ইডেনে ম্যাচ জেতার পর মিলার এবং হার্দিক। ছবি: আইপিএল
এই আইপিএলে গ্রুপ পর্বে সব চেয়ে সফল দল গুজরাত টাইটান্স। ১৪টি ম্যাচের মধ্যে ১০টি ম্যাচ জিতেছে গ্রুপ পর্বে। মঙ্গলবার প্রথম কোয়ালিফায়ার জিতে ফাইনালেও জায়গা করে নিয়েছে হার্দিক পাণ্ড্যর দল। রবিবারের ফাইনালের আগে চার দিন বিশ্রামের সময় পেয়েছে। খেলা গুজরাতের ঘরের মাঠ মোতেরা স্টেডিয়ামে (নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম)। বাড়তি বিশ্রাম, ঘরের মাঠ— সেই ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে কি বাড়তি সুবিধা পাবে গুজরাত?
হার্দিক পাণ্ড্যর নেতৃত্বে গুজরাত এখন অশ্বমেধের ঘোড়া। সেই ঘোড়ার লাগাম হাতে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় বড় ভূমিকা নিচ্ছেন মিলার। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার মানতে রাজি নন যে, গুজরাত বাড়তি সুবিধা পাবে। মিলার বলেন, “আমি এই স্টেডিয়ামে আগে খেলিনি। আইপিএলে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলাম মুম্বইয়ে। আমার কাছে এটা নতুন মাঠ।” একই সুর রশিদ খানের গলায়। তিনি বলেন, “আমরা এই মাঠে আইপিএলের আগে অনুশীলন করেছি। কিন্তু অনুশীলন এবং ম্যাচ এক নয়। তবে গুজরাতের মাঠে রাজস্থান রয়্যালস এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের ম্যাচটা আমরা দেখেছি।”
গুজরাত দলে কোনও বড় নাম নেই। তবুও সেই দল একের পর এক ম্যাচ জিতছে। মিলার বলেন, “কোনও দলেরই ১১ জন ম্যাচ জেতানো ক্রিকেটার দরকার হয় না। কিন্তু এমন ক্রিকেটার প্রয়োজন যারা পরিস্থিতি বুঝে যে কোনও জায়গায় ম্যাচ জেতাতে পারে। আমাদের দলে যেমন একেকটি ম্যাচে একেক জন জিতিয়েছে। দলে নিজের ভূমিকা নিয়ে কারও কোনও জটিলতা নেই। আমরা সবাই নিজের ১০০ শতাংশ দিয়েছি, ফাইনালেও সেটাই চেষ্টা করব।”
রশিদ এখন শুধু বোলার নন, গুজরাতের হয়ে বেশ কিছু ম্যাচে ব্যাট হাতেও বড় ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। রশিদ বলেন, “অনুশীলনে আগের থেকে বেশি ব্যাট করছি। দল আমাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। কেউ যখন তোমার উপর ভরসা করে, তখন আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। ইতিবাচক মনোভাব কাজ করে। আমার ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে।”
এ বারের আইপিএলে এখনও পর্যন্ত ১৫টি ম্যাচ খেলেছেন ডেভিড মিলার। ইতিমধ্যেই তাঁর সংগ্রহ ৪৪৯ রান। শেষ পাঁচটি আইপিএলে মিলারের মোট সংগ্রহ ছিল ৪৯৪ রান। গুজরাত দলে সুযোগ পেয়েই কী ভাবে বদলে গেলেন তিনি? ফাইনাল ম্যাচের আগে নিজেই জানালেন কী ভাবে বদলে গিয়েছে তাঁর খেলা।
মিলার বলেন, “গুজরাতের হয়ে আমি সব ক’টি ম্যাচ খেলেছি। এটা একটা আত্মবিশ্বাস দেয়। এমন সুযোগের জন্যই অপেক্ষা করছিলাম আমি। আগে বয়স কম ছিল। এখন বয়সের সঙ্গে অভিজ্ঞতাও বেড়েছে, সেটাও একটা কারণ।”
মিলার ছন্দে থাকায় গুজরাত দলের মিডল অর্ডার শক্তিশালী হয়েছে। ইডেনে প্রথম কোয়ালিফায়ারে ১৮৯ রানের মতো বড় লক্ষ্যও অনায়াসে পার করছে দল।
গুজরাত দলের স্পিনার রশিদও খুশি মিলারের ব্যাটে রান থাকায়। তিনি বলেন, “মিলার রান করায় আমাদের বোলিং ইউনিটের উপর থেকেও চাপ কমে যাচ্ছে। অনেক নিশ্চিন্তে বল করতে পারছি আমরা।”
গুজরাত দল এখনও পর্যন্ত এ বারের আইপিএলে মাত্র চারটি ম্যাচ হেরেছে। যে একটি ম্যাচ বাকি রয়েছে সেটা জিততে না পারলে বাকি ১১টি জয়ও বৃথা হয়ে যাবে। শেষ ম্যাচে তাই গুজরাত দলের ভক্তরা যেমন মিলারের ব্যাটে রান চাইবেন, তেমনই চাইবেন রশিদের বল উইকেট এনে দিক।
গুজরাত দলের আরও এক ক্রিকেটার দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন। রাহুল তেওটিয়া। তাঁর সঙ্গে বেশ কিছু ম্যাচে ভাল জুটি গড়েন মিলার। সেই জুটি সম্পর্কে মিলার বলেন, “আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা খুব সুন্দর। একে অপরের পরিপূরক আমরা। ক্রিজে থাকার সময় কখন কথা বলব, কখন কিছু বলব না সেগুলো খুব ভাল বুঝতে পারি।”
মিলারদের মতে গুজরাত এ বারের আইপিএলে একটা দল হয়ে দেখিয়েছে। সাফল্যও এসেছে। বাকি আর একটি ম্যাচ। সেই ম্যাচ জেতার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন মিলাররা।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy