চল দেখিয়ে দিই। শ্রীলঙ্কা সফরে রওনা হওয়ার আগে কোহলি-ধবন। রবিবার চেন্নাইয়ে। ছবি: পিটিআই।
ফ্ল্যাশব্যাক ২০০৮।
বীরেন্দ্র সহবাগ বনাম অজন্তা মেন্ডিস।
গলে ভারতের ব্যাটসম্যানদের উপর বুলডোজার চালিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার রহস্য স্পিনার। একজনকে অবশ্য বাগে আনতে পারেননি। সহবাগ। ছ’উইকেট পাওয়া মেন্ডিসকে সামলে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন।
জাম্পকাট ২০১৫।
এ বার কিন্তু বীরু নেই। মেন্ডিসও না। কিন্তু বিরাট কোহলি আছেন। তৈরি শ্রীলঙ্কার স্পিনাররাও। আসন্ন টেস্ট সিরিজে লড়াইটা মূলত এই দু’পক্ষেরই। এই যুদ্ধে বীরুর সেই সাত বছর আগের আগ্রাসনটাই ধরে রাখতে চান তাঁর শহরেরই নতুন ভারত অধিনায়ক।
শ্রীলঙ্কায় উড়ে যাওয়ার আগে রবিবার বিরাট কোহলি বলে দিলেন, ‘‘সে রকমই ইচ্ছা আছে। শ্রীলঙ্কায় আগ্রাসী মনোভাব না থাকলে ওদের স্পিনারদের বিরুদ্ধে লড়া যাবে না।’’ কথাটা তাঁর মাথায় যিনি ঢুকিয়েছেন, নাম রাহুল দ্রাবিড়। রাহুল নাকি বিরাটকে পরামর্শ দিয়েছেন, ‘‘শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে বীরুর সেই ইনিংসটা দেখে নিস।’’ দেখেছেন কোহলি। বললেন, ‘‘বীরু পাজি-র ওই ইনিংসটা দেখেই শিখেছি শ্রীলঙ্কায় ঠিক কী রকম খেলা উচিত। আমার বিশ্বাস, সিরিজ চলাকালীন অন্য ব্যাটসম্যানরাও ওর সেই ইনিংসের ভিডিওটা বহু বার দেখবে।’’
মোদ্দা কথাটা হল, শ্রীলঙ্কাকে ছেড়ে কথা বলতে চান না ভারতীয় অধিনায়ক। এবং এই আগ্রাসনে তাঁর সতীর্থরা তাঁর পাশেই আছেন। অজিঙ্ক রাহানে যেমন বলে দিলেন, ‘‘বিরাটের পাশেই আমরা রয়েছি। ওর স্ট্র্যাটেজি অনুসরণ করাটাই আমাদের এই সিরিজে আসল কাজ।’’ আগ্রাসন ধরে রাখতে রোহিত শর্মাকে তিন নম্বরে নামানোর পরিকল্পনা ছকেই শ্রীলঙ্কায় রওনা হচ্ছেন বিরাটরা। ক্যাপ্টেন নিজেই তা জানালেন এ দিন। কিন্তু তিন নম্বরে রোহিত কতটা সাবলীল, সেটাই তো এখনও প্রমাণ করতে পারেননি। মুম্বই ব্যাটসম্যান বলছেন, ‘‘অতীত নিয়ে ভাবছি না। গোটা দশেক টেস্ট খেলেছি। তাতে যে বেশি রান পাইনি, সেটা ঠিকই। তবুও আমার উপর যে ভরসা রাখছে টিম, এটাই বড় কথা। এর যোগ্য জবাব দিতেই হবে।’’ পাশাপাশি নেটে এখন নিয়মিত সুইপ শটের উপর বেশি জোর দিচ্ছেন কোহলি। ‘এ’ দলের ম্যাচেও চেষ্টাটা বারবার করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। স্পিনারদের শায়েস্তা করতে গেলে যে এই শটটা নিখুঁত রপ্ত করতে হবে তাঁকে, তা বুঝে নিয়েছেন বিরাট। প্রসঙ্গটা তুলতে বললেন, ‘‘প্রত্যেকেই যে যার খেলায় উন্নতি করতে চায়। যত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলি, আমার শক্তি-দুর্বলতাগুলো তত সবার মুখস্থ হয়ে যায়। তাই সবসময়ই বাড়তি কিছু না কিছু করতে হয়। এই সিরিজেও তাই আমার আস্তিনে আরও একটা শট রাখতে চাই।’’
তিন ওপেনার যেমন দলে, তেমনই তিন স্পিনারও। তাঁর পূর্বসূরি মহেন্দ্র সিংহ ধোনি বিদেশে পাঁচ বোলার খেলানোর পথে যেতেন না। কোহলি অবশ্য হাঁটতে চান পাঁচ বোলার নিয়েই। যেখানে পাঁচ বোলারের কম্বিনেশন হতে পারে দুই পেসার তিন স্পিনার। এই তিন স্পিনার খেলিয়ে বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের ব্যতিব্যস্ত করে তোলার পরিকল্পনাও রয়েছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের। স্পষ্ট কিছু না বললেও এই নিয়ে হাল্কা ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন ভারত অধিনায়ক, ‘‘কেমন উইকেট পাই দেখি আগে। যদি দেখি স্পিনাররা সাহায্য পাবে, তা হলে তা একশো শতাংশ কাজে লাগানোর চেষ্টা করব। দিনের শেষে বোলিংয়ে ভারসাম্য আনাই শেষ কথা। পাঁচ বোলারে খেলব। তা সে দুই স্পিনারে হোক বা তিনে। তবে কম্বিনেশন যাই হোক স্পিনার ও পেসারদের একে অপরকে সাহায্য করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। সব বোলাররা মিলে বিপক্ষকে সব সময় চাপে রাখতে হবে আমাদের।’’
আগ্রাসনের এমন মন্ত্রেই ঠাসা বিরাট কোহলিদের মিশন শ্রীলঙ্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy