উৎসব: ইডেনে দুরন্ত শতরানের পরে হ্যারি ব্রুক। নিজস্ব চিত্র।
তৃতীয় ওভারে কেন তাঁকে বল করতে দেওয়া হল, সেই উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি। সেই ওভারে বল করতে এসে অভিষেক শর্মাকে ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নিজেও মাঠ থেকে বেরোলেন সাপোর্ট স্টাফের কাঁধে ভর দিয়ে। তিনি আন্দ্রে রাসেল। ইডেনে শুক্রবার বল হাতে জ্বলে উঠলেন তিন উইকেট নিয়ে। কিন্তু ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারের চোট লাগেনি। পায়ের পেশিতে টান ধরেছে তাঁর।
হাঁটুতে চোট থাকার কারণে প্রথম তিন ম্যাচে বল করেননি রাসেল। ইডেনেই বল হাতে প্রত্যাবর্তন ঘটে তাঁর। যদি তিন উইকেট নিয়ে কোনও চোট না পেয়ে শেষ করতেন, তা হলে কিছুই হয়তো বলার থাকত না। কিন্তু তিনি যে ভাবে খুঁড়িয়ে মাঠ ছাড়লেন, তা দেখার পরে নাইট সমর্থকেরা কার্যত হতাশ হয়ে পড়লেন।
বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে আরও একটি দুঃসংবাদ, শ্রেয়স আয়ারের পরিবর্ত হিসেবে ঘোষণা করা হল গুজরাতের এক তরুণ ক্রিকেটারের নাম। তিনি আর্য দেশাই। মাত্র তিনটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন। রান করেছেন ১৫১। অথচ সুদীপ ঘরামির মতো ক্রিকেটারকে ট্রায়ালে ডেকে প্রশংসা করার পরেও নেওয়া হল না তাঁকে!
সুদীপ রঞ্জি ট্রফিতে ৮০৩ রান করেছেন। শতরান চারটি। তাঁর মতো ক্রিকেটারের পরিবর্তে কেন গুজরাতের এক তরুণকে নেওয়া হল, তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলার কোনও ক্রিকেটারকে দলে নেয় না কেকেআর। এ বারও ব্রাত্যই থাকল বাংলা!
ইডেনে রাসেলকে নিয়ে উদ্বেগের মাঝে দর্শকদের মন কেড়ে নিল হ্যারি ব্রুকের বিধ্বংসী ইনিংস। ৫৫ বলে ১০০ রানে অপরাজিত থাকলেন ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যান। চলতি আইপিএলে প্রথম সেঞ্চুরি এল তাঁর ব্যাট থেকেই। তাঁকে আবিষ্কার করেছেন বেন স্টোকসদের দলের নতুন কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। এখনও পর্যন্ত ছ’টি টেস্ট খেলেছেন ব্রুক। তার মধ্যে চারটিতেই শতরান পেয়েছেন তিনি। অর্ধশত রান তিনটি। তাঁর ব্যাটিং গড় ৮০-র উপরে। স্ট্রাইক রেট ৯৮.৭৭। টেস্টে ওপেনিংয়ের সংজ্ঞাই বদলে দিয়েছেন তিনি। ম্যাচ শেষে সম্প্রচারকারী চ্যানেলকে ব্রুক জানিয়ে গেলেন, এটাই তাঁর স্বাভাবিক ব্যাটিংয়ের ধরন।
ব্রুক বলেন, ‘‘টেস্টের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অনেক তফাত রয়েছে। কিন্তু আমি একই ভাবে দু’টি ফর্ম্যাটে ব্যাট করতে পছন্দ করি। কোচ ম্যাকালাম সত্যিই অনেক সাহায্য করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর অবদান কোনও দিনও ভুলব না।’’ ব্রুকের খেলা দেখতে এসেছেন তাঁর বান্ধবী। ‘এল’ ব্লকে বসেই তাঁর সঙ্গীর শতরান উপভোগ করেন তিনি। ব্রুক বলছিলেন, ‘‘এত দিন আমার পরিবারের সকলেই ছিলেন। কিন্তু এক দিন আগে তাঁরা দেশে ফিরেছেন। শুধুমাত্র আমার বান্ধবী এসেছে ইডেনে। আমি নিশ্চিত, এই ইনিংস দেখে ওরা সকলেই খুব খুশি হবে।’’
ইডেনের পিচে ব্যাট করে মুগ্ধ ব্রুক। বলছিলেন, ‘‘এত দিন যে ধরনের পিচে ব্যাট করেছি, তার মধ্যে সব চেয়ে ভাল পিচ পেলাম ইডেনে। বল ভালই ব্যাটে আসছিল। এখানে শটের মর্যাদা পাওয়া যায়। তবে স্পিনারদের বিরুদ্ধে আমি কিছুটা সতর্ক হয়ে ব্যাট করেছি।’’
ব্রুকের ইনিংসের শুরুর দিকে দর্শকেরা খুব একটা উচ্ছ্বাস দেখাচ্ছিলেন না। কিন্তু ৩২ বলে তাঁর অর্ধশত রানের পর থেকে ইডেনও তাঁর প্রত্যেকটি শট উপভোগ করে। এক সময় বোঝা যাচ্ছিল না ইডেন কাকে সমর্থন করছে? ব্রুকের ইনিংসে বিস্মিত লারাও। তাঁর শতরানের পরে আকাশের দিকে হাত মুঠো করে তুলে উৎসব করেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি। তাঁর পরামর্শেই শুরুতে ব্যাট করতে পাঠানো হয় ব্রুককে। জানিয়েছেন সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদ দলে ব্রুকের সতীর্থ অভিষেক। ওপেনিংয়ে নেমেই সেঞ্চুরি করে মাঠ ছাড়েন তিনি।
কেকেআর বনাম সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদ ম্যাচ দেখতে জ়ুরিখ থেকে ১২ জন এসেছেন ইডেনে। তাঁরা সুইৎজ়ারল্যান্ডে ‘আই ক্রিকেট’ খেলেন। তাঁদের অধিনায়ক রজার ফেইরেন বলছিলেন, ‘‘ইউরোপীয় ক্রিকেটের পরিধি ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে। আশা করি, ভারতীয় ক্রিকেটারেরাও এক দিন আইস ক্রিকেট খেলতে যাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy