দলের ট্রফি জয়ই এখন একমাত্র দাবি মোহনবাগানের সমর্থকদের। ছবি: টুইটার
মাস খানেক আগের কথা। আইএসএলের দ্বিতীয় পর্বে যুবভারতীতে মুখোমুখি হয়েছিল এটিকে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল। সেই ম্যাচের অনেক আগে থেকেই দর্শকদের তীব্র প্রতিবাদ দেখা গিয়েছিল। ক্লাবের নামের আগে ‘এটিকে’ শব্দবন্ধ সরানো নিয়ে গত কয়েক মাসে অনেক কিছুর সাক্ষী থেকে কলকাতা ময়দান। কিন্তু এটিকে মোহনবাগান ফাইনালে উঠতেই সমর্থকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ ভোজবাজির মতো উবে গিয়েছে।
সচিব হওয়ার পর দেবাশিস দত্ত বলেছিলেন, ক্লাবের নামের আগে থেকে ‘এটিকে’ সরানো নিয়ে কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সঙ্গে কথা বলা হবে। ক্লাব পরিচিত হবে শুধু মোহনবাগান নামেই। সমর্থকদের সেই স্বপ্ন আজও পূরণ হয়নি। ক্লাবের তরফে এটিকে ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে কি না, তা-ও জানা যায়নি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জল্পনা তৈরি হয়েছে। তবে পরিস্থিতি একই থেকেছে।
ক্লাবের এই ‘দায়সারা’ মনোভাবের বিরুদ্ধেই গর্জে উঠেছিলেন সমর্থকরা। প্রতিবাদ আছড়ে পড়েছিল কলকাতা ময়দানে। কখনও ক্লাব তাঁবুর সামনে, কখনও সচিবের বাড়িতে পোস্টার সাঁটিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। সেই প্রতিবাদ বজায় ছিল কলকাতা ডার্বিতেও। ছন্দের বিচারে এগিয়ে থাকার সুবাদে নিঃসন্দেহে ১৯ ফেব্রুয়ারির সেই ডার্বিতে মোহন-সমর্থকদের ভিড় ছিল বেশি। কিন্তু যত সংখ্যক সমর্থক মাঠে আসবেন বলে মনে করা হয়েছিল, তা হয়নি। সমাজমাধ্যম গর্জে উঠেছিল ‘বয়কট ডার্বি’ ডাকে। ডার্বির আগে ক্লাবের ছন্দও সমর্থকদের মনে প্রভাব ফেলেছিল।
তা অবশ্য মিটে গিয়েছে মোহনবাগান ফাইনালে উঠতেই। গত বারের ট্রফি জয়ী হায়দরাবাদকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ফাইনালে উঠতেই সমর্থকদের মনে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। সে কারণেই অনেকে কলকাতা থেকে গোয়া চলে গিয়েছেন প্রিয় দলকে সমর্থন জানাতে। কেউ বিমানে, কেউ ট্রেনে গিয়েছেন। টিকিটের প্রত্যাশাও বেড়েছে মারাত্মক ভাবে। গোয়ার ফতোরদায় শনিবার সকালেও দেখা গিয়েছে একগাদা সমর্থককে। সবার একটাই আকুতি, ‘টিকিট চাই’।
তবে গোয়ার স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গিয়েছে, দুই দলের অনেক সমর্থক গোয়ায় হাজির হলেও ১৯ হাজারের ফতোরদা স্টেডিয়ামে বিরাট যে টিকিটের হাহাকার রয়েছে এমনটা নয়। বরং তাঁদের ধারণা, গত বছর টিকিটের চাহিদা নাকি এর থেকেও বেশি ছিল।
Maybe, we are far from home. But we have with us, in our hearts, the voice and the love of millions of Mariners!
— ATK Mohun Bagan FC (@atkmohunbaganfc) March 18, 2023
We play with our 12th man by our side every time... and in Fatorda tonight, we will give it our ALL... TOGETHER!#ATKMohunBagan #JoyMohunBagan #আমরাসবুজমেরুন pic.twitter.com/My7mezxOl9
শুধু কলকাতা নয়, বেঙ্গালুরু, পুনে থেকেও প্রচুর সমর্থক গোয়া গিয়েছেন। দু’টি জায়গাতেই মোহনবাগানের প্রচুর সমর্থক রয়েছেন। ফেসবুক, টুইটারে তাদের গ্রুপও রয়েছে। দল বেঁধে খেলা দেখতে গিয়েছেন তাঁরা। সেখানেও প্রতিবাদের কোনও ঝলক নেই। কেন এটিকে উঠল না এত দিনেও, বা কবে উঠবে, তা নিয়ে কোনও আলোচনাই কোথাও হচ্ছে না। সমর্থকদের মধ্যেও আলোচনা নেই তাই নিয়ে।
বরং আলোচনা চলছে, দিমিত্রি পেত্রাতোস কি ফাইনালে হ্যাটট্রিক করে সোনার বুট পাবেন? প্রাক্তনী রয় কৃষ্ণই শেষ পর্যন্ত দলের কাঁটা হয়ে দাঁড়াবেন না তো? ফাইনালে কি গোল করতে পারবেন লিস্টন, মনবীররা? সেখানে এটিকে নিয়ে আলোচনা? কার্যত নেই বললেই চলে।
তবে মোহন-সমর্থকদের মধ্যে একজনকে খুঁজে পাওয়া যাবে না এ বার। তিনি অনির্বাণ নন্দী। করোনার সময় গোয়ায় খেলা যখন হচ্ছিল, নিজের গ্যাঁটের পয়সা খরচ করে গোয়ায় গিয়েছিলেন। স্টেডিয়ামে ঢুকতে না পেরে সংলগ্ন বাড়ির ছাদে মোহনবাগানের পতাকা উড়িয়ে চেঁচামেচি করেছিলেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মাস কয়েক আগেই প্রয়াত হয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy