ইংল্যান্ডের দুই গোলদাতা (বাঁ দিকে) হ্যারি কেন ও জুড বেলিংহ্যাম। ছবি: রয়টার্স।
ইংল্যান্ড ২ — স্লোভাকিয়া ১
স্লোভাকিয়ার বিরুদ্ধে নামার আগে ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের স্ত্রী, প্রেমিকারা এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে বিমান ভাড়া করে ফেলেছিলেন তাঁরা। গেলশেনকার্চেনে খেলা শেষে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে সরাসরি ব্ল্যাঙ্কেনহাইনে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা। সেই পরিকল্পনা প্রায় জলে চলে গিয়েছিল। ইংল্যান্ডকে রক্ষা করলেন জুড বেলিংহ্যাম। তাঁর সংযুক্তি সময়ের গোলে হার বাঁচায় ইংল্যান্ড। অতিরিক্ত সময়ে গোল করেন হ্যারি কেন। খাতায় কলমে অনেক পিছিয়ে থাকা স্লোভাকিয়ার বিরুদ্ধে হারের মুখ থেকে জিতল ইংল্যান্ড। ১২০ মিনিটের খেলায় ২-১ গোলে স্লোভাকিয়াকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল তারা।
বিশেষজ্ঞেরা ভেবেছিলেন ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবে ইটালি ও ইংল্যান্ড। গত বারের ফাইনালের রিপ্লে দেখার আশা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু ইউরোর প্রি কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম ম্যাচে সুইৎজ়ারল্যান্ডের কাছে হেরেছে গত বারের চ্যাম্পিয়ন ইটালি। অর্থাৎ, কোয়ার্টার ফাইনালে সুইৎজ়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলবে ইংল্যান্ড।
খেলার শুরু থেকেই চাপ বাড়ায় স্লোভাকিয়া। ৬ মিনিটের মাথায় গোল করার সুযোগ পায় তারা। প্রতি আক্রমণ থেকে বল পান হারাসলিন। তাঁর শট একটুর জন্য বাইরে যায়। তার পরেও চাপ কমায়নি স্লোভাকিয়া। কিছুটা পিছিয়ে পড়ে ইংল্যান্ড। চাপের ফল পায় স্লোভাকিয়া। নিজেদের অর্ধ থেকে লম্বা বল পান ডেভিড স্ট্রিলিচ। তিনি বল বাড়ান শ্রাঞ্জের দিকে। ডিফেন্ডার মার্ক গেহিকে গতিতে হারিয়ে বক্সে ঢুকে ডান পায়ের শটে গোল করেন শ্রাঞ্জ। এগিয়ে যায় স্লোভাকিয়া।
গোল খাওয়ার পরে আক্রমণের জোর কিছুটা বাড়ানোর চেষ্টা করে ইংল্যান্ড। কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছিল না। মাঝমাঠে বলের দখল ইংল্যান্ডের অনেক বেশি ছিল। অনেক বেশি পাস খেলছিল তারা। কিন্তু সবই স্কয়্যার পাস। সামনের দিকে বল বাড়াতে সমস্যা হচ্ছিল। স্লোভাকিয়ার জমাট রক্ষণ ভাঙা যাচ্ছিল না। ১-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় স্লোভাকিয়া।
দ্বিতীয়ার্ধে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে ইংল্যান্ড। ফিল ফডেন, কাইল ওয়াকার, কোল পামারেরা অনেক বেশি সুযোগ তৈরি করছিলেন। কিন্তু গোলের মুখ খুলছিল না। বেশ কয়েকটি ভাল সেভ করেন স্লোভাকিয়ার গোলরক্ষক দুব্রাভকা। বলের দখল ইংল্যান্ডের কাছে ছিল ৭৫ শতাংশ। গোল লক্ষ্য করে শটও অনেক বেশি ছিল। কাজের কাজটাই যা হচ্ছিল না।
৮১ মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে থেকে ডেকলান রাইসের শট পোস্টে লেগে ফেরে। বাধ্য হয়ে শেষ দিকে এবেরি ইজ়ে ও ইভান টনিকে নামিয়ে দেন ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। সেই পরিবর্তন কাজে লাগে। সংযুক্তি সময়ের পঞ্চম মিনিটে ওয়াকারের লং থ্রো হেড করে বক্সে পাঠান ইজ়ে। অরক্ষিত বেলিংহ্যামের কাছে বল যায়। তিনি ব্যাকভলিতে গোল করে সমতা ফেরান। তবে সেই গোলের ক্ষেত্রে স্লোভাকিয়ার রক্ষণও কিছুটা দায়ী। বেলিংহ্যামের পিছনেই ছিলেন ভাভরো। তিনি এগিয়ে এলে হয়তো অতটা সহজে শট মারতে পারতেন না বেলিংহ্যাম।
ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। তত ক্ষণে খেলার ছন্দ পেয়ে গিয়েছে ইংল্যান্ড। অতিরিক্ত সময়ের প্রথম মিনিটে পামারের ক্রস যায় ইজ়ের কাছে। তাঁর শট হেড করেন টনি। বল যায় অরক্ষিত থাকা কেনের দিকে। চলতি বলে হেড করে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দেন ইংল্যান্ডের ফুটবল ইতিহাসে সর্বাধিক গোলের মালিক। দুব্রাভকা অনেক চেষ্টা করেও বল বাঁচাতে পারেননি।
পিছিয়ে পড়ার পরে গোল করার জন্য মরিয়া চেষ্টা শুরু করে স্লোভাকিয়া। কিন্তু দুই গোলের ধাক্কা থেকে বেরিয়ে আসতে সমস্যা হচ্ছিল তাদের। কিছুটা ওপেন হয়ে যায় খেলা। ফলে ইংল্যান্ডও সুযোগ পেতে শুরু করে। স্লোভাকিয়া অনেক চেষ্টা করেও বাকি সময়ে আর গোল করতে পারেনি। জিতে মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড। স্বপ্নভঙ্গ হয় স্লোভাকিয়ার। তবে স্লোভাকিয়ার মতো দল ইংল্যান্ডকে যে ভাবে সমস্যায় ফেলল তা চিন্তা আরও বাড়াবে গত বারের ফাইনালিস্টদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy