Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
বঙ্গ প্রহরীদের পুরনো গৌরব ফেরাতে ফেডারেশনের অভিনব উদ্যোগ
Goalkeeper Academy

বাংলায় গোলরক্ষক অ্যাকাডেমি, আনার চেষ্টা কিংবদন্তি অলিভার কানকে

অতীতে কলকাতায় যুবভারতীতে খেলে গিয়েছেন বিশ্বকাপার অলিভার কান। এ বারে আনন্দ নগরীর সঙ্গে আরও নিবিড় গাঁটছড়া বাঁধতে পারেন তিনি।

An image of the footballer

প্রতীক্ষা: অলিভার কানের হাত ধরে নতুন দিশায় এগোনোর লক্ষ্যে ফেডারেশন। —ফাইল চিত্র।

সুমিত ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৫৮
Share: Save:

বাংলার হারিয়ে যেতে বসা গোলকিপার গৌরব ফেরাতে উদ্যোগী হচ্ছে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ)। সব কিছু ঠিকঠাক চললে নতুন বছরে অর্থাৎ ২০২৪ থেকেই ফেডারেশন চালু করতে চলেছে গোলকিপার অ্যাকাডেমি। আর সেই অ্যাকাডেমি করা হবে বাংলার মাটিতেই। সেখানে এমনকি প্রশিক্ষণ দিতে আসতে পারেন কিংবদন্তি জার্মান গোলকিপার অলিভার কান।

অতীতে কলকাতায় যুবভারতীতে খেলে গিয়েছেন বিশ্বকাপার কান। এ বারে আনন্দ নগরীর সঙ্গে আরও নিবিড় গাঁটছড়া বাঁধতে পারেন তিনি। এআইএফএফ প্রেসিডেন্ট কল্যাণ চৌবে নিজে গোলকিপার ছিলেন। এক সময় দুই প্রধানের হয়েই খেলেছেন। বাংলায় গোলকিপার অ্যাকাডেমি করার ভাবনা তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত। অলিভার কানের সঙ্গেও কথাবার্তা বলছেন ফেডারেশন প্রধান। মাঝেমধ্যে কান-কে নিয়ে আসাই শুধু নয়, তাঁর সংস্থাকেও এই অ্যাকাডেমির সঙ্গে পাকাপাকি ভাবে যুক্ত করার চেষ্টা করছেন তিনি।

কানের নিজের সংস্থা অনলাইনে গোলকিপিংয়ের পাঠ দেয়। সারা বিশ্বেই যা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সেই প্রযুক্তিকে বাংলায় প্রস্তাবিত অ্যাকাডেমিতে আনতে পারলে খুদে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন। ভিডিয়োর মাধ্যমে কানের সংস্থার সঙ্গে যুক্ত কোচেরা শিক্ষার্থীদের বোঝান গোলকিপার হয়ে ওঠার মন্ত্র, বিভিন্ন কৌশল। নতুন বছরে কানের সংস্থার সঙ্গে চুক্তি নিয়ে কথাবার্তা এগোতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

বাংলা থেকে চার জনের নাম ইতিমধ্যেই ভাবা হয়েছে, যাঁরা এই অ্যাকাডেমির প্রধান প্রশিক্ষকের দায়িত্বে থাকবেন। সকলেই সদ্য অবসৃত এবং শারীরিক ভাবে খুবই সক্ষম, যাতে আগামী আট-দশ বছর ধরে খুদে প্রতিভাদের ট্রেনিং দিতে পারেন। এই চার জন হলেন— সুব্রত পাল, সন্দীপ নন্দী, শিল্টন পাল এবং সংগ্রাম মুখোপাধ্যায়। চার জনের সঙ্গেই প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে কল্যাণ চৌবের। তবে নিজেদের অ্যাকাডেমিও কেউ কেউ চালান বলে কী ভাবে তাঁরা এআইএফএফ প্রকল্পের সঙ্গে যু্ক্ত হতে পারেন যাতে স্বার্থ সঙ্ঘাত তৈরি না হয়, সে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কানের মতো তাঁদের সঙ্গেও নতুন বছরের শুরুতে কথাবার্তা চূডান্ত হয়ে যাওয়া উচিত বলেই মনে করা হচ্ছে। সারা ভারত থেকে বাছাই করা চল্লিশ জন ছাত্রকে নিয়ে অ্যাকাডেমি শুরু করা হবে। চারটি বয়স বিভাগে তাদের ভাগ করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। আবাসিক অ্যাকাডেমি করা হবে যাতে দূর-দূরান্ত থেকেও খুদে প্রতিভারা এসে এখানে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।

সম্ভাব্য দুই প্রশিক্ষক (বাঁ দিকে) সুব্রত ও শিল্টন।

সম্ভাব্য দুই প্রশিক্ষক (বাঁ দিকে) সুব্রত ও শিল্টন। —ফাইল চিত্র।

চার জন কোচের মধ্যে সুব্রত পাল সদ্য অবসর নিয়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে ভারতের সেরা গোলকিপার ছিলেন। বলা যেতে পারে, বাংলা থেকে শেষ জাতীয় দলের সেরা গোলকিপার ছিলেন সুব্রতই। একটা সময় ছিল যখন ভারতীয় ফুটবলকে শাসন করত বাংলা। বিশেষ করে গোলকিপারদের ক্ষেত্রে একচেটিয়া আধিপত্য ছিল এ রাজ্যের। জাতীয় স্তরে বাংলার ফুটবলার যেমন হারিয়ে যাচ্ছে, তেমনই বাঙালি গোলকিপারদের সেই রমরমাও অতীত। চলতি আইএসএলে হাতে গোনা কয়েকজন বাঙালি গোলকিপার রয়েছেন। ভারতীয় দলের কথা ধরলে প্রথম তিন-চারজনের মধ্যে কোনও বাঙালি গোলকিপার নেই। অ্যাকাডেমি হলে পুরনো সেই গৌরব ফিরবে কি না, সময় বলবে। তবে দেশে প্রথম বার যে এমন গোলকিপার তৈরির কারখানা গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তা শুনে অনেকেই উৎসাহিত।

তরুণ বসু, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, অতনু ভট্টাচার্যদের মতো বাঙালি কিংবদন্তিদের কাউকে কি অ্যাকাডেমির সঙ্গে যুক্ত থাকতে দেখা যাবে না? সুব্রত পালদের মতো ছোটাছুটি করে বা মাঠে নেমে সক্রিয় ভাবে কোচিং করানো সম্ভব নয় ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়দের পক্ষে। তাই চিন্তাভাবনায় রয়েছে, কিংবদন্তি বাঙালি গোলকিপারদের অতিথি বিশেষজ্ঞ হিসেবে মাঝেমধ্যে নিয়ে আসার। গোলকিপার হতে গেলে কী করতে হবে, সেই পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি নিজেদের খেলোয়াড় জীবনের নানা অভিজ্ঞতাও শোনাতে পারবেন তাঁরা। ভাস্কর, অতনুদের সেই সব জীবনকাহিনিই তো সেরা প্রেরণা হতে পারে আগামী দিনের
প্রহরীদের জন্য।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy