মহড়া: আই লিগে রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারেরা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
সকালে অনুশীলনের পরে কল্যাণীতে রিয়াল কাশ্মীর যখন বিশ্রাম নিচ্ছে, তখন আলেসান্দ্রো মেনেন্দেসের শিবির ব্যস্ত সীমান্ত শহরে কাল কী কী জিনিস নেওয়া হবে, তা গোছগাছ করতে। বিকেল পাঁচটায় ম্যাচ হলেও কাশিম আইদারাদের রওনা হতে হবে অন্তত চার ঘণ্টা আগে।
খরচ কমাতে যুবভারতী থেকে আই লিগের সব ম্যাচ কল্যাণীতে খেলছে ইস্টবেঙ্গল। শুধু তাই নয়, গত মরসুমে সল্টলেক স্টেডিয়ামে খেলা থাকলেও ম্যাচের আগের দিন একই হোটেলে উঠত পুরো দল। এ বার সেটা তো হয়ইনি, উল্টে ম্যাচের দিন তিন ঘণ্টার রাস্তা বাসে করে খেলতে যেতে হবে লালরিন্দিকা রালতেদের।
ষোলো বছর হয়ে গেল আই লিগ ঢোকেনি শতবর্ষ ছুঁয়ে ফেলা ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে। এ বছর এখনও ট্রফিহীন আলেসান্দ্রোর দল। এই অবস্থায় শক্তিশালী দল রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে উদ্বোধনী ম্যাচ খেলতে নামার আগে রীতিমতো ফুঁসছেন লাল-হলুদের স্পেনীয় কোচ। তাঁর ক্ষোভ বেরিয়ে পড়েছিল সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনেও। তিনি বলেন, ‘‘একটা পেশাদার দল এ ভাবে তিন ঘণ্টা বাসে করে গিয়ে ম্যাচ খেলতে নামবে, এটা বড় সমস্যা।’’ প্রতিপক্ষ ‘ক্লান্ত’ হয়ে যাবে, এই সুবিধাটা তো পাবেন আপনারাও? প্রশ্ন শুনে হেসে ফেলেন ডেভিড রবার্টসন। মঙ্গলবার কল্যাণীর হোটেল থেকে ফোনে তিনি বলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল শক্তিশালী দল। ওদের কাছে কোনও সমস্যাই সমস্যা নয়। বরং কাশ্মীরে বরফ পড়ায় আমরা অনেক দিন ভাল করে অনুশীলন করতে পারিনি।’’
ইস্টবেঙ্গল এবং রিয়াল কাশ্মীর দু’টি দলই দীর্ঘ সময় কোনও টুর্নামেন্টে খেলেনি। কলকাতা লিগের পর ছ’সপ্তাহ কোনও প্রতিযোগিতায় খেলেননি খাইমে স্যান্টোস কোলাদোরা। শুধুই অনুশীলন করে গিয়েছেন। মার্তি ক্রেসপিরা তিনটি অনুশীলন ম্যাচ খেলেছেন আইএসএলের তিন ক্লাবের রিজার্ভ দলের সঙ্গে। অন্য দিকে ডুরান্ড কাপের পরে একই অবস্থা মেসন রবার্টসনদের। কয়েকটি অনুশীলন ম্যাচ খেলেছে শুধু। এই অবস্থায় একেবারেই নতুন করে আই লিগ শুরু করছে দুই দল। দুই কোচ একে অন্যের দলকে দেখেছেন ডুরান্ড কাপে। আলাদা গ্রুপে থাকায় ইস্টবেঙ্গল বনাম রিয়াল কাশ্মীরের মুখোমুখি হওয়া হয়নি। জওয়ানদের প্রতিযোগিতার পরে দু’দলেরই শক্তির তারতম্য হয়ে গিয়েছে, মানছেন দুই কোচই। একে অপরের রণণীতি নিয়ে যে কার্যত অন্ধকারে, তা-ও মেনে নিয়েছেন দুজনেই। তাই সমীহও করছেন পরস্পরকে।
মঙ্গলবার সকালে যুবভারতী সংলগ্ন মাঠে অনুশীলনের পর মুখ খুলতে চাননি ইস্টবেঙ্গল কোচ এবং ফুটবলারেরা। সাংবাদিকদেরও দশ মিনিটের বেশি দেখতে দেওয়া হয়নি লাল-হলুদের অনুশীলন। সোমবার অবশ্য আলেসান্দ্রো বলে দিয়েছিলেন, ‘‘সমর্থকদের জন্য বিশেষ করে আই লিগটা জিততে চাইছি। কিন্তু কাশ্মীর অত্যন্ত শক্তিশালী দল। আমাদের মাঠে ম্যাচ হলেও জয় পাওয়াটা কঠিন হবে।’’ আর গত দু’বছর কাশ্মীরের ক্লাবকে কোচিং করিয়ে যিনি ভারতীয় ফুটবলের মানচিত্রে জায়গা করে দিয়েছেন ভূস্বর্গের দলকে, সেই রবার্টসন বললেন, ‘‘ডুরান্ড কাপে যে দলকে দেখেছিলাম, আই লিগে সেই ইস্টবেঙ্গল অনেক শক্তি বাড়িয়েছে। ওদের আক্রমণভাগ এবং মাঝমাঠ যথেষ্ট শক্তিশালী। আমরা সতর্ক।’’
ইস্টবেঙ্গলে গতবারের দলে যে বিদেশিরা খেলেছিলেন, তাঁদের তিন জনকে বাদ দিয়েছেন আলেসান্দ্রো। মার্কোস দে লা এসপারা, মার্তি ক্রেসপি এবং খুয়ান মেরা গঞ্জালেসকে নিজের দেশ থেকে এনেছেন লাল-হলুদ কোচ। তাঁদের পরীক্ষা শুরু আজ থেকেই। কাশ্মীর অবশ্য ধরে রেখেছে তাদের পাঁচ পুরনো বিদেশিকেই। নতুন এসেছেন শুধু স্ট্রাইকার কালান হিগিবোথাম। তবে দলের বিদেশি নিউক্লিয়াস, কোচের ছেলে মেসন রবার্টসনকে কোথায় খেলাবেন, তাঁর বাবা এখনও ঠিক করেননি। মেসন স্টপার এবং স্ট্রাইকার দুই পজিশনেই সমান সাবলীল। রবার্টসন বললেন, ‘‘কোথায় কাকে খেলাব, সেটা ঠিক করব ম্যাচের আগে। মেসনের ক্ষেত্রেও একই কথা বলছি।’’ ছেলে যে তাঁর দলের জয়ের তুরুপের তাস, তা বেরিয়ে পড়ে কথা বললেই। ইস্টবেঙ্গল দল সূত্রের খবর, মেসনকে নিয়ে ধন্দে রয়েছেন আলেসান্দ্রোও।
আই লিগ ফুটবল: ইস্টবেঙ্গল বনাম রিয়াল কাশ্মীর (কল্যাণী, বিকাল ৫-০০)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy