বিশ্বকাপ ফাইনাল জিতে উল্লাস স্পেনের মহিলা ফুটবলারদের। ছবি: টুইটার
৫৭ বছরের খরা কাটাতে পারল না ইংল্যান্ড। ফিফা ক্রমতালিকা থেকে শুরু করে অভিজ্ঞতা, সবেতেই স্পেনের থেকে এগিয়ে থাকলেও মাঠে নেমে কাজের কাজটা করতে পারলেন না সেরিনা উইগম্যানের মেয়েরা। ২৩ বছর বয়সি অধিনায়ক ওলগা কারমোনার গোলে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথম বারের জন্য বিশ্বকাপ জিতল স্পেন। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ফাইনালে হেরেই মাঠ ছাড়তে হল ইংল্যান্ডকে। গত বছর মহিলাদের ইউরো কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে অতিরিক্ত সময়ে হারতে হয়েছিল স্পেনকে। সেই হারের বদলা নিল স্পেন।
বিশ্বকাপ ফাইনালের প্রথম ১৫ মিনিট ইংল্যান্ডের। মাঝমাঠের দখল ছিল তাদের হাতে। ফলে স্পেনের বক্স লক্ষ্য করেই বেশির ভাগ আক্রমণ হচ্ছিল। ১৫ মিনিটের মাথায় গোল করার সুযোগ পেয়ে যায় ইংল্যান্ড। বক্সের ভিতর থেকে গোল লক্ষ্য করে বাঁ পায়ের শট মারেন লরেন হেম্প। স্পেনের গোলরক্ষক কাটা কল বলের নাগাল পাননি। কিন্তু বল গিয়ে লাগে বারে।
১৫ মিনিটের পর থেকে খেলা ধরে স্পেন। ছোট ছোট পাসে আক্রমণে উঠতে থাকে তারা। বলের দখল আরও বেশি করে রাখতে শুরু করেন টেরেসা আবেলেইরা, আইটানা বোনমাতিরা। ফলে সমস্যায় পড়ে ইংল্যান্ড। ১৮ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আসে স্পেনের কাছে। বাঁ প্রান্ত থেকে বক্সে বল বাড়ান স্পেনের অধিনায়ক ওলগা। বক্সে অরক্ষিত অবস্থায় বল পান সালমা পারালুয়েলো। কিন্তু ফাঁকা গোলে বল ঠেলতে পারেননি তিনি। সরাসরি মারেন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক ম্যারি আর্পসের হাতে।
গোলের জন্য অবশ্য বেশি ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি স্পেনকে। ২৯ মিনিটের মাথায় বাঁ প্রান্তে বল পান ওলগা। তিনি বক্সের মধ্যে ঢুকে বাঁ পায়ে মাটি ঘেঁষা শট মারেন। এ ক্ষেত্রে গোলরক্ষক আর্পস হাত লাগাতে পারেননি। দ্বিতীয় পোস্ট দিয়ে বল জালে জড়িয়ে যায়। দলকে এগিয়ে দেন ২৩ বছর বয়সি ওলগা।
প্রথমার্ধের বাকি সময় ধরে দাপট দেখায় স্পেন। তাদের তিকিতাকার সামনে বল ধরতেই পারছিল না ইংল্যান্ড। প্রথমার্ধে স্পেনের কাছে বলের দখল ছিল ৬৪ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান থেকেই পরিষ্কার, কতটা দাপট দেখিয়ে খেলছিল স্পেন। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পান বোনমাতি। তাঁর শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। বিরতিতে ১-০ এগিয়ে মাঠ ছাড়ে স্পেন।
দ্বিতীয়ার্ধে দু’টি পরিবর্তন করেন ইংল্যান্ডের কোচ উইগম্যান। স্ট্রাইকার অ্যালেসিয়া রুসোর বদলে লরেন জেমস ও মিডফিল্ডার র্যাচেল ডালির দলে ক্লোয়ি কেলিকে নামান তিনি। তার পরেই খেলার গতি বেড়ে যায় ইংল্যান্ডের। অনেক বেশি আক্রমণ করতে শুরু করে তারা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধেও ১৫ মিনিটের পর থেকে খেলা ধরে নেয় স্পেন।
৬৪ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পায় স্পেন। বক্সের মধ্যে হাতে বল লাগান ইংল্যান্ডের ফুটবলার কেইরা ওয়ালশ। প্রথমে রেফারি পেনাল্টি দেননি। কিন্তু পরে ভার প্রযুক্তি ব্যবহার করে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নেন তিনি। যদিও সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি স্পেন। বাঁ পায়ে নিরীহ শট মারেন জেনিফার হারমোসো। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে বল ধরে নেন আর্পস।
স্পেন পেনাল্টি ফস্কানোর পরে আক্রমণের ধার বাড়ায় ইংল্যান্ড। সুযোগ তৈরি করেন জেমস। বক্সের মধ্যে থেকে তাঁর জোরালো শট ভাল বাঁচান স্পেনের গোলরক্ষক কল। সময় যত গড়াচ্ছিল তত চাপে বাড়ছিল ইংল্যান্ডের উপর। ইংল্যান্ডের অ্যালেক্স গ্রিনউড আহত হওয়ায় বেশ কয়েক মিনিট খেলা বন্ধ থাকে।
সময় নষ্টের জন্য ১৩ মিনিট সংযুক্তি সময় দেওয়া হয়। তার মধ্যেই আক্রমণ প্রতি-আক্রমণের খেলা চলতে থাকে। শেষ দিকে ইংল্যান্ডের গোটা দল আক্রমণে উঠে যাওয়ায় কিছু সুযোগ স্পেনের সামনেও আসে। কিন্তু গোলের নীচে দাঁড়িয়ে সেই সব আক্রমণ বাঁচান আর্পস। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডকে খেলায় রাখেন তিনি। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও গোল করতে পারেনি ইংল্যান্ড। হেরেই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। স্পেনের তারুণ্যের সামনে হার মানতে হয় ইংল্যান্ডকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy