কলকাতার নতুন পেসার বৈভব অরোরা। ছবি: টুইটার থেকে
চেতেশ্বর পূজারার রক্ষণ ভাঙা কতটা কঠিন, তা প্যাট কামিন্সরাও জানেন। সেই পূজারাকেই বোল্ড করে দিয়েছিলেন বৈভব অরোরা। তাও আবার প্রথম বার প্রথম শ্রেণির ম্যাচে খেলতে নেমে। ২০১৯-২০ মরসুমে রঞ্জি ট্রফিতে সৌরাষ্ট্রর বিরুদ্ধে হিমাচল প্রদেশের পেসার বৈভবের অভিষেক ঘটে। সেই ম্যাচেই পূজারার মিডল স্টাম্প ছিটকে দিয়েছিলেন তিনি।
বৈভবকে ২০ লক্ষ টাকায় এ বারের নিলামে কিনে নেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে ২৩ বছরের এই পেসার নজর কেড়েছিলেন ৬ ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে। হিমাচল প্রদেশকে কোয়ার্টার ফাইনালে তুলতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন বৈভব। সেখানে যদিও তামিলনাড়ুর কাছে ৫ উইকেটে হারতে হয় তাঁদের।
কলকাতা ছাড়াও বৈভবের দিকে নজর ছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং রাজস্থান রয়্যালসের। তাঁকে ট্রায়ালেও ডেকেছিল ওই ২ দল। নিলামে যদিও বৈভবের জন্য অন্য কোনও দল দর ডাকেনি। কোটি টাকার লিগে আপাতত লক্ষপতি বৈভব। এক সময় যদিও অর্থাভাবে ক্রিকেট খেলাই ছেড়ে দেবেন ভেবেছিলেন তিনি।
২০১১ সালে ১৪ বছর বয়সে অম্বলার বাড়ি ছেড়ে চণ্ডীগড় পাড়ি দেন বৈভব ক্রিকেট খেলার জন্য। সেখানকার এক স্কুলে ভর্তি হয়ে চলতে থাকে ক্রিকেটের পাঠ। পঞ্জাবের অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ৩ বার ডাক পেলেও খেলার সুযোগ পাননি তিনি। ২০১৮ সালে চণ্ডীগড় ছেড়ে তিনি চলে আসেন হিমাচল প্রদেশে। পেশাদার ক্রিকেটার হওয়ার দিকে ঝোঁকেন সেই সময়ই। অনূর্ধ্ব-২৩ দলে ৯ ম্যাচে ২৬ উইকেট নিয়ে নজর কাড়েন তিনি। পরের বছরেই সুযোগ আসে হিমাচল প্রদেশের হয়ে রঞ্জি খেলার। প্রথম ম্যাচেই নিয়েছিলেন ৯ উইকেট।
বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে ঘুরে ক্রিকেটার হওয়ার পথে এগিয়ে চললেও খুব মসৃণ ছিল না সেই পথ। বৈভবের কোচ রবি বর্মা বলেন, “২০১৬ সালে আমার কাছে এসে বলেছিল চাকরি খুঁজে দিতে। ওর বাড়ির আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। ঋণে জর্জরিত ছিল ওর বাবা। দুধের ব্যবসা সেই ভাবে চলছিল না ওদের। ক্রিকেট ছেড়ে চাকরি করার কথা ভাবছিল ও। অনেক কষ্ট করে ওকে ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত রাখতে পেরেছিলাম।”
সে দিন কোচের কথা শুনে ক্রিকেটে থেকে যাওয়ার ফল পাচ্ছেন বৈভব। তিনি বলেন, “নিলামের সময় এক মুহূর্তের জন্যও নড়তে পারিনি টিভির সামনে থেকে। খুব চাপ লাগছিল। বৈভব আরোরাকে কেকেআর কিনছে শুনে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের যুগের ক্রিকেটারদের কাছে আইপিএল খেলাটা স্বপ্ন। আইপিএল দেখতে দেখতেই তো বড় হয়েছি আমরা।”
আইপিএলের স্বাদ যে বৈভব এ বারেই প্রথম পাচ্ছেন এমন নয়। কিংস ইলেভেন পঞ্জাব (এখন পঞ্জাব কিংস) দলের নেট বোলার ছিলেন তিনি। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, লোকেশ রাহুলদের বল করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। বৈভব জানান, রাহুল এসে তাঁকে জিজ্ঞেস করেন কোন দলের হয়ে খেলেন তিনি। পঞ্জাব কোচ অনিল কুম্বলে এসেও নাকি জানতে চান তাঁর কথা। বৈভব বলেন, “রাহুল ভাই আমাকে বলেছিল খুব তাড়াতাড়ি আইপিএলে খেলব আমি। ওদের বল করে ভয় কেটে গিয়েছিল আমার।”
আইপিএলে খেলার সুযোগ সত্যিই পেয়ে গিয়েছেন বৈভব। প্যাট কামিন্সের সতীর্থ এখন তিনি। কে জানে হয়তো কিছু বছরের মধ্যেই জাতীয় দলে যশপ্রীত বুমরাদের সঙ্গেও বল হাতে দেখা যাবে তাঁকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy