এ বারের আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের যে কয়েক জন ক্রিকেটার ভাল খেলেছেন তার মধ্যে অন্যতম বরুণ চক্রবর্তী। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে যেমন শেষ ওভারে বল করে ম্যাচ জিতিয়েছেন, ঠিক তেমনই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর বা পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে মাঝের ওভারে উইকেট নিয়েছেন। কেকেআরের স্পিন আক্রমণকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বরুণ। ১১ ম্যাচে নিয়েছেন ১৭টি উইকেট। এ বারের আইপিএলে একটি নতুন বল করছেন বরুণ, যা এর আগে তিনি করেননি।
আইপিএলে কেকেআরের হয়ে ২০২১ সালের আইপিএলে চমক দিয়েছিলেন বরুণ। সে বার সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে ভাল বল করে ভারতীয় দলের দরজাও খুলেছিল এই ডান হাতি স্পিনারের। বরুণ দু’ধরনের বল করতেন। একটি ক্যারম বল, যা তর্জনী, মধ্যমা ও অনামিকা, এই তিনটি আঙুলের ব্যবহারে করা হয়। এই ধরনের বলে কোনও স্পিন থাকে না। যে ভাবে ক্যারমের স্ট্রাইকার মারা হয় সে ভাবেই এই বল ব্যাটারের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। অন্য বলের তুলনায় এই বলের গতি একটু বেশি হয়। বল উইকেটে পড়ে সোজা যায়। ফলে ব্যাটার সমস্যায় পড়েন।
দ্বিতীয় যে বল বরুণ করতেন সেটি গুগলি। অর্থাৎ, লেগ স্পিনারের বল উইকেটে পড়ার পরে লেগ স্পিন না হয়ে উল্টো দিকে ঘুরবে। বরুণ বেশির ভাগ বলই করতেন ক্যারম বল। তাঁর গুগলি ছিল অস্ত্র। অর্থাৎ, গুগলিতেই বেশি উইকেট নিতেন কেকেআরের স্পিনার।
আরও পড়ুন:
কিন্তু এ বারের আইপিএলে তিনি লেগ স্পিন করাও শুরু করেছেন। বল উইকেটে পড়ে ডান হাতি ব্যাটারের বাইরের দিকে ও বাঁ হাতি ব্যাটারের ভিতরের দিকে ঢুকছে। কিন্তু তাঁর বোলিং অ্যাকশনে বিশেষ বদল না হওয়ায় ব্যাটারদের বুঝতে সমস্যা হচ্ছে। পঞ্জাব ম্যাচে লিয়াম লিভিংস্টোন বরুণের লেগ স্পিন বুঝতে না পেরে ভুল লাইনে খেলে আউট হয়েছেন। তিনি ভেবেছিলেন ক্যারম বল হয়েছে। তাই সোজা লাইনে খেলেন। কিন্তু বল পড়ার পরে স্পিন হয়।
কেকেআরের বিরুদ্ধে হায়দরাবাদের শেষ ওভারে জিততে দরকার ছিল ৯ রান। সেই ওভারের বেশির ভাগ বলই লেগ স্পিন করেছিলেন বরুণ। তাঁর উচ্চতা বেশি হওয়ায় লেগ স্পিনে বাউন্সও বেশি পাচ্ছেন বরুণ। সেই কারণেই বড় শট খেলতে গিয়ে ব্যাটে বলে ঠিক মতো লাগাতে না পেরে আউট হয়েছেন আব্দুল সামাদ। পরের ব্যাটাররাও বল মিস করেছেন। এই নতুন অস্ত্র খুব ভাল ভাবে ব্যবহার করছেন বরুণ। তার ফলও পাচ্ছেন। তাঁর উপর ভরসা করছেন অধিনায়ক নীতীশ রানা। ভরসা করছেন কেকেআর সমর্থকরাও।