ক্লাব ও সমর্থকদের স্বার্থে কর্তাদের এগিয়ে আসতে বলছেন প্রাক্তন ফুটবলার গৌতম সরকার। সন্দীপন রুইদাস
শুধু বছরের পর বছর পেরিয়ে যাচ্ছে। অবস্থার কোনও উন্নতি নেই। আগে ছিল আই লিগ না জেতার আক্ষেপ। গত তিন মরশুম থেকে শুরু হয়েছে ক্লাব বনাম বিনিয়োগকারী টানাপোড়েন। ক্লাবের কয়েক জন চেয়ার আঁকড়ে ধরে রাখার একগুঁয়ে চেষ্টা করছেন। এর ফলে বিপাকে পড়ছে আমাদের প্রিয় ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। তাই তাঁদের কাছে অনুরোধ ক্ষমতার জোর না দেখিয়ে ক্লাবের সুন্দর ভবিষ্যৎ ও সমর্থকদের মুখের দিকে তাকিয়ে চূড়ান্ত চুক্তিতে সইটা করে দিন।
এই যুগে সবাই পেশাদার। তবে আমাদের মতো প্রাক্তনরা মোটেও নিজেদের পেশাদার বলে মনে করি না। তাই তো মোহনবাগানের হয়ে খেললেও ময়দান আমাকে ইস্টবেঙ্গলের ‘ঘরের ছেলে’ বলেই চেনে। আর সেটা নিয়ে গর্ববোধ করি। সেই লাল-হলুদ দলটার ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এটা ভাবলেই মন খারাপ হয়ে যায়।
গত আইএসএল শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এটিকে মোহনবাগান ঘর গুছিয়ে নিতে শুরু করেছিল। দল গঠনে একটার পর একটা চমক দিয়েই যাচ্ছে তারা। সেখানে আমার প্রিয় ক্লাবকে ঘিরে শুধুই বিতর্ক, এবং সমর্থকদের হাহাকার। এখানেও আবার লাল-হলুদ সমর্থকরা বিভক্ত। কেউ বিনিয়োগকারী শ্রী সিমেন্টের পক্ষ নিয়েছে। আবার একদল ক্লাবের পাশে দাঁড়িয়ে বলছে ‘মাতৃসম ইস্টবেঙ্গল বিক্রি করা যাবে না।’
প্রাথমিক চুক্তি ও চূড়ান্ত চুক্তির ফাঁসে শুধু আইএসএল কেন, আমার ধারণা ইস্টবেঙ্গল কলকাতা লিগেও খেলতে পারবে না। এটা তো কাম্য নয়। বিনিয়োগকারীদের মতে প্রাথমিক চুক্তি ও চূড়ান্ত চুক্তির মধ্যে কোনও ফারাক নেই। অথচ ক্লাব অন্য কথা বলছে। কিন্তু আমাদের মতো সাধারণ মানুষ, কিংবা অগণিত লাল-হলুদ সমর্থক কি কেউ দুটো চুক্তিপত্র দেখেছে? আমরা তো দুই পক্ষের কথা শুনে নিজেদের মতো করে গল্প তৈরি করে নিচ্ছি। এতে সব চেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে শতবর্ষে পা রাখা ক্লাবের। সেটা বিনিয়োগকারী ও ক্লাব বুঝতে পারছে না।
তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি এই বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের দোষ দেখতে পাচ্ছি না। কারণ যে টাকা দেবে সে তো নিজের লাভ বুঝবেই। ক্লাবেরও বোঝা উচিত প্রতি বছর চাইলেই কিন্তু নতুন বিনিয়োগকারী ধরে আনা যাবে না।
আজকের যুগে নেট মাধ্যম খুবই সক্রিয়। বাঁকুড়ার কোনও গ্রামের ঘটনা লন্ডনে পৌঁছে যেতে কয়েক মুহূর্ত সময় লাগে। প্রথমে কোয়েস। আর এ বার শ্রী সিমেন্ট। বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে ক্লাবের ঝামেলা লেগেই আছে। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে কিছু ক্লাব কর্তার জন্য বিশ্বের কাছে ইস্টবেঙ্গলের ভাবমূর্তি কিন্তু খারাপ হচ্ছে। তাই ক্লাবের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য চূড়ান্ত চুক্তিতে সই করে দিন। গত বছর চরম দুঃসময়ের মধ্যেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিনিয়োগকারী এনে দিয়েছিলেন। ওঁর সম্মানের দিকটাও কিন্তু ক্লাবের দেখা উচিত।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমরা ইস্টবেঙ্গলের হয়ে সেই দেশে কয়েকটা প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলাম। বাংলাদেশে পা রাখার পর থেকে আমাদের লাল-হলুদ জার্সি দেখে সবাই ধন্য ধন্য করত। এই জার্সি গায়ে চাপিয়ে অনেক সম্মান পেয়েছি। এখন সেই ক্লাবকে নিয়ে ফেসবুক, টুইটারে মস্করা করা হয়। সেগুলো দেখলে খুব কষ্ট পাই। আমাদের কষ্ট হলে কর্তাদের কি ক্লাবের এমন বেহাল দশা দেখে কষ্ট হয় না?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy