ম্যাচের আগে ধোনির ক্লাস।
অঙ্কিত শর্মার বদলে একজন পেসার রাখতে গিয়ে ইশান্ত শর্মা, ইরফান পাঠান, আরপি সিংহকে না রেখে অশোক দিন্দা কেন?
মঙ্গলবার হায়দরাবাদে ওকে বল করতে দেখে এই প্রশ্নটাই প্রথমে মনে এসেছিল। কিন্তু প্রথম ওভারেই বাংলার পেসারের বোলিং দেখে বুঝে গেলাম কেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি সিদ্ধান্তটা নিয়েছে। বুঝলাম, জহুরির চোখ চিনে নিয়েছে ওকে। নিশ্চয়ই দিন্দাকে নেটে এ রকমই বল করতে দেখেছিল ধোনি। সে জন্যই ওকে এই ম্যাচে সুযোগ দিল। এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দিন্দাকে প্রথম এগারোয় নিয়ে আসাটা এমএস ধোনির একটা ফাটকা হতে পারে। এ রকম ফাটকা ধোনি আগে অনেকবার খেলেছে। এখন ওর সময়টা ভাল যাচ্ছে না। তবু খেলল। আর সেটাই ওকে সাফল্য এনে দিল।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ দিন্দার বোলিং বিশ্লেষণ এ দিন ৪-১-২৩-৩। তার মধ্যে প্রথম উইকেটটার ওজনই সানরাইজার্স টিমের ছ’জন ব্যাটসম্যানের সমান। দিন্দার যে বলটা ডেভিড ওয়ার্নারকে বোকা বানাল, সেটাতেই মঙ্গলবারের ম্যাচের অর্ধেক ফয়সালা হয়ে যায়। হায়দরাবাদ দলটা এত ওয়ার্নারভিত্তিক যে, ওকে শুরুতেই ফিরিয়ে দিলেই ওদের ব্যাটিং বিপর্যয় শুরু হয়ে যায়। এ দিনও সেটাই হল।
মঙ্গলবার উপ্পলের স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়াটা দারুণ কাজে লাগাল দিন্দা। প্রথম বল থেকেই সুইং পেয়েছে। প্রথম দু’টো বল ভিতরে ঢুকল। চার নম্বর বলটাও ওয়ার্নার সম্ভবত ভেবেছিল ভিতরে আসবে, কিন্তু বলটা ওয়াইড অব দ্য অফ স্টাম্প পড়ে বাইরে যাচ্ছিল। ওয়ার্নার কাট করার লোভ সামলাতে পারেনি।
দিন্দাকে নিয়ে বহু দিন কাজ করেছি বলেই জানি, ও যে রকম মানসিকতার ছেলে, তাতে শুরুতেই একটা সাফল্য পেয়ে যাওয়ার পর ওর জেদ আরও বেড়ে যায়। তখন ওর ভিতরের আগ্রাসনটা আরও বেড়ে যায়। এ দিনও তা-ই দেখলাম। উইকেট দিন্দাকে এ দিন সে রকম সাহায্য করেনি। কিন্তু আবহাওয়ার জন্য সুইংটা পেয়েছে। আর সেটাই কাজে লাগিয়েছে। লাইন এবং লেংথটা ঠিক রেখে।
পুণেকে এই আইপিএলে যেটা ভোগাচ্ছিল, সেটা হল বোলিং। বিশেষ করে পেস বোলিংটা। ছয় ম্যাচে রবিবার দ্বিতীয় জয়টা পুণে তুলল অবশ্য পেসারদের বোলিংয়েই। দিন্দার পাশাপাশি মিচেল মার্শ দুটো উইকেট তুলল।
ম্যাচে সেরা ‘ছাত্র ’ দিন্দার রোনাল্ডো-সেলিব্রেশন।
দিন্দা এ দিন দুই অশ্বিনের কাজটাও সহজ করে দিল। আসলে প্রথম ছ’ওভারে উইকেট তুলে নিলে স্পিনারদের কাজটা সহজ হয়ে যায়। তখন স্পিনারদের বিরুদ্ধে ব্যাটসম্যানরা অল আউট আক্রমণে যেতে ভয় পায়। এ দিন ঠিক তাই হল। দিন্দার কিন্তু ক্ষমতা আছে, নতুন বলে উইকেট তোলার। আর ও প্রথমে উইকেট তুলে নিলে পুণের স্পিনারদের কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
তা হলে কি ধোনির বোলিং নিয়ে দুশ্চিন্তা দূর করতে পারবে দিন্দা?
এ দিন ম্যাচের আগে বৃষ্টি হয়ে যাওয়ায় যে কন্ডিশনটা দিন্দা পেল, সেটা ও রোজ পাবে না। কিন্তু তা সত্ত্বেও বলব, দিন্দার মধ্যে মশলা আছে ধোনির চিন্তা দূর করার। ও উইকেট টু উইকেট বল করতে পারে। ফুল লেংথ রাখতে পারে, ইয়র্কারটাও হাতে আছে। স্পিডটাও আছে। ডেথ ওভারে রান আটকাতে এগুলো কাজে দেবে। কিন্তু পুরোটাই নির্ভর করবে, দিন্দা ধারাবাহিক ভাবে ঠিক লাইন-লেংথে বলটা রাখতে পারবে কি না, তার উপর।
ধোনি এ দিন টসটা জিতল। ফাটকাটাও কাজে লাগল। চার ম্যাচে টানা হারের পর জয়। শুধু এ দিন চারে নেমে রান পেল না পুণে অধিনায়ক। কিন্তু টার্গেট মাত্র ১১৯ হওয়ায় সমস্যা হয়নি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ১১৮-৮ (ধবন ৫৬, ওয়ার্নার ০। দিