আশা: হরমনপ্রীতদের নিয়ে চলছে স্বপ্ন দেখার পালা। ফাইল চিত্র
বছর দেড়েক আগে মেয়েদের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাইনালের আগে উৎকণ্ঠায় সারা রাত ঘুমোতে পারেননি ভুল্লার পরিবার। কাকভোরেই গ্রামের গুরুদ্বারে প্রার্থনা করতে ছুটেছিলেন ভারতীয় দলের তারকা হরমনপ্রীত কৌরের বাবা হরমন্দর সিংহ ভুল্লার। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৯ রানে হেরে বিশ্বকাপ জয় অধরা থেকে যায়।
সেই ইংল্যান্ডই শুক্রবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ। অথচ এ বার কোনও উদ্বেগ নেই হরমন্দরের! বুধবার বিকেলে পঞ্জাবের মোগা জেলা থেকে ফোনে হরমনপ্রীতের বাবা বলছিলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত, ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ভারত ফাইনালে উঠবেই। এ বার কেউ আটকাতে পারবে না হরমনপ্রীতদের।’’
এতটা আত্মবিশ্বাসী হওয়ার কারণ? হরমন্দর বলছিলেন, ‘‘ইংল্যান্ডকে যে ওদের ঘরের মাঠে হারানো সহজ নয়, জানতাম। এ বার পরিস্থিতি আলাদা। খেলাটা ওয়েস্ট ইন্ডিজে। তাই অঘটন না ঘটলে জিতবই। তাই আর রাত জেগে কাটাব না।’’ হরমনপ্রীতের মা সতীন্দর কৌর যদিও প্রচণ্ড উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই ব্যাটে ঝড় তুলেছিলেন হরমনপ্রীত। ৫১ বলে ১০৩ রান করে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে জিতিয়েছিলেন ভারতকে। কিন্তু তার পরে আর বিধ্বংসী মেজাজে পাওয়া যায়নি ভারত অধিনায়ককে। দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপরাজিত ছিলেন ১৪ রানে। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে করেন ৭। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে অবশ্য ২৭ বলে ৪৩ রান করেন। হরমন্দর চিন্তিত নন মেয়ের পারফরম্যান্স নিয়ে। তাঁর কথায়, ‘‘সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, ভারতের জয়। তা ছাড়া একা হরমনপ্রীত নয়, ভারতীয় দলের সবাই তো আমার মেয়ে।’’ এর পরেই তিনি যোগ করেন, ‘‘বিশ্বকাপের জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেছে ও। অক্টোবর মাসে মাত্র এক দিনের জন্য বাড়িতে এসেও ভাইকে নিয়ে মাঠে চলে গিয়েছিল অনুশীলন করতে। দেখবেন, ও ঠিক সময় মতো জ্বলে উঠবে।’’ উদ্বিগ্ন না হলেও আজ, বৃহস্পতিবার ভোরে ঘুম থেকে উঠেই গুরুদ্বারে প্রার্থনা করতে যাবেন হরমন্দর। বলছিলেন, ‘‘প্রার্থনা করব, ভারত বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই যেন দেশে ফিরতে পারে।’’
ভারত বিশ্বসেরা হলে কী ভাবে উৎসব করবেন, তা-ও ইতিমধ্যে ঠিক করে ফেলেছেন হরমন্দর। বলছিলেন, ‘‘গ্রামের সকলের সঙ্গে বসেই ম্যাচগুলো দেখছি। ভারতের জয়ের পরে গ্রামবাসীরা বাজি ফাটিয়েছেন, ভাংড়া নেচেছেন। তবে আমি ঠিক করেছি চ্যাম্পিয়ন হলেই ভাংড়া নাচব।’’ যোগ করলেন, ‘‘হরমনপ্রীত ভেন্ডি খেতে খুব ভালবাসে। বিশ্বকাপ জিতে বাড়ি ফিরলে মেয়ের জন্য ভেন্ডির নানা ধরনের পদ রান্না করবে আমার স্ত্রী।’’
তবে হরমন্দরের একটু মন খারাপ। বেশ কয়েক দিন মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। বলেও ফেললেন সে কথা, ‘‘দু’-তিন দিন ফোন করেনি হরমনপ্রীত। মনে হয়, সেমিফাইনালের জন্য মনঃসংযোগ করছে। তবে বাইরে খেলতে গেলে ম্যাচের আগে ও ফোন করবেই। আশা করছি, এ বারও তার ব্যতিক্রম হবে না।’’ মেয়ে ফোন করলে কী বলবেন? গম্ভীর হয়ে গেল হরমন্দরের গলা। তার পরেই জবাব, ‘‘বলব, গত বছর বিশ্বকাপ ফাইনালে হারটা নিশ্চয়ই ভুলে যাওনি? এ বার ইংল্যান্ডকে হারিয়ে তার বদলা নাও!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy