Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
India vs England 2021

পিচ-বিতর্ক উড়িয়ে ‘চেন্নাইয়ের রাজা’ অশ্বিনই, ভারতের জয় এখন সময়ের অপেক্ষা

সাত উইকেট হাতে নিয়ে দু’দিন ধরে ইংরেজরা ব্যাট করে ম্যাচ বাঁচিয়ে দেবে বা জিতবে, এটা অতি অন্ধ ইংরেজ সমর্থকও ভাবতে পারছেন না।

দুরন্ত শতরান করে কিংবদন্তিদের পাশে নাম লেখালেন অশ্বিন।

দুরন্ত শতরান করে কিংবদন্তিদের পাশে নাম লেখালেন অশ্বিন। ছবি টুইটার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:০১
Share: Save:

চেন্নাইয়ের পিচ নাকি ‘জঘন্য’, ‘খেলার পক্ষে অযোগ্য’ এবং ‘টেস্ট ক্রিকেটের জন্য একেবারেই ভাল বিজ্ঞাপন নয়’।

রবিবার ম্যাচ শেষ হওয়ার পর থেকেই এ রকম টিকা-টিপ্পনীতে ভরে উঠেছিল নেটমাধ্যমের দেওয়াল। কে নেই সেখানে, মার্ক ওয় থেকে শেন ওয়ার্ন, মাইকেল ভন থেকে ড্যামিয়েন ফ্লেমিং- প্রত্যেকেই নিজেদের মতো করে মতামত পেশ করেছেন। তৃতীয় দিন যেন সবাইকে চুপ করিয়ে দিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তথাকথিত ‘অফ-স্পিনার’ বুদ্ধিদীপ্ত শতরান করে বুঝিয়ে দিলেন, দোষ শুধু পিচের নয়, ক্রিকেটারদের টেকনিকেরও থাকে! বিদেশিদের পাশাপাশি সতীর্থদের কাছেও তাঁর ইনিংস একটা পরিচ্ছন্ন বার্তা দিল।

দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে অশ্বিনকে পিচের অবস্থা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল। অশ্বিন সাফ জানিয়েছিলেন, যে সব পিচে বাউন্স থাকে এবং বল ঘোরে, সেখানে পিচ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে না কেন? কিন্তু মুখে নয়, ব্যাট হাতে প্রমাণ করা বেশি দরকার ছিল। অশ্বিন ঠিক সেটাই করলেন। ঘরের মাঠে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দিলেন।

দিনের শুরুতে অবশ্য মনে হয়েছিল পিচ নিয়ে যে কথাবার্তা হচ্ছে, তা যৌক্তিক। কয়েক ওভারের ব্যবধানে ভারতের টপ এবং মিডল অর্ডার ধসিয়ে দিলেন দুই ইংরেজ স্পিনার। চেতেশ্বর পূজারা, রোহিত শর্মা, ঋষভ পন্থ, অজিঙ্ক রাহানে যেন এলেন এবং গেলেন। উল্টোদিকে একা দাঁড়িয়ে হতাশ চোখে প্রতিটা ঘটনা দেখছিলেন বিরাট কোহালি।

অন্তত একজনকে দরকার ছিল, যিনি এই ধস সামাল দিতে পারেন। বিরাট সেটা পেলেন ৩৭তম ওভারে, যখন অক্ষর পটেল ফিরলেন। অশ্বিন এসেই যেন আক্রমণাত্মক মেজাজে। পরপর চার মেরে এবং রান নিয়ে স্কোরবোর্ড সচল রাখছিলেন। উল্টোদিকে একা দুর্গ সামাল দিচ্ছিলেন কোহালি। কিন্তু দুশো পেরনোর পরেই ফিরলেন ভারত অধিনায়ক।

এতক্ষণ কোহালি যে ভূমিকা পালন করছিলেন, সেটাই এ বার করতে দেখা গেল অশ্বিনকে। ধীরস্থির ভঙ্গিতে খেলা শুরু করলেন। তাতেও সবটা সামলাতে পারেননি। পরপর কুলদীপ যাদব এবং ইশান্ত শর্মা ফেরাতে এক সময় মনে হয়েছিল তাঁর শতরান হাতছাড়া হল বুঝি!

কিন্তু অটল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেন মহম্মদ সিরাজ। প্রথম ইনিংসে ভুল শট খেলে আউট হয়ে পন্থের বকুনি শুনেছিলেন। অশ্বিনকে শতরান হাতছাড়া হতে দেননি। উল্টে ঘরের ছেলের শতরানের সময় যে ভাবে সিরাজ নিজেই মুষ্টিবদ্ধ হাতে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে উল্লাস করলেন, তাতে মনে হল শতরানটা তিনিই করে ফেলেছেন।

প্রথম টেস্টে ভারতের উপর পাহাড়প্রমাণ রান চাপিয়ে দেওয়ার সময় সমালোচনার মুখে পড়েও জো রুট বলেছিলেন, পন্থ এবং কোহালিকে ভরসা করতে না পেরেই যতটা সম্ভব রান বাড়িয়ে রাখতে চেয়েছিলেন। কোহালিও যেন বিপক্ষ অধিনায়কের কৌশলই নিলেন দ্বিতীয় টেস্টে।

দিনের শেষ দেড় ঘণ্টায় ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড তিন উইকেট হারিয়ে ৫৩ তুলেছে। ক্রিজে জো রুট এবং ড্যান লরেন্স রয়েছেন। কিন্তু সাত উইকেট হাতে নিয়ে দু’দিন ধরে ইংরেজরা ব্যাট করে ম্যাচ বাঁচিয়ে দেবে বা জিতবে, এটা অতি অন্ধ ইংরেজ সমর্থকও ভাবতে পারছেন না। ফলে, কোহালিদের সিরিজে সমতা ফেরানো সময়ের অপেক্ষা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE