Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
শিলিগুড়িতে ডার্বির প্রস্তুতি, যুযুধান তারকার দ্বৈরথের অপেক্ষা

সনিকে আটকে দেব এ বারের ডার্বিতেও

মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলা পছন্দ নয়। হেডফোন লাগিয়ে যখন শিলিগুড়িতে ঢুকলেন তখন একমাত্র তাঁর নামে স্লোগান। ট্রেভর মর্গ্যানের টিমের সেরা অস্ত্র কিন্তু মরিয়া ডার্বি জিততে। ওয়েডসন আনসেলমে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজার-কে।মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলা পছন্দ নয়। হেডফোন লাগিয়ে যখন শিলিগুড়িতে ঢুকলেন তখন একমাত্র তাঁর নামে স্লোগান। ট্রেভর মর্গ্যানের টিমের সেরা অস্ত্র কিন্তু মরিয়া ডার্বি জিততে। ওয়েডসন আনসেলমে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজার-কে।

অস্ত্র: ক্লাব তাঁবুতে লাল-হলুদের তারকা ওয়েডসন। —নিজস্ব চিত্র।

অস্ত্র: ক্লাব তাঁবুতে লাল-হলুদের তারকা ওয়েডসন। —নিজস্ব চিত্র।

রতন চক্রবর্তী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:১৭
Share: Save:

প্রশ্ন: ভারতে আসার পর দ্বিতীয় ডার্বি। আই লিগের প্রথম ডার্বিতে জিততে পারেননি। এ বার জিতবেন?

ওয়েডসন: জিততেই হবে। না জিতলে তো ছিটকে যাব খেতাব থেকে। ড্র করলেও অ্যাডভান্টেজ মোহনবাগান। ওরা আমাদের তুলনায় একটা ম্যাচ কম খেলেছে। আমাদের ২৭ পয়েন্ট। একটা ম্যাচ কম খেলে ওদের ২৬। ডার্বি যে জিতবে, ট্রফি তারই। সে আমরা জিতি বা ওরা। আইজল ট্রফি জিতবে না।

প্রশ্ন: কিন্তু আপনি— ইস্টবেঙ্গলের চালিকাশক্তি নিজেই তো ফিট নন। এখনও কুঁচকির ব্যথায় ভুগছেন...

ওয়েডসন: তেরো বছর আই লিগ পায়নি ইস্টবেঙ্গল। সেটা জেতানোর জন্যই এখানে আসা। ডার্বি জিতলে কেউ আমাদের আটকাতে পারবে না। এক পা নিয়ে হলেও খেলব রবিবার। চোট নিয়ে ভাবছিই না।

প্রশ্ন: আপনি শেষ তিনটে ম্যাচ খেলেননি। দু’টোতে হেরেছে ইস্টবেঙ্গল! তা হলে কি শুধু ওয়েডসনের ওপর পুরো টিম দাঁড়িয়ে?

ওয়েডসন: এই দুটো হার একেবারেই প্রত্যাশিত ছিল না। ইস্টবেঙ্গলের কাছ থেকে এটা প্রত্যাশিত নয়। কেন যে বেঙ্গালুরু ম্যাচটায় চোট পেলাম! জিতে থাকলে লিগ টেবলে কোথায় থাকতাম বলুন তো। ওভাবে কেউ গোল খায়!

প্রশ্ন: পরপর দুটো ম্যাচ জিতে মোহনবাগান দুর্দান্ত ফর্মে। তাদের বিরুদ্ধে ডার্বি জেতার স্বপ্ন দেখছেন?

ওয়েডসন: এটা ঠিক যে, পরপর দু’টো ম্যাচ সহজে জিতে যাওয়ায় মোহনবাগানের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। জেতার অভ্যাসটা তৈরি করে ফেলেছে ওরা। যে সুযোগটা আমরা পেলাম না। আমাদের কয়েকটা ম্যাচ খেলা থাকলে ভাল হতো।

প্রশ্ন: আপনার বন্ধু সনি নর্দে দুর্দান্ত ফর্মে। গোল করাচ্ছেন, গোল করছেন। সনিকে আটকানোর ক্ষমতা আছে আপনাদের?

