চ্যাম্পিয়ন: উইম্বলডনের সেন্টার কোর্টে স্প্যানিশ দাপটের দিন।
উইম্বলডনে কোর্টে নামার আগে নিয়মিত এক বার বোর্ডটার সামনে দাঁড়াতেন তিনি। যেখানে একের পর এক লেখা আছে উইম্বলডন চ্যাম্পিয়নদের নাম। কল্পনা করার চেষ্টা করতেন, এক দিন এই বোর্ডে জ্বলজ্বল করবে তাঁর নামটাও।
গারবিনে মুগুরুজার কল্পনা আর কল্পনা নেই। শনিবারের পরে সত্যিই উইম্বলডন চ্যাম্পিয়নশিপের বোর্ডে উঠে গেল তাঁর নাম।
দু’বছর আগে এক উইলিয়ামসের কাছে হেরে গিয়েছিলেন মুগুরুজা। এ বার আর সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দিলেন না। আর এক উইলিয়ামসকে হারিয়ে জিতে নিলেন নিজের প্রথম উইম্বলডন। দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম।
২০১৫ সালে উইম্বলডন ফাইনালে হেরে গিয়েছিলেন সেরিনা উইলিয়ামসের কাছে। আর ২০১৭ সালে এসে ভিনাস উইলিয়ামসকে হারিয়ে সেন্টার কোর্টে ট্রফি তুললেন সেই মুগুরুজা। জিতলেন ৭-৫, ৬-০।
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে তেইশ বছরের স্প্যানিশ তারকা বলেছেন, ‘‘আমি যখন ছোট ছিলাম, টিভি-তে এই সব ফাইনাল দেখতাম। আমি ভিনাসের খেলাও দেখেছি। আর এখন ওর বিরুদ্ধে খেললাম। ভাবলেই কেমন বিস্ময়কর লাগছে।’’
প্রথম সেটে একটা সময় কিন্তু দু’টো সেট পয়েন্ট পেয়েছিলেন ভিনাস। কিন্তু তিনি সেটা কাজে লাগাতে পারেননি। সেখান থেকেই ম্যাচটা ধরে নেন মুগুরুজা। স্প্যানিশ তরুণী প্রথম ব্রেক পয়েন্টটা বাঁচান একটা লম্বা র্যালির পরে। আর দ্বিতীয় পয়েন্টটা বাঁচে যখন ভিনাস একটা রিটার্ন বাইরে মেরে বসেন।
ভিনাস উইলিয়ামসকে হারিয়ে গারবিনে মুগুরুজার উচ্ছ্বাস।
ফাইনালের পরে লকাররুমে দেখা যায় দুই স্প্যানিশ কন্যা একে অন্যকে জড়িয়ে ধরছেন। এক জন কনচিতা মার্টিনেজ। অন্য জন অবশ্যই মুগুরুজা। উইম্বলডনে বয়স্কতম যে মেয়ে খেলোয়াড় ফাইনাল খেলেছিলেন, তাঁর নাম ছিল মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা। ১৯৯৪ সালের সেই ফাইনালে নাভ্রাতিলোভার প্রতিন্দ্বন্দ্বী ছিলেন কনচিতাই। মার্কিন মহাতারকাকে হারিয়ে ২৩ বছর আগে ট্রফি তুলেছিলেন তিনি। যেটা ছিল কোনও স্প্যানিশ মেয়ের প্রথম উইম্বলডন জয়। ২৩ বছর বাদে আবার ইতিহাস ফিরে এল। নাভ্রাতিলোভার পরে যিনি বয়স্কতম উইম্বলডন ফাইনালিস্ট হলেন, সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিনাসকে হারিয়েই ট্রফি তুলে নিলেন আর এক স্প্যানিশ কন্যা। কনচিতার কোচিংয়েই যিনি এ বার খেলছেন এখানে— মুগুরুজা।
তাঁর নিয়মিত কোচ না থাকার জন্য উইম্বলডনে কনচিতার সাহায্য নিয়েছিলেন মুগুরুজা। কারণ হিসেবে বলেছিলেন, ‘‘কনচিতা এখানে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ও জানে কী ভাবে বড় ম্যাচ জিততে হয়।’’ দেখা গেল, ভুল ভাবেননি মুগুরুজা।
মুগুরুজা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর পরেই অভিনন্দনবার্তা ভেসে আসতে থাকে। যার মধ্যে আছেন রাফায়েল নাদাল। নাদাল টুইট করেন, ‘স্প্যানিশ টেনিসের জন্য গর্বের দিন। অভিনন্দন।’ বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার দাভিদ ভিয়ার টুইট, ‘শুভেচ্ছা উইম্বলডনের নতুন রানিকে।’
ফাইনালে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীকে উড়িয়ে দিলেও ৩৭ বছর বয়সি ভিনাসের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল মুগুরুজা। বলেন, ‘‘উইলিয়ামস বোনেদের বিরুদ্ধেই যেন আমাকে বার বার খেলতে হয়। তবে ব্যাপারটা আমি উপভোগ করি। এর চেয়ে ভাল ফাইনাল আর কী হতে পারে— যখন আপনার উল্টো দিকে থাকে সেরিনা বা ভিনাস। একবার ভাবুন। ভিনাস এখানে পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন। ও তো উইম্বলডন বিশেষজ্ঞ।’’
সেই ‘বিশেষজ্ঞ’-র রূপকথার দৌড় শনিবার থেমে গেল এক স্প্যানিশ মেয়ের সামনে।
ছবি: গেটি ইমেজেস
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy