মুখ্যমন্ত্রীর হাতে আজীবন সদস্যপদের কার্ড তুলে দিচ্ছেন মোহনবাগানের সচিব দেবাশিস দত্ত এবং সহ-সচিব সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ছবি ফেসবুক।
বুধবার বিকেল তখন প্রায় চারটে বাজে। মোহনবাগান ক্লাবে হঠাৎই বেজে উঠল ঢাক। পথচলতি মানুষ আচমকা দাঁড়িয়ে পড়লেন। অকালে দুর্গাপুজো শুরু হয়ে গেল নাকি!
তেমন কিছুই নয়। এ দিন মোহনবাগানের নবসজ্জিত তাঁবুর উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে স্বাগত জানানো হল ঢাক-ঢোল বাজিয়েই। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম বার মমতা এলেন সবুজ-মেরুন তাঁবুতে। আগে নেতাজী ইন্ডোরে ক্লাবের অনুষ্ঠানে গেলেও তাঁবুতে আসেননি। শেষ বার ১৯৬৪ সালে মোহনবাগান তাঁবু উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল চন্দ্র সেন। তার ৫৮ বছর পর আবার বাংলার কোনও মুখ্যমন্ত্রী মোহনবাগান তাঁবু উদ্বোধন করলেন। মাঝে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় এবং জ্যোতি বসু সবুজ-মেরুন তাঁবু ঘুরে গিয়েছেন।
মোহনবাগান তাঁবুর উদ্বোধন করতে এসে মুখ্যমন্ত্রীর গলায় তাঁর মায়ের কথা। জানালেন, কী ভাবে আগে মোহনবাগানের খেলা হলে তাঁর মা রেডিয়োতে ধারাবিবরণী শুনতেন। প্রিয় ক্লাবের ভাল ফলের আশায় কালীপুজোও দিতেন। এ দিনই মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, মোহনবাগানকে ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের তরফে।
মমতা বলেন, “আমরা তখন খুব ছোট। পেলে খেলতে এসেছিলেন এখানে। সারা বাংলা উথাল-পাথাল। হঠাৎ মা-কে দেখি কালী বাড়িতে পুজো দিচ্ছে। মোহনবাগানের খেলা থাকলেই মা রেডিয়ো নিয়ে বসে পড়ত। কালী পুজো দিত। মা বীরভূমের লোক। মোহনবাগানকে খুব ভালবাসত। এখন আমার দাদা ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে জড়িত। আমার দুই ক্লাবই পছন্দ। মহমেডান স্পোর্টিংকেও আমি ভালবাসি। এ ছাড়া, ময়দানে যে সব ছোট ছোট ক্লাব খেলে তাদের পাশেও আমি আছি।”
স্বাধীনতা সংগ্রামে মোহনবাগানের অবদান সম্পর্কে বলতে গিয়ে মমতা বলেন, “মোহনবাগানের ফুটবলাররা খালি পায়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। এটা কোনও দিন ভোলা যাবে না। এক দিকে স্বাধীনতা সংগ্রামীরা দেশের জন্য আন্দোলন করছিলেন। অন্য দিকে মোহনবাগান খেলার মাধ্যমে নিজেদের মতো করে আন্দোলন করছিল। এ বার স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি। ওদের স্যালুট জানাই।”
প্রসঙ্গত, এ বছর কলকাতার তিন প্রধানকেই রাজ্য সরকারের তরফে বঙ্গবিভূষণ সম্মান দেওয়া হয়েছে। মমতা এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “অতীতে অনেক ব্যক্তিকে সম্মান জানিয়েছি। এ বার থেকে ঠিক করেছি প্রতিষ্ঠানকেও সম্মান জানাব। সবার আগে বাংলার তিন ফুটবল ক্লাবকেই সম্মান জানালাম।”
মোহনবাগান তাঁবুর উদ্বোধনে ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা। সুব্রত ভট্টাচার্য উত্তরীয় পরিয়ে দেন মমতাকে। ক্লাবের সহ-সচিব সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় মমতাকে মোহনবাগানের আজীবন সদস্যপদের কার্ড তুলে দেন। মোহনবাগানের তরফে দেওয়া স্মারক ক্লাবের লাইব্রেরিতেই দিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
সচিব দেবাশিস জানালেন, রাজ্য সরকারের অনুদানের টাকা তাঁরা কী ভাবে কাজে লাগাবেন সে ব্যাপারে কিছু ঠিক হয়নি। ২৪ অগস্ট কর্মসমিতির বৈঠক রয়েছে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে কথা উঠতে পারে। তবে তাঁর ইঙ্গিত, ক্লাবের গেট, ভিভিআইপি বক্স ইত্যাদি তৈরিতে সেই টাকা কাজে লাগানো হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy