গুড়ের মিশেলেই এ বারে তৈরি হচ্ছে সীতাভোগ। —নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমানের জনপ্রিয় মিষ্টি ‘ঐতিহাসিক’ সীতাভোগ। কয়েক বছর আগেই তা জিআই ট্যাগ পেয়েছে। জেলার ‘মিষ্টির রাজা’র খ্যাতি এখন জেলা-রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে দেশ জুড়ে। জিভে জল আনা মিষ্টির নাম শোনেননি এমন মানুষের সংখ্যা হাতে গোনা। সেই মিষ্টিতেও এ বারে ফিউশনের ছোঁয়া।
১৯০৪ সালে বড়লাট জর্জ ন্যাথানিয়েল কার্জন বর্ধমানের জমিদার বিজয়চাঁদ মহতাবকে ‘মহারাজা’ খেতাব দিতে বর্ধমান এসেছিলেন। কার্জনের বর্ধমান আগমনকে স্মরণীয় করে রাখতে বিজয়চাঁদ মহতাব বর্ধমানের জনৈক মিষ্টি প্রস্তুতকারক ভৈরবচন্দ্র নাগকে একটি বিশেষ মিষ্টি প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সীতাভোগের সঙ্গে বর্ধমানের অন্যতম প্রসিদ্ধ মিষ্টি মিহিদানা তৈরি করেছিলেন ভৈরবচন্দ্রই । কথিত আছে যে, কার্জন সেই সীতাভোগ খেয়ে এতটাই খুশি হয়েছিলেন যে সমস্ত সরকারি অনুষ্ঠানে তিনি সীতাভোগ পরিবেশন করা বাধ্যতামূলক করেছিলেন। সেই ‘ঐতিহাসিক’ মিষ্টিতেই এ বার নতুনত্বের ছোঁয়া।
শীতের মরসুম মানেই নলেন গুড়। চিনির বদলে সেই গুড়ের মিশেলেই এবারে তৈরি হচ্ছে সীতাভোগ। বর্ধমানের বিসি রোডের বিখ্যাত ‘নেতাজি মিষ্টান্ন ভান্ডার’-এ এসে গিয়েছে নয়া ফিউশন সীতাভোগ। গোবিন্দচন্দ্র নাগ ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের অনুগামী। তাঁর নামেই দোকানের নামকরণ করেছিলেন গোবিন্দ। বর্তমানে দোকানের কর্ণধার গোবিন্দের নাতি সৌমেন দাস। তিনি বলেন, “এ বারের এখনও ভাল নলেন গুড় আসেনি। তবে ঠান্ডা বাড়লে ভাল গুণমানের গুড় আসবে এখানে। তখন আরও বেশি করে ফিউশন সীতাভোগ তৈরি হবে।”
২৮০ থেকে ৩০০ টাকা প্রতি কেজি দামে বিকোচ্ছে নতুনত্বের ছোঁয়া লাগা ‘ঐতিহাসিক’ মিষ্টি। কারিগরেরা জানিয়েছেন, সাদা সীতাভোগ ও এই মিষ্টি একই প্রণালীতে তৈরি হয়। প্রথমে গোবিন্দভোগ চালের গুঁড়োকে ব্যবহার করা হয়। তার পর তা ভেজে তোলা হয় গুড়ের মিশ্রণে। চিনির বদলে গুড় দিয়ে তৈরি এই ফিউশন মিষ্টি রাখা যাবে দু-তিন দিনও। শীতে ফিউশন মিষ্টি যে জনপ্রিয় হবে, তা বলছেন ক্রেতারাও। তবে সাদা সীতাভোগের সঙ্গে ফিউশন মিষ্টির তুলনায় যেতে চান না অনেক মিষ্টিপ্রেমীই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy