আইপিএল আটের সেরা ইমার্জিং প্লেয়ার শ্রেয়স।
কুড়ি বছর বয়সে তিনি নতুন তারকা। আইপিএল ৮-এ সেরা ‘ইমার্জিং প্লেয়ার’ শ্রেয়স আয়ার। যাঁর ১৪ ম্যাচে ৪৩৯ রান। চারটে হাফ সেঞ্চুরি। দেশের এই উঠতি তারকা এবিপি-কে বললেন নিজের ক্রিকেট-ভাবনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা।
প্রশ্ন: আইপিএলে ওপেন করার অভিজ্ঞতাটা কেমন?
শ্রেয়স: বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। প্রথম ম্যাচে মিডল অর্ডারে ব্যাট করার পর প্রবীণ (আমরে) স্যার আমায় ডেকে বললেন, ‘ওপেন করবি?’ আমি হ্যাঁ বলতে বোধহয় এক সেকেন্ডও নিইনি। কারণ, জানতাম যে, যত উপরে ব্যাট করব, তত বেশি রান করার সুযোগ আসবে। উনি আমাকে এই মরসুমে তিনশোর টার্গেট দিয়েছিলেন। সেটা পেরিয়ে যাওয়ার পর চারশোর টার্গেট দেন। সেটাও পেরতে পেরে আমি খুশি।
প্র: প্রবীণ আমরের প্রভাব আপনার কেরিয়ারে কতটা পড়েছে। রাহানের মতো অনেকেই তো এখন ওর পরামর্শ নিচ্ছে।
শ্রেয়স: ছোট থেকেই উনি আমার কোচ। সেটা আমার সৌভাগ্য। ছোটখাট যে কোনও সমস্যায় আমি ওঁর কাছে যাই। উনিও যথেষ্ট সাহায্য করেন। আমার দক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে ওঁর অবদান প্রচুর। আমি খুব ভাগ্যবান যে এখন ওঁকে ঘরোয়া ক্রিকেটে মুম্বই ও আইপিএলে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের কোচ হিসেবেও পাচ্ছি।
প্র: ২.৬ কোটি টাকা দিয়ে দিল্লি আপনাকে নিয়েছিল। এটা কি আপনাকে চাপে ফেলে দিয়েছিল? তা ছাড়া মাঠ ও মাঠের বাইরে প্রত্যাশার চাপ কী ভাবে সামলান?
শ্রেয়স: একেবারেই চাপে ফেলেনি। টাকা-পয়সা নিয়ে আমি চিন্তাই করি না। ওটা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই থাকবে। আমি শুধু ক্রিকেট খেলতে চাই আর উপভোগ করতে চাই। আর প্রত্যাশার চাপের কথা বলছেন? সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলে এটা শিখেছি আমি। যুবরাজ সিংহ আমাকে বলেছে, ‘যখন ব্যাট করতে নামবি, তখন অন্য কিচ্ছু ভাববি না। শুধু ব্যাটিংয়েই মন দিবি।’ তেমনই জাহির খান আমাকে বুঝিয়েছে, বল করার সময় বোলারদের মনের মধ্যে কী হয়। কোন বল ছাড়তে হবে, কোন বলে কী শট খেলা উচিত। এগুলো আমাকে খুব সাহায্য করেছে।
প্র: কোন ক্রিকেটার আপনার প্রিয়? কোনও আইডল?
শ্রেয়স: না তেমন কেউ নেই। তবে সচিন তেন্ডুলকর ও অন্যান্য গ্রেট ক্রিকেটারকে দেখে বড় হয়েছি। ওদের থেকেই প্রেরণা নিই। ২০০৩ বিশ্বকাপের সময় আমার বয়স ছিল আট। ওই সময় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও রাহুল দ্রাবিড়ও আমাকে প্রেরণা জোগাতেন। এখন ডে’ভিলিয়ার্সের ব্যাটিং দেখে মুগ্ধ হয়ে যাই। সব ধরণের শট খেলতে পারে ও! দেখা হলে জিজ্ঞাসা করার ইচ্ছা আছে, আপনি আদৌ মানুষ তো?
প্র: ঘরোয়া ক্রিকেটে আপনার কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট কী?
শ্রেয়স: শিবাজি পার্ক জিমখানার প্রথম ট্রায়ালে আমি সুযোগ পাইনি। পেস বোলার হিসেবে গিয়েছিলাম। পরের বছর ব্যাটিংয়ের জন্য সুযোগ পাই। বুঝলাম ব্যাটিংয়েই আমি ভাল। এতেই মন দিতে হবে। তার পর থেকে সব ট্রায়ালেই— অনূর্ধ্ব ১৪, ১৬, ১৯ সবেতেই ব্যাটিংয়ের জন্যই সুযোগ পাচ্ছিলাম। মুম্বইয়ের হয়ে ইডেনের সেঞ্চুরিটা আমার কেরিয়ারের উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তবে উত্তর প্রদেশের বিরুদ্ধে ইনিংসটা ছিল আসল টার্নিং পয়েন্ট। তার পরই আমরে স্যার আমাকে তিনে নামান।
প্র: ভারতের জার্সি গায়ে মাঠে নামার কথা এখন থেকেই ভাবছেন?
শ্রেয়স: অবশ্যই ওটাই তো আসল স্বপ্ন। খুব খাটছি। ২-৩ বছরের মধ্যে ভারতীয় দলে ডাক পাওয়ার আশায় রয়েছি।
প্র: ক্রিকেট ছাড়া আর কী ভালবাসেন?
শ্রেয়স: ফুটবল। ক্রিকেটার না হলে হয়তো ফুটবলারই হতাম। চেলসি, রিয়াল মাদ্রিদকে সাপোর্ট করি। আমার ফেভারিট জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ। ওর সব কিছু আমার পছন্দ। বিশেষ করে ওর অ্যাটিটিউড। ওর সম্পর্কে কে কী ভাবে, ও সবের পরোয়া করে না। সব কিছুই ওর কাছে সিম্পল। আমিও ওর মতোই হতে চাই। ক্রিকেটের ইব্রাহিমোভিচ হতে চাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy