কুইনস গ্যাম্বিট নিয়ে কী বললেন বাঙালি গ্র্যান্ডমাস্টার ফাইল চিত্র
‘কুইনস গ্যাম্বিট’, বা রানির প্যাঁচ। দাবায় বহুল ব্যবহৃত এই ওপেনিং (দাবা খেলা শুরুর পদ্ধতি) নিয়ে ধাঁধার সমাধান দিয়েছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার অব ম্যাথেমেটিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশন’-এর গণিতজ্ঞ মাইকেল সিমকিন। পরস্পরকে আক্রমণ না করে দাবার বোর্ডের ৮টি মন্ত্রী কত ঘর এগতে পারবে তার একটি ফর্মুলা বার করেছেন তিনি। অঙ্কের ফর্মুলায় এই সমাধান সম্ভব হলেও বোর্ডে সে ভাবে তা ব্যবহার করা যায় না বলেই জানালেন ভারতের দ্বিতীয় তথা বাংলার প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া।
এই বিষয়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে দিব্যেন্দু বললেন, ‘‘আপনাদের লেখাতেই পড়লাম এক গণিতজ্ঞ একটি ফর্মুলার মাধ্যমে এই ধাঁধার সমাধান করেছেন। অঙ্কের ফর্মুলায় হয়তো সেটি ঠিক, কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব নয়। কারণ ফর্মুলায় তিনি ১০০০ খোপের বা অসীম দাবা বোর্ডের কথা বলেছেন। বাস্তবে খেলা হয় ৬৪ খোপে। তাত্ত্বিকভাবে মোট ৯টি (৮টি বোড়ে ও ১টি মন্ত্রী) মন্ত্রী নিয়ে শুরু করা গেলেও বাস্তবে একটিই মন্ত্রী থাকে। হ্যাঁ, পরে হয়তো বোড়ে (পন)-কে শেষ পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে প্রোমোশনের মাধ্যমে মন্ত্রী বাড়ানো যায়। কিন্তু সেটা এক বা দু’বারের বেশি সম্ভব নয়।’’
‘কুইনস গ্যাম্বিট’ নামে রয়েছে একটি উপন্যাস। তা সম্প্রতি ‘ওয়েব সিরিজ’ হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা কুড়িয়েছে। এই জনপ্রিয়তার কারণেই এই পদ্ধতি নিয়ে ফের এত আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দিব্যেন্দু। তিনি বললেন, ‘‘দাবার বোর্ডে সব থেকে শক্তিশালী হল মন্ত্রী। তাই তার উপর খেলা অনেকটাই নির্ভর করে। সেই কারণেই প্রোমোশন করিয়ে মন্ত্রী নেওয়ার চেষ্টা করেন বেশির ভাগ দাবাড়ু। তবে সেটা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খুব কম হয়। কারণ বিপক্ষ নজরে রাখবে সেটা যাতে না হয়।’’
দাবা শেখার সময় বাচ্চাদের এই ধরনের পরীক্ষার সামনে ফেলা হয়। তাদের বলা হয় ৬৪ খোপে কত রকম ভাবে মন্ত্রীদের সাজানো যাবে যাতে কেউ কাউকে আক্রমণ না করে এগতে পারে। তাঁদেরও এই পরীক্ষার মুখে ফেলা হত বলে জানিয়েছেন বাঙালি গ্র্যান্ডমাস্টার। সাধারণত সবাই দু-তিন ভাবে সাজাতে পারলেও বাস্তবে খেলার ক্ষেত্রে সেটার প্রয়োজন পড়ে না বলে জানিয়েছেন তিনি। দিব্যেন্দুর কথায়, ‘‘অঙ্কের মাধ্যমে ধাঁধার সমাধান কেউ করতেই পারেন। কিন্তু যখন বাস্তবে খেলা হয় তখন তা সম্পূর্ণ অন্য রকম। বাস্তবে ৬৪ খোপে কে কী ভাবে মাত দেবে সে দিকেই নজর রাখে। বিপক্ষের বোড়ে, গজ খাওয়ার চেষ্টা করে। তখন কেউ অন্য ফর্মুলার কথা ভাবতে পারে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy