ফাইল চিত্র।
আট বছর কলকাতা নাইট রাইডার্সে খেলেছেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে দলে নিয়মিত ছিলেন না বলে ক্ষোভ ছিল কুলদীপ যাদবের। এ বার আইপিএলের নিলামে দিল্লি ক্যাপিটালস তুলে নিয়েছিল এই রিস্টস্পিনারকে (কব্জির মোচড়ে যাঁরা বল ঘোরান)। রবিবার সেই পুরনো নাইটদের বিরুদ্ধে ব্রেবোর্ন স্টেডিয়ামে কুলদীপ ৩৫ রানে চার উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা। তাঁর শিকারের মধ্যে রয়েছেন নাইটদের নতুন অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ার, মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে কেকেআরের ম্যাচের নায়ক প্যাট কামিন্স, সুনীল নারাইন এবং উমেশ যাদব। শেষ তিন জনকে আবার একই ওভারে (১৬ ওভার) আউট করে ম্যাচে দিল্লিকে চালকের আসনে বসিয়ে দেন চায়নাম্যান স্পিনার।
রবিবার পুরনো দলের বিরুদ্ধে ৪৪ রানে জয়ের পরে কুলদীপ মাঠেই সাক্ষাৎকার দেন সতীর্থ শার্দূল ঠাকুরকে। কেকেআরের বিরুদ্ধে যিনি ২.৪ ওভার বল করে ৩০ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন। কুলদীপের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার ফাঁকে শার্দূল তাঁর কাছে জানতে চান, ‘‘এই দুরন্ত ছন্দে থাকার রহস্য কী? আজ তো দারুণ বল ঘোরালে।’’ যা শুনে কুলদীপ বলতে শুরু করেন, ‘‘বোলিংয়ে তেমন কিছু পরিবর্তন আনিনি। আসলে এখন পুরনো ছন্দটা পাচ্ছি। খেলাটা ফের উপভোগ করতে পারছি। দলে অনেক তরুণ মুখ রয়েছে। তুমি, অক্ষর পটেল, আমাদের অধিনায়ক ঋষভ, এদের সকলের সঙ্গে খেলাটা বেশ মজার অভিজ্ঞতা। তাই ফুরফুরে মেজাজেই খেলছি।” যোগ করেন, “আর আমি বোলিংয়ের ক্ষেত্রে খুব বেশি পরিবর্তনের পক্ষপাতী নই। কেবল নিখুঁত নিশানায় বল করে যাই। সে ভাবেই সাফল্য আসছে।’’
এর পরেই শার্দূল মোক্ষম প্রশ্নটি করেন। তা হল, ‘‘আজ এত উজ্জীবিত লাগছিল কেন? সাংবাদিক বৈঠকে আমাকে পাঠানো হয়েছিল। সেখানেও এই প্রশ্নটি করা হল। কারণটা কী?’’ কুলদীপ হাসতে হাসতে বলেন, ‘‘কেকেআরে আমি আট বছর খেলেছি। অনেক কিছু ওখানে আমি শিখেছি। তাই ওদের ধন্যবাদ দিতে চাই।’’ যোগ করেন, ‘‘কোনও দলের সঙ্গে দীর্ঘ সময় খেলার পরে নতুন দলে গেলে পুরনো দলের বিরুদ্ধে ভাল খেলার তাগিদ নিজের থেকেই চলে আসে। সে ভাবেই খেলে গিয়েছি।’’
ম্যাচে উমেশ যাদবকে দুরন্ত ক্ষিপ্রতার সঙ্গে কট ও বোল্ড করেছেন। শার্দূল সে ব্যাপারে প্রশ্ন করলে কুলদীপের জবাব, ‘‘আসলে উমেশের ব্যাটের কাণায় লেগে বলটা উপরে উঠে যেতেই বুঝেছিলাম বল বেশি দূর অর্থাৎ মিড উইকেট বাউন্ডারির দিকে যাবে না। তাই নিজেই দৌড়েছিলাম সেটা ধরতে। তার পরে শরীর শূন্যে ছুড়ে দিই। হাতেও বলটা ঠিক বসে যায়। আর এক বার হাতে বল ঠিক মতো বসে গেলে বেরিয়ে যাওয়ার রাস্তা থাকে না। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।’’
এ বার শার্দূলকে কুলদীপ প্রশ্ন করেন, ‘‘১৭ ওভারের পরে আমাদের রান ১৭০-১৭৫-এর মতো ছিল। তার পরে উমেশ যাদবকে জোড়া ছক্কা মেরে ১১ বলে ২৯ রান করেছিলে। ব্যাটিংয়ের সময়ে তোমার মনে কী চলতে থাকে?’’ হাসতে হাসতে শার্দূল বলেন, ‘‘আসলে আমি পরিস্থিতি বুঝে খেলি। আমি আর অক্ষর ওই সময় ঠিক করে নিয়েছিলাম, বাকি তিন ওভারে চার-ছক্কা মেরে রান বাড়াতে হবে। ম্যাচে আমার মাথায় এটাই থাকে যে, অনুশীলনে ওই ম্যাচের জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী যা মহড়া দিয়েছি, তা বাস্তবায়িত করতে হবে।’’ কুলদীপ এর পরে জানতে চান, ‘‘এ বার দিল্লির দলে এসে নতুন বল হাতে তুমি শুরু করছ। কেমন লাগছে?’’ শার্দূল বলেন, ‘‘এটা আমার দায়িত্ববোধ বাড়িয়েছে। এর আগে চেন্নাই সুপার কিংসে খেলার সময়ে বোলিংয়ের চাপটা আমাদের মধ্যে ভাগ হয়ে যেত। কিন্তু এ বার দিল্লি আমাকে ভাল মূল্যে কিনেছে। ফলে দলের প্রতি দায়বদ্ধতা বেড়ে গিয়েছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কখনও তুমি মার খাবে, কখনও সাফল্য আসবে। সেটা মাথায় রেখেই কোনও বলে মার খেলে সেটা ভুলে পরের বলে মনঃসংযোগ করি। পরিস্থিতি বুঝে নিজের কাজ করে যাই।’’
শেষ প্রশ্নে কুলদীপ জিজ্ঞাসা করেন, অজিঙ্ক রাহানের ক্যাচ পিছন দিকে ছুটে দুর্দান্ত ভাবে নেওয়ার ব্যাপারে। সে প্রসঙ্গে শার্দূল বলেন, ‘‘অনুশীলনে ও ভাবে ক্যাচ ধরার মহড়া দিয়েছিলাম। তা ছাড়া তখন আমাদের বোলাররা ভাল বল করছিল। আমার মাথায় ছিল, অজিঙ্ক রাহানের ক্যাচটা ধরার অর্ধেক সুযোগ আছে। ভেবে দেখলাম ছুটে গিয়ে সেই অর্ধেক সুযোগ কাজে লাগিয়ে সফল হলে আমাদের দল ম্যাচে জাঁকিয়ে বসবে। সেই ভাবনা থেকেই ছুটে গিয়ে রাহানের ক্যাচটা তালুবন্দি করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy