শতরানের পর বাটলার। ছবি: আইপিএল
এক আইপিএলে চারটি শতরান। বিরাট কোহলীর এই কীর্তি ছুঁয়ে ফেলেছেন জস বাটলার। এ বারের আইপিএলে সব থেকে বেশি রানের মালিকও পাঁচ ফুট এগারো ইঞ্চির ব্যাটার। সুঠাম চেহারার এই ইংরেজ ব্যাটার এই আইপিএলে যে কোনও দলের ত্রাস হয়ে উঠেছেন। সাদা বলের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের সব থেকে ভয়ঙ্কর ব্যাটার বলা হয় তাঁকেই।
এ বারের আইপিএলের নিলামের আগে রাজস্থান রয়্যালস জানিয়ে দেয় বাটলারকে দলে রেখে দেবে তারা। ১০ কোটি টাকা দিয়ে ইংরেজ ব্যাটারকে দলে রেখে দেয় রাজস্থান। নীল চোখের বাটলার এখন সত্যিই রাজস্থানের ‘ব্লু আইড বয়’। তিনি ক্রিস গেলের মতো বিধ্বংসী, বিরাট কোহলীর মতো ক্রিকেটীয় শটে পারদর্শী, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মতো ঠান্ডা মাথার ক্রিকেটার। ৩১ বছরের এই ওপেনার সাদা বলের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের অন্যতম বিধ্বংসী ব্যাটার। ১৪৮টি এক দিনের ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ ৩৮৭২ রান। রয়েছে ন’টি শতরান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৮৮টি ম্যাচ খেলে করেছেন ২১৪০ রান। সেখানেও রয়েছে একটি শতরান। এ বারের আইপিএলে এখনও পর্যন্ত বাটলারের সংগ্রহ ৮২৪ রান। আইপিএলে শতরানের সংখ্যায় ইতিমধ্যেই বিরাটকে ছুঁয়ে ফেলেছেন। এক আইপিএলে যেমন চারটি শতরান রয়েছে বাটলারের, তেমনই সব আইপিএল মিলিয়ে শতরানের সংখ্যা পাঁচ। বিরাটেরও আইপিএলে পাঁচটি শতরান রয়েছে। বাটলার কি তবে শুধুই সাদা বলের ক্রিকেটার?
২০১০ সালে ক্রেগ কিজওয়েটার ইংল্যান্ড দলে ডাক পেলে প্রতিভাবান বাটলারকে উইকেটরক্ষার দায়িত্ব দেয় সমারসেট। প্রথম ম্যাচেই দলকে জেতান গ্ল্যামরগানের বিরুদ্ধে। কাউন্টিতে প্রথম শতরান করেছিলেন চতুর্থ ম্যাচেই। ১৪৪ রানের ইনিংস খেলেন বাটলার। ১৯ বছর বয়সেই নিজের প্রতিভা দেখাতে শুরু করেন তিনি। বাটলারের ব্যাট হাতে সঠিক টাইমিং এবং শক্তি নজর কেড়েছিল সেই সময়। সমারসেটে তিন বছর খেলার পর ২০১৩ সালে বাটলার যোগ দেন ল্যাঙ্কাশায়ারে।
ইংল্যান্ডের এই ক্লাবের সঙ্গেই এখনও যুক্ত বাটলার। এই ক্লাবে খেলতে খেলতেই ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন। সাদা বলের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের সহ-অধিনায়ক হয়েছেন। শুধু সাদা বলে নয়, লাল বলের ক্রিকেটেও নিজের জাত চিনিয়েছেন বাটলার। ৫৭টি টেস্টে ২৯০৭ রান করেছেন তিনি। সেখানেও রয়েছে দু’টি শতরান। তিন ধরনের ক্রিকেটেই তাঁর গড় ত্রিশের উপরে। ক্রিকেটের জন্য ইংরেজ সরকার তাঁকে ‘মেম্বার অব দ্য অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ অ্যাম্পায়ার’ সম্মান দিয়েছে। তবে টেস্ট খেলার তিন বছর আগেই বাটলারের অভিষেক হয় সাদা বলের ক্রিকেটে। ২০১১ সালে ভারতের বিরুদ্ধে অভিষেক হয়েছিল তাঁর। তবে সেই ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগই পাননি বাটলার।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করা বাটলার আইপিএলে প্রথম সুযোগ পান মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলে। ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে। দুই বছরে বাটলারের সংগ্রহ ছিল মাত্র ৫২৭ রান। তাঁকে না রাখার সিদ্ধান্ত নেয় মুম্বই। সেটাই বোধ হয় কাল হল রোহিত শর্মাদের। সেই বছর আইপিএলে ব্যর্থ হলেও জীবনে নতুন এক অধ্যায় শুরু হয় বাটলারের। বিয়ে করেন তিনি। সেই সময় বাটলারের পাশে ছিলেন দুই ইংরেজ ক্রিকেটার স্টিভেন ফিন এবং অ্যালেক্স হেলস।
২০১৮ সালের নিলামে রাজস্থান তুলে নেয় বাটলারকে। সে বারের আইপিএলেই বাটলার বুঝিয়ে দেন কী ভুল করেছিল মুম্বই। ১৩ ম্যাচে তিনি করেন ৫৪৮ রান। তার পরের তিনটি আইপিএলে বাটলারের গড় ছিল ত্রিশের উপর।
ইডেনের মাঠে রাজস্থান হেরে যায় গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে। ডাগ আউটে হতাশ চোখে বসে বাটলার, কিন্তু মুখ কঠিন। মুখের মধ্যে প্রতিজ্ঞার ছাপ। বুঝে গিয়েছিলেন আরও পরিশ্রম করতে হবে। সেই পরিশ্রমের ফল পেলেন দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে। শতরান করে রাজস্থানকে ফাইনালে তুললেন।
অপেক্ষা আর একটি ম্যাচের। যে গুজরাতের বিরুদ্ধে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হেরেছিল রাজস্থান, তাদের বিরুদ্ধে নামতে হবে ফাইনালে। কঠিন লড়াইয়ের জন্য তৈরি হচ্ছেন বাটলারও। তাই বিরাটদের হারিয়ে নিজের শতরানের পর উচ্ছ্বাসের ছবি টুইট করে লিখেছেন, ‘স্পেশাল রাত। আরও একটা ধাক্কা।’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy