শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে বিনেশ, বজরং এবং সাক্ষী। ছবি: পিটিআই
জাতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি ব্রিজভূষণ শরন সিংহের বিরুদ্ধে কুস্তিগিরদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে চলেছে ভারতের অলিম্পিক্স কমিটি (আইওএ)। শুক্রবার জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক ডাকে পি টি ঊষার নেতৃত্বাধীন এই কমিটি। বৈঠকের শেষে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটিতে বাংলার প্রাক্তন অলিম্পিয়ান দোলা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রয়েছেন।
শুক্রবার নয়াদিল্লিতে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে চলে বৈঠক। সেখানে সাত সদস্যের কমিটি তৈরি হয়েছে। দোলা ছাড়াও সেই কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন বক্সিংয়ে ছ’বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মেরি কম, অলকানন্দা অশোক, যোগেশ্বর দত্ত, সহদেব যাদব প্রমুখ। কী ভাবে তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন, তা অবশ্য বিস্তারিত জানানো হয়নি। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, তারা সরাসরি জাতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতির পদ থেকে ব্রিজভূষণকে অপসারণ করতে পারবে না। কারণ তিনি নির্বাচিত আধিকারিক। ফলে ২২ জানুয়ারি সাধারণ সভায় বাকি সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে ব্রিজভূষণকে সরানো হতে পারে।
এর মাঝেই যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন মহিলা কুস্তিগির কবিতা দালাল। তিনি এখন ডব্লিউডব্লিউই-তে অংশগ্রহণ করেন। জানিয়েছেন, নির্যাতনের কারণেই অন্য খেলায় চলে যেতে হয়েছে তাঁকে।
কবিতা নিজে থেকে এগিয়ে এলেও নির্যাতনের শিকার হওয়ার বাকি কোনও কুস্তিগিরের নাম এখনও জানা যায়নি। শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগে বিনেশ ফোগত বলেন, “যদি আমরা নাম বলে দিই তা হলে সেই কুস্তিগির এবং তার পরিবার বিপদে পড়বে। এখনও সরকারি ভাবে কেউ অভিযোগ করেনি। তাই কারওর নাম প্রকাশ্যে বলে দেওয়া উচিত হবে না। আমরা নিজেদের সম্মান রক্ষা করার জন্যেই প্রতিবাদ করতে এসেছি। সেটাই কেড়ে নেওয়া হলে লাভ কী? তাই এ ধরনের গোপন তথ্য আমরা প্রকাশ করতে পারব না।”
অনুরাগের সঙ্গে দেখা করার পর বিনেশ জানান, বৈঠক ভালই হয়েছে। তবে কিছু বিষয়ে এখনও তাঁদের আপত্তি রয়েছে। সেগুলি দ্রুত সমাধান করার জন্যে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
এ দিকে, ব্রিজভূষণের পদত্যাগ নিয়ে শুক্রবার গোটা দিন ধরে টানাপড়েন চলল। শেষ পর্যন্ত সন্ধেয় সাংবাদিকদের দেখে ‘পালিয়ে গেলেন’ ব্রিজভূষণ। সাংবাদিকদের সামনে পাঠিয়ে দিলেন ছেলেকে। ছেলে বললেন, আগামী ২২ জানুয়ারির আগে কিছু বলা হবে না। অর্থাৎ সভাপতি পদে আরও অন্তত ৪৮ ঘণ্টা দেখা যাবে ব্রিজভূষণকে, যদি না মাঝে কিছু ঘটে। উল্লেখ্য, ২২ জানুয়ারি জাতীয় কুস্তি সংস্থার বার্ষিক সাধারণ সভা রয়েছে। তার পরেই ব্রিজভূষণ মুখ খুলতে পারেন।
এ দিনও যন্তরমন্তরের ধর্নায় সারা দিন ধরে বিনেশ ফোগত, বজরং পুনিয়ারা দাবি করেন ব্রিজভূষণের পদত্যাগের। কিন্তু তাঁর দিক থেকে কোনও জবাব আসেনি। প্রথমে বলা হয়, তিনি দুপুর ১২টায় সাংবাদিক সম্মেলন করবেন। পরে তা পিছিয়ে বিকেল ৪টে এবং আরও পিছিয়ে ৫টায় করা হয়। তার আগে জানা যায়, আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে বিকেল ৫.৪০-এ। তাই ৫টাতেও সাংবাদিক সম্মেলন করেননি ব্রিজভূষণ। সবাই ভাবেন, বৈঠকের পরে হয়তো কথা বলবেন। শোনা যায়, ৬টায় সাংবাদিক বৈঠক করবেন। কিন্তু বৈঠক সেরে বেরনোর পর সাংবাদিকদের ক্যামেরার মুখোমুখি হননি। পাঠিয়ে দেন ছেলে রোহিতকে। রোহিত এসে বলেন, ২২ জানুয়ারি মুখ খুলবেন ব্রিজভূষণ। মাঝে তিনি আর কোনও মন্তব্য করতে চান না। তবে পরের দিকে জানা গিয়েছে, জাতীয় কুস্তি সংস্থার তরফে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রককে জবাব দিয়েছেন তিনি। কী বলেছেন তা জানা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy