হার্দিক পাণ্ড্যকে কেন আইপিএলের সবচেয়ে সেরা অধিনায়ক বলা হচ্ছে? — ফাইল চিত্র
শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। এক ফাইনাল চলল প্রায় আড়াই দিন ধরে। মাথা ঠান্ডা রেখে, নিজেকে শান্ত রেখেও দলকে জেতাতে পারলেন না হার্দিক পাণ্ড্য। শেষ বলে এসে হাত থেকে বেরিয়ে গেল ম্যাচ। এবং আইপিএল ট্রফি। পর পর দু’বার ট্রফি জিতে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এবং রোহিত শর্মাকে ছোঁয়া হল না হার্দিক পাণ্ড্যের।
টানা দু’বার ট্রফি না তুলতে পারলেও, হার্দিক যে ভাবে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাতে এটা বোঝা গিয়েছে, আইপিএল আগামী দিনে তাঁকেই দেখতে চলেছে। অধিনায়কত্বে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন হার্দিক। জাতীয় দলে রোহিতের উত্তরসূরি হিসাবেই অনেকে তাঁকেই বেছে রেখেছেন। সেই হার্দিক আইপিএলে সবচেয়ে ভাল অধিনায়ক কেন, তা খুঁজে বার করল আনন্দবাজার অনলাইন:
১) বুদ্ধিদীপ্ত এবং পরিস্থিতি অনুসারে দল নির্বাচন। এ ব্যাপারে হার্দিক অনুসরণ করেন তাঁর পূর্বসূরি মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে। চেন্নাই দলে দীর্ঘ দিন ধরেই একটা ধারা রয়েছে। দল নিয়ে বেশি ঘাঁটাঘাঁটি না করা। চলতি আইপিএলে ১০ বার অপরিবর্তিত দল নামিয়েছেন ধোনি। এর থেকেই বোঝা যায় দলের ক্রিকেটারদের উপর কতটা আস্থা রয়েছে। হার্দিক ঠিক একই জিনিস অনুসরণ করছেন। দলের ক্রিকেটারদের বোঝাতে চাইছেন, যা-ই হোক না কেন, তিনি পাশে থাকবেন। দলের যাঁরা মূল ক্রিকেটার, তাঁরা খারাপ খেলুন বা ভাল, হার্দিক আস্থা রাখতে চান। তাই ঋদ্ধিমান সাহা কিছু ম্যাচে ভাল খেলতে না পারলেও দল থেকে বাদ পড়েন না।
২) চালাক-চতুর অধিনায়কত্ব। ম্যাচের পরিস্থিতি বিচার করে ফিল্ড সাজানোর ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ হার্দিক। কোন ব্যাটারের কোন দিকে দুর্বলতা, কোন ব্যাটার কোন দিক দিয়ে শট খেলতে ভালবাসেন সে সম্পর্কে হার্দিক আগে থেকে পড়াশোনা করে নেন। ম্যাচের পর বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে ফিল্ড পরিবর্তন করেন। এ ছাড়া বোলার পরিবর্তনের ব্যাপারেও একই রকম মানসিকতা তাঁর। ব্যাটার বুঝে নিজের বোলারদের কাজে লাগান।
৩) দলের মধ্যে শান্ত পরিবেশ। এখানেও হার্দিক অনুসরণ করেন ধোনিকে। দল যতই চাপে থাক, ধোনির মধ্যে চিন্তার লেশমাত্র দেখা যায় না। হার্দিকও তাই। দলের সেরা বোলার পর পর ছয়ই খান বা দলের সেরা ব্যাটার শূন্য করে ফিরে যান, হার্দিকের মানসিকতা একই রকম থাকে। তিনি বরং সেই বোলার বা ব্যাটারের কাঁধে হাত রেখে তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। এই ক্ষমতা হার্দিকের স্বভাবেই রয়েছে। এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ জেতানো এখনও কেউ ভোলেনি।
৪) প্রত্যেক সতীর্থকে নির্দিষ্ট কাজ বুঝিয়ে দেওয়া। আধুনিক প্রযুক্তির কারণে বিপক্ষের ক্রিকেটারদের সম্পর্কে আগে থেকে দরকারি তথ্য জেনে নেওয়া সম্ভব। তাই পরের প্রতিপক্ষ দেখে নিয়ে সতীর্থদের নির্দিষ্ট করে বুঝিয়ে দেন তাঁদের ভূমিকা। কোন ম্যাচে শুভমন লম্বা ইনিংস খেলবেন, কোন ম্যাচে তিনি অ্যাঙ্করের ভূমিকা পালন করবেন, কোন ম্যাচে দাসুন শনাকা খেলবেন, কোন ম্যাচে তিনে সাই সুদর্শনকে নামানো হবে— এটা আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রাখেন। ফলে হার্দিকের দলে কোনও ক্রিকেটারকেই চাপে থাকতে দেখা যায় না। এর মূল কারণ, প্রত্যেকে নিজেদের ভূমিকা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।
৫) কোচেদের সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক। আশিস নেহরা এবং গ্যারি কার্স্টেন কোনও সময় ডাগ আউটে চুপ করে বসে সামনে খোলা ল্যাপটপের দিকে চেয়ে থাকেন না। সর্ব ক্ষণ ঘুরে ঘুরে পরিস্থিতি বিচার করেন। দরকারে বাউন্ডারিতে থাকা ফিল্ডারদের সঙ্গে কথা বলেন। হার্দিকের চাপমুক্ত থাকার আরও একটা কারণ হল নেহরা। দলটাকে দারুণ বোঝেন। তিন জনের রসায়ন এতটাই ভাল যে দলকে পরের পর ম্যাচে তা সাফল্য এনে দিচ্ছে। এই কারণে গুজরাতে সুপারস্টার জাতীয় ক্রিকেটার কম থাকলেও দলটার মধ্যে ধারাবাহিকতা রয়েছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ঠিক যেমনটা দরকার, তেমন ক্রিকেটার দলে ভর্তি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy