Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

দ্যুতিকে গোলের বল বাড়িয়ে তৃপ্ত পস্টিগা

ম্যাচ শেষে কলকাতার হৃদয় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আফশোস করছিলেন। তবে সেটা ম্যাচ ড্র করার জন্য নয়। কলকাতার ‘প্রিন্স’ বলছিলেন, ‘‘আরে দর্শক কোথায়? গান বাজছে না! ফুটবল-বিনোদনে লোকে গা ভাসাবে তার মশলা কোথায়?’’ রবীন্দ্র সরোবরে খেলা শেষে চেন্নাই কোচ মার্কো মাতেরাজ্জিও খুঁজছিলেন যুবভারতীকে।

পস্টিগা-দ্যুতি। যে জুটির সৌজন্যে এক সময় এগিয়ে গিয়েছিল এটিকে। ছবি: উৎপল সরকার

পস্টিগা-দ্যুতি। যে জুটির সৌজন্যে এক সময় এগিয়ে গিয়েছিল এটিকে। ছবি: উৎপল সরকার

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ও সোহম দে
শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:১৭
Share: Save:

ম্যাচ শেষে কলকাতার হৃদয় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আফশোস করছিলেন। তবে সেটা ম্যাচ ড্র করার জন্য নয়।

কলকাতার ‘প্রিন্স’ বলছিলেন, ‘‘আরে দর্শক কোথায়? গান বাজছে না! ফুটবল-বিনোদনে লোকে গা ভাসাবে তার মশলা কোথায়?’’

রবীন্দ্র সরোবরে খেলা শেষে চেন্নাই কোচ মার্কো মাতেরাজ্জিও খুঁজছিলেন যুবভারতীকে। সাংবাদিক সম্মেলনে বিস্ফারিত চোখে বলেই বসলেন, ‘‘আরে যুবভারতীর দর্শকগুলো গেল কোথায়? খুব মিস করছি স্টেডিয়ামটাকে।’’

কিন্তু মার্কোর মালিক অভিষেক বচ্চন কোনও বিতর্কে ঢুকতে নারাজ। তিন বছরেও কলকাতা থেকে জিতে ফিরতে পারলেন না তিনি। তা সত্ত্বেও অভিষেকের উল্টো সুর, ‘‘কলকাতা ফুটবলের মক্কা। দশ হাজার লোক কী রকম চিৎকার করল দেখলেন? আর আপনারা তো অপরাজিতই রয়ে গেলেন হোম ম্যাচে।’’ আর শেষ বেলায় পেনাল্টিটা? এ বার মুহূর্তে বদলে যায় চেন্নাইয়ের অন্যতম টিম মালিকের মুখের ভূগোল। পার্কিং লটের দিকে হাঁটা দেন হনহন করে।

যদিও চেন্নাই যখন ২-১ এগিয়ে তখন বিগ বি পুত্রের আনন্দ দেখে কে? পাশে বসা চিত্র পরিচালক সুজিত সরকারকে জড়িয়ে আকাশের দিকে মুঠিবদ্ধ হাত ছুড়লেন। উল্টো দিকে তখন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বসে অভিনেতা প্রসেনজিৎ। যিনি বিরতির সময় ছেলে তৃষাণজিতের কাছ থেকে ম্যাচের ফল জানার ফোন পেয়ে তড়িঘড়ি মাঠে হাজির। কলকাতা ২-২ করতেই ছেলেকে তাঁর ফোন বার্তা, ‘‘তোর টিম হারেনি রে! হিউম ২-২ করে ফেলল।’’ সৌরভ-প্রসেনজিতের মুখে তখন হাইভোল্টেজ হাসি। যদিও মাঠে হাজির ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ভক্ত সৌরভ কন্যা সানার মুখ বিষণ্ণ। ‘‘আজ ম্যান ইউনাইটেড ড্র করল। কলকাতাও...।’’

এ রকম দিনে আগে আটলেটিকো কোচ হাবাসের মুখ রাগে থমথমে থাকত। যার রেশ ছড়াত সাংবাদিক সম্মেলনে। কিন্তু নতুন মরসুমে এটিকের নয়া কোচ জোসে মলিনা সম্পূর্ণ অন্য মেজাজে দেখা দিলেন ম্যাচের পর। হাল্কা মেজাজে বলছিলেন, ‘‘আমি দলের খেলায় খুশি।’’ এগিয়ে গিয়েও জেজেদের দাপটে প্রায় হেরে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছিল এ দিন কলকাতা রক্ষণ। রক্ষণের ভুলে দুটো বিশ্রী গোল হজম করে প্রথম ম্যাচেই ঠকঠকানি ফিরিয়ে এনেছিল তাঁর টিম। সে প্রসঙ্গ উঠলেও কলকাতা কোচ শান্ত। ‘‘গোলগুলো দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু রক্ষণের ঘাড়ে দোষ চাপাব না। ভুলগুলো শুধরে নিতে হবে দ্রুত।’’

বরং মাতেরাজ্জি অনেক বেশি গুরুগম্ভীর। তাঁর সাফ কথা, ‘‘গত বারের চ্যাম্পিয়ন বলে আলাদা কোনও চাপে থাকব কেন? জেতা ম্যাচ ড্র করে ফিরলাম।’’

গত বছর এই ম্যাচেই চেন্নাইতে জোড়া গোল করার পর আইএসএল অভিযান শেষ হয়ে গিয়েছিল কলকাতার মার্কি হেল্ডার পস্টিগার। এ দিন গোল না করলেও দ্যুতিকে ঠিকানা লেখা ক্রস পাঠিয়ে গোলও করালেন। টিম বাসে ওঠার আগে বলে গেলেন, ‘‘দ্যুতি মাথা ঠাণ্ডা রেখে কাজের কাজটা করেছে। আর গোলের ওই বলটা বাড়িয়ে আমিও অসম্ভব তৃপ্ত।’’ আর এ মরসুমে এটিকের গোলের খাতা যিনি খুললেন সেই দ্যুতি? দক্ষিণ আফ্রিকান মিডিওর প্রতিক্রিয়া, ‘‘পস্টিগার বাড়ানো বলটা কিন্তু ফ্যাবিউলাস!’’

প্রেস এনক্লোজারের পাশে বসে খেলা দেখে গেলেন ইস্টবেঙ্গলের ডু ডং। ভক্তদের সঙ্গে সেলফিও তুললেন দেদার। বান্ধবীকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দিনের সেরা উদ্ধৃতিটা তাঁরই। ‘‘হিউম কিন্তু ফের গোল করা শুরু করে দিল।’’

অন্য বিষয়গুলি:

ISL Atletico De Kolkata Dutti Helder Postiga
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE