বেঙ্গালুরুর পরে আগরা। আত্মঘাতী হলেন এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী মানব শর্মা। মৃত্যুর আগে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে প্রশাসনকে পুরুষদের প্রতি একটু সহানুভূতিশীল হওয়ার আর্জিও জানান তিনি। এর পরে দায়ী করেন স্ত্রীকে। তিনি দাবি করেন, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে তরুণীর। যদিও তরুণী সেই দাবি অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করেছেন, মাদকাসক্ত ছিলেন মানব। অতীতেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। পরিবারকে জানিয়েও লাভ হয়নি। পুত্রবধূর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মানবের বাবা। যদিও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে মানবের বিয়ে হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আগরার বাড়ি থেকে মানবের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃত্যুর আগে একটি ভিডিয়ো করে নিজের বক্তব্য রেকর্ড করেন যুবক। সেখানে প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘পুরুষদের জন্যও একটু ভাবুন। নয়তো অভিযোগ চাপানোর জন্য কোনও পুরুষই আর অবশিষ্ট থাকবেন না।’’ এর পরে নিজের হাতে কাটা দাগ দেখান তিনি। দাবি করেন, এর আগেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তিনি। ভিডিয়োর শেষে মানব হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘আমার মৃত্যুর পরে আমার বাবা-মাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করবেন না।’’ এর পরেই মানবের বাবা পুত্রবধূর বিরুদ্ধে সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
আরও পড়ুন:
মানবের স্ত্রী সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেছেন, তাঁর স্বামী মাদকাসক্ত ছিলেন। মত্ত অবস্থায় তাঁকে মারধরও করতেন। তাঁর কথায়, ‘‘তিনি অতিরিক্ত মদ্যপান করতেন। বহু বার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছেন। আমি ওঁকে তিন বার বাঁচিয়েছিলাম। মত্ত অবস্থায় আমায় মারধরও করতেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে অনেক বার জানিয়েছি। ওঁরা আমল দেননি।’’ বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক থাকার কথাও উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের বিয়ের আগে এক জনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পরে আর সে সব ছিল না।’’ মানবের বোনকে তাঁর অবস্থার কথা জানিয়ে হোয়াট্সঅ্যাপ করেছিলেন তিনি। সেই হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাটও পুলিশকে দেখিয়েছেন তিনি। চ্যাটে নিজের ননদকে লিখেছিলেন, ‘‘দিদি কিছু করো, ও আত্মহত্যা করবে।’’ জবাবে তাঁর ননদ লিখেছিলেন, ‘‘ওকে ওর মতো ছেড়ে দাও। ঘুমিয়ে পড়ো।’’
পুলিশের সহকারী সুপার বিনায়ক গোপাল জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। মানবের ফোনের লক প্রথমে খোলা যায়নি। তাঁর বোন এসে পরে ফোন আনলক করে দেন। তখনই সেই ভিডিয়ো মেলে, যেখানে নিজের স্ত্রীকে তিনি দায়ী করেছেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এর আগে বেঙ্গালুরুতে আইটি কর্মী অতুল সুভাষ স্ত্রীকে দায়ী করে আত্মহত্যা করেছিলেন।