ওয়েডসন: সনি মাঠের বাইরে আমার সবথেকে কাছের বন্ধু। কিন্তু ডার্বিতে আমার বড় শত্রু। শিলিগুড়িতে গতবারও ওকে খেলতে দিইনি, এ বারও দেব না। কিন্তু আমার মতে সনির চেয়েও কাতসুমি বেশি বিপজ্জনক। বেশি ভয়ঙ্কর।

প্রশ্ন: সনির চেয়ে কাতসুমি বেশি ভয়ঙ্কর?

ওয়েডসন: সচেতন ভাবেই বলছি এটা। কারণ শুধু গোল করা নয়, কাতসুমি রক্ষণটাও সামলায়। আমি এ রকম পরিশ্রমী আর ক্লান্তিহীন ফুটবলার জীবনে দেখিনি। সারাক্ষণ লড়ে যায়।

প্রশ্ন: সনি তো হাইতি লিগে কখনও খেলেননি। আপনি বহু বছর খেলেছেন? কখনও ওখানে এখানকার মতো ডার্বির আবহাওয়া পেয়েছেন?

ওয়েডসন: না। এখানকার ডার্বি হল বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ যুদ্ধের মতো। কয়েক মাসে এটা বুঝে গিয়েছি, ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের সব আবেগ ডার্বিতে। আই লিগ না পেয়ে ডার্বি জিতলেও ওরা খুশি। খেতাবের চেয়েও মোহনবাগানকে হারানোটা ওদের বেশি আনন্দ দেয়।

প্রশ্ন: সবাই বলছে লড়াইটা হাইতি বনাম হাইতি। সনি বনাম আপনার?

ওয়েডসন: সনির বিরুদ্ধে ভারতে এসেই প্রথম খেলছি। এর আগে বাংলাদেশে একই টিমে খেলতাম। তার আগে আমাদের মধ্যে কোনও পরিচয় বা বন্ধুত্ব ছিল না। কিন্তু ফুটবলে লড়াই কখনও এক জনের বিরুদ্ধে এক জনের হয় না। আবার বলছি, মোহনবাগানে কাতসুমিকে আটকাতে যেভাবে ট্যাকল করি, শক্তি প্রয়োগ করি, সনির জন্য সেটাই বরাদ্দ থাকবে রবিবার।

প্রশ্ন: সেদিন হঠাৎ মোহনবাগান মাঠে চলে গিয়েছিলেন, পরের বার কি আপনি সবুজ মেরুন জার্সিতে?

ওয়েডসন: বোগাস। আই ডোন্ট কেয়ার। আরে সনি-ই তো আমাকে ডেকেছিল ওদের মাঠে। একসঙ্গে বাড়ি ফিরবে। কিছু আলোচনা ছিল। সে জন্যই গিয়েছিলাম। পরে ও বলল জিম করছে, ম্যাসাজ নিচ্ছে। দেরি হবে। আমি চলে এলাম বাড়িতে। তাতে যা হল! আরে, ইস্টবেঙ্গলে সই করার আগে তো সনির সঙ্গেই পরামর্শ করেছিলাম। কখনও বলেনি আমার টিমে এসো।

প্রশ্ন: মোহনবাগানের শক্তি কী?

ওয়েডসন: ওদের আসল শক্তি একসঙ্গে তিন বছর থাকা। সবাই সবাইকে জানে। যা আমাদের নেই।

প্রশ্ন: ১১ ম্যাচে ৬ গোল। তা-ও মাঝমাঠ থেকে। ডার্বিতে কি আরও একটা গোল করার স্বপ্ন দেখছেন?

ওয়েডসন: স্বপ্ন তো সবার থাকেই। আমারও আছে। চেষ্টাও করব। শুনেছি ডার্বিতে গোল করলেই নাকি এখানে তারকা হয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু আমি নিজের গোলের চেয়েও টিমের জেতায় বিশ্বাসী। জিততেই হবে। না হলেই তো লিগ হাতছাড়া!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE