উইকেট নেওয়ার পর তাসকিনকে শুভেচ্ছা সাকিবের। ছবি: এএফপি।
২০১৩ সালের স্মৃতি কি ফিরবে এবারের গলে? সময়ই বলে দেবে। তবে গল টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই তামিম ইকবাল-সৌম্য সরকার বাংলাদেশকে এনে দিয়েছেন দুর্দান্ত এক শুরু। তামিমের রানআউট হওয়ার আগে ওপেনিং জুটিতে এসেছে ১১৮ রান। টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওপেনিং জুটিতে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। এই জুটির সৌজন্যে গল টেস্টের দ্বিতীয় দিনটা বাংলাদেশ শেষ করেছে ২ উইকেটে ১৩৩ রানে।
আগের রেকর্ডটির সঙ্গেও জড়িয়ে আছে তামিমের নাম। সেবার তাঁর সঙ্গি ছিলেন জহুরুল ইসলাম। ২০১৩ সালের মার্চে কলম্বোর প্রেমাদাসায় তামিম-জহুরুলের ওপেনিং জুটিতে উঠেছিল ৯১ রান। তাঁরা টপকেছিলেন ২০০৭ সালের জুনে করা শাহরিয়ার নাফীস-জাভেদ ওমরের ৮৬ রানের জুটিকে। সেটিও এসেছিল শ্রীলঙ্কাতেই। মজার ব্যাপার হলো, ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের তিনটি সেরা জুটিই শ্রীলঙ্কার মাটিতে।
বাংলাদেশ যে ওপেনিংয়ে শতরানের খুব বেশি জুটি পেয়েছে, তাও নয়। সব মিলিয়ে এটি মাত্র সপ্তম শতরানের উদ্বোধনী জুটি। সর্বশেষ শতরানের ওপেনিং জুটিও প্রায় দুই বছর আগে। ২০১৫ সালে খুলনা টেস্টে তামিম-ইমরুলের ৩১২ রানের পর এই প্রথম ওপেনিং জুটিতে শতরানের এল বাংলাদেশের। দলের প্রথম ইনিংসে যেকোনো দলের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি।
তামিম-সৌম্য দুজনই অবশ্য একবার করে সুযোগ পেয়েছেন। সুরঙ্গা লাকমালের বলে গালিতে ক্যাচ তুলে দেন সৌম্য। কিন্তু বলটা হাতে জমাতে পারেননি পেরেরা। সৌম্যর রান তখন ৪। দিলরুয়ান পেরেরার বলে ২৮ রানে ‘জীবন’ পান তামিম। সুযোগটা আরও কাজে লাগানোর সুযোগ ছিল তামিমের। কিন্তু অদ্ভুত আউটে বেশি দূর এগোতে পারলেন না বাঁহাতি ওপেনার।
লক্ষ্মণ সান্দাকানের বলটা কট বিহাইন্ডের আবেদন করেন ডিকভেলা। আবেদন শুনেই তামিমের বোঝা উচিত ছিল বলটা উইকেটকিপারের গ্লাভসে। কিন্তু সেটি আন্দাজই করতে পারলেন না তামিম! অহেতুক দৌড় শুরু করলেন বাংলাদেশের ওপেনার। রান আউটে কাটা পড়ে ৫৭ রানে দারুণ ইনিংসটার অপমৃত্যু। সৌম্য অপরাজিত ৬৬ রানে। তামিমের পর ৭ রান করে এলবিডব্লু হয়ে ফিরেছেন মুমিনুল হক।
আরও খবর: ‘নো’ বলে বেঁচে যাওয়া সেই মেন্ডিসই ভোগালো বাংলাদেশেকে
এর আগে দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনেই শ্রীলঙ্কা দলকে গুটিয়ে দিয়েছেন মিরাজ-মুস্তাফিজরা। প্রথম ইনিংস শেষে লঙ্কানদের সংগ্রহ ৪৯৪ রান।
দিনের প্রথম সেশনে দ্রুতই লঙ্কানদের দুটি উইকেট তুলে নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। লাঞ্চের পর রঙ্গনা হেরাথকে আউট করেন মুস্তাফিজ। আজ দিনের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন কুশল মেন্ডিস। মিরাজের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লংঅনে তামিমের দুর্দান্ত ক্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন এই ব্যাটসম্যান। ২৮৫ বলে ১৯৪ রান করেন কুশল মেন্ডিস। ১৯ চার ও চারটি বিশাল ছয়ের মার ছিল এই ব্যাটসম্যানের ইনিংসে।
এরপর গত দিনের অপর অপরাজিত ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকওয়েল্লাকেও ফেরান বাংলাদেশি অফস্পিনার। মিরাজের বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ডিকওয়েল্লা। ৭৬ বলে ছয়টি চার ও এক ছয়ে ৭৫ রান করেন বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান। লাঞ্চ থেকে ফিরে রঙ্গনা হেরাথকে ফিরিয়ে দেন কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। ১৯ বলে ১৪ রান করে আউট হন লঙ্কান অধিনায়ক। হেরাথ আউট হওয়ার পর লাকমালকে রান আউট করেন মুস্তাফিজ। মিরাজের বলে লেগ বিফোর হয়ে আউট হন দিলরুয়ান পেরেরা। ৭৭ বলে ৫১ রান করেন দিলরুয়ান।
শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে সান্দাকানকে ফিরিয়ে দেন সাকিব আল হাসান। মিড অফে অসাধারণ এক ক্যাচ ধরেন মিরাজ।
বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে মেহেদি হাসান মিরাজ চারটি উইকেট নেন। এ ছাড়া মুস্তাফিজ দুটি, তাসকিন, শুভাশিস ও সাকিব নেন একটি করে উইকেট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy