অনবদ্য ক্যাচ ধরার পর হার্দিক পাণ্ড্য।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ‘ফার্স্ট বয়’-নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচটা ছিল ‘ফিফথ বয়’ ভারতের। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচে নিউজিল্যান্ড কখনও হারেনি ভারতের কাছে। তাই একটা উত্তেজনা ছিল আজ কী হয় তা দেখার জন্য। কিন্তু ফিরোজ শাহ কোটলায় দেখা গেল, ভারতের বিরুদ্ধে কেন উইলিয়ামসনের দল ব্যাটিং, বোলিং বা ফিল্ডিং—কোনওটাতেই দাগ কাটতে না পেরে হেরে বসল ৫৩ রানে।
উল্টো দিকে, ঠিকরে বেরিয়ে এল ভারতীয়দের ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স। ব্যাটিংয়ের সময় শিখর ধবন (৮০), রোহিত শর্মা (৮০)। আর বোলিংয়ের সময় অক্ষর পটেল (২-২০), যুজবেন্দ্র চহাল (২-২৬) ছিনিয়ে আনল নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ভারতের প্রথম জয়।
ম্যাচটা আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে দু’জনের জন্য। প্রথম জন, অবশ্যই আশিস নেহরা। এ দিন ছিল ওর বিদায়ী ম্যাচ। আর দ্বিতীয় জন, হার্দিক পাণ্ড্য। এ দিন বছরের সেরা ক্যাচটাই নিতে দেখলাম ওকে। হার্দিক পাণ্ড্য-র অনবদ্য কাচের প্রসঙ্গে পরে আসছি। তার আগে বলি ‘নেহরাজি’-র কথা। দিল্লিতে এই নামেই ডাকা হয় আশিস নেহরাকে। এ দিন কোটলা দেখল সেই নেহরাজি-র ‘আলবিদা’ ম্যাচ। ম্যাচ জিতে কোটলার অভিবাদন নিয়ে আশিস নেহরা যখন মাঠ ছাড়ছে, তখন দেখা গেল দিল্লিওয়ালা দুই ক্রিকেটার বিরাট কোহালি ও শিখর ধবন নেহরাকে কাঁধে তুলে নিয়েছে। এদিন, বল করার সময় থ্রি-কোয়ার্টার লাইনে অফস্টাম্পের বাইরে বলগুলো রাখছিল নেহরা। তাই ওকে কেউ মারতে পারেনি। যা বোলার হিসেবে ওর বুদ্ধিমত্তার ছাপ রেখেছে। খুব ভাল লাগত, আজ যদি একটা উইকেট ওর নামের পাশে লেখা থাকত। যদিও তাতে ভারতীয় ক্রিকেটে নেহরার অবদান একটুও মলিন হবে না।
আরও পড়ুন: ৫৩ রানে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথম টি২০ জিতল ভারত
ম্যাচটা দেখতে বসে ১৯৮৩-র বিশ্বকাপ ফাইনালে ভিভিয়ান রিচার্ডসের ক্যাচটা মনে পড়ে যাচ্ছিল। যদিও মদনলালের বলে কপিল দেব সেদিন কুড়ি গজ দৌড়ে মিড উইকেটে ক্যাচটা ধরেছিল। আর কোটলায় হার্দিক ক্যাচটা ধরল লং অফ থেকে লং অনে প্রায় পনেরো গজ দৌড়ে এসে। যুজবেন্দ্র চহালের বলে গাপ্টিলের (৪) ক্যাচটা যে ভাবে হার্দিক ধরল সেটা ২০১৭-র সেরা ক্যাচ। ক্যাচটা নেওয়ার সময় লং অফ থেকে লং অনে দৌড়ে যাওয়াই নয়। তার পরে দুরন্ত ডাইভ। সঙ্গে সঠিক জায়গায় হাতটা রেখে দেওয়া। শিশিরে ভেজা মাঠে ক্যাচ ধরার সময় গ্রিপটাও ঠিকঠাক ছিল ওর।
এখনকার ক্রিকেট ইয়ো ইয়ো ফিটনেস-এর যুগের। ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি তাই প্রথম দিন থেকেই এই ব্যাপারটায় জোর দিয়েছে। আইপিএল-এর সৌজন্যে আমাদের দেশের ক্রিকেটে একটা উপকার অবশ্যই হয়েছে। তা হল ফিল্ডিংয়ের বৈপ্লবিক পরিবর্তন। যদিও ও রকম একটা অনবদ্য ক্যাচ ধরার মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই একদম লোপ্পা ক্যাচ মিস করল হার্দিক। এটা ক্রিকেটেই সম্ভব।
উল্টো দিকে, এ দিন ভারতের ইনিংস চলার সময় মিচেল স্যান্টনার, মার্টিন গাপ্টিলরা যে রকম একের পর এক ক্যাচ মিস করল। শিশির পড়বে ভেবেই হয়তো টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু তাদের ফিল্ডাররা একাধিক ক্যাচ মিস করায়এ দিন ভারতের রান একসময় বিনা উইকেটে ১৫৮ হয়ে গিয়েছিল। আর ওখানেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় নিউজিল্যান্ড। আর ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং শিখর ধবন সেই সুযোগ হাতছাড়া করেনি।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৭০-১৮০ জয়ের রান। ২০ ওভারে ২০২ রান তুলে ভারত শুরুতেই ছিটকে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ডে। নিউজিল্যান্ড এ দিন গোটা ম্যাচে মাত্র দু’ওভার ভাল বল করেছে। শুরুতে স্যান্টনার-এর প্রথম ওভার। আর সতেরো তম ওভারে ইশ সোধির ওভার। ভারত তখন কোটলার বাইশ গজে ব্যাটিং তাণ্ডব চালাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy