয়েন্টিতে বিরল। ওপেন করতে নেমে আফগান উইকেটরক্ষক-ব্যাটার করলেন ৪৪ বলে ৫৭ রান। ৬টি চার এবং ৩টি ছয় এল তাঁর ব্যাট থেকে। আফগানিস্তানের প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইপিএলে অর্ধশতরান করলেন গুরবাজ়। উইকেটের অন্য প্রান্তে বেঙ্কটেশ আয়ার (৩), মনদীপ সিংহ (শূন্য), নীতীশ রানারা (১) পর পর আউট হয়ে গেলেও অবিচল ছিলেন গুরবাজ়। পরে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন রিঙ্কু। প্রথম দিকে ধরে খেলার চেষ্টা করলেন তিনি। ইনিংসের শেষ দিকে হাত খুললেন। ৩৩ বলে ৪৬ রান এল তাঁর ব্যাট থেকে। মারলেন ২টি চার এবং ৩টি ছয়। তাঁর সঙ্গে জুটি বাঁধেন শার্দূল। ষষ্ঠ উইকেট তাঁদের জুটিতে উঠল ১০৩ রান। শার্দূল ছিলেন বেশি আগ্রাসী। বেঙ্গালুরু শিবিরে তিনিই মূলত পাল্টা লড়াই পৌঁছে দিলেন কলকাতার পক্ষে। ৯টি চার এবং ৩টি ছয়ের সাহায্যে শার্দূল করলেন ২৯ বলে ৬৮ রান।
ডেভিড উইলির অনবদ্য বোলিংয়ের জন্য শুরুতে বিরাট কোহলিদের যতটা ভয়ঙ্কর মনে হচ্ছিল পরে আর ততটা দেখাল না। গুরবাজ় এবং আন্দ্রে রাসেলকে পর পর দু’বলে আউট করে করণ শর্মা কলকাতার উপর চাপ তৈরি করলেও শার্দূলের ব্যাটে ইডেনের গর্জন ফিরল। হাসি ফুটল কেকেআরের দুই কর্ণধার শাহরুখ খান এবং জুহি চাওলার মুখেও। করণের মতো হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেয়েছিলেন উইলিও। কিন্তু দু’জনকেই হতাশ করল ইডেন। তিন ব্যাটারে দাপটে ইডেনে বেঙ্গালুরু বিরুদ্ধে ২০৪ রান করল কলকাতা। ঢাকা পড়ে গেল চার ব্যাটারের ব্যর্থতা।
জয়ের জন্য ২০৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসিকে নিয়ে শুরুটা আগ্রাসী মেজাজেই করেছিলেন কোহলি। কিন্তু প্রথম ম্যাচের মতো বড় জুটি তৈরি করতে পারলেন না তাঁরা কেকেআরের বিরুদ্ধে। দু’জনেই দ্রুত সাজঘরে ফিরলেন। সুনীল নারাইনের বলে আউট হওয়ার আগে কোহলি করলেন ৩টি চারের সাহায্যে ১৮ বলে ২১ রান। বরুণ চক্রবর্তী আউট করলেন ডুপ্লেসিকে। আরসিবি অধিনায়ক করলেন ১২ বলে ২৩ রান। মারলেন ২টি করে বাউন্ডারি এবং ওভার বাউন্ডারি। বেঙ্গালুরুকে ভরসা দিতে পারলেন না গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৫), হর্ষল পটেল (শূন্য), শাহবাজ় আহমেদরা (১), অনুজ রাওয়াতরা (১)। উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রাখার চেষ্টা করেও পারলেন না মিলেচ ব্রেসওয়েল। তিনি করলেন ১৮ বলে ১৯ রান। মারলেন ১টি করে চার এবং ছয়। ব্যর্থ হলেন দীনেশ কার্তিকও। ৯ রান করলেন তিনি। এর পর বেঙ্গালুরুর লড়াই করার মতো আর সামর্থ্য ছিল না। শেষ বেলায় আকাশ দীপ এবং উইলির মরিয়া চেষ্টা হারের ব্যবধান কিছুটা কমালেও লাভ কিছু হয়নি। আকাশ দীপ ১৭ রান করে আউট হলেন বরুণের বলে। উইলি অপরাজিত থাকলেন ২০ বলে ২০ রান করে।
কার্তিক আউট হওয়ার পর নাইটদের জয় ছিল কেবল সময়ের অপেক্ষা। তেমনই হল। শুরুতে বরুণ, নারাইনের ধাক্কায় বেসামাল বেঙ্গালুরুর ব্যাটিং লাইন আপকে নাজেহাল করল কলকাতার ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার সুযশ শর্মার স্পিন। তিনি ৩০ রানে ৩ উইকেট নিলেন। ১৫ রানে বরুণের শিকার ৪ উইকেট। নারাইন ১৬ রান খরচ করে ২ উইকেট নিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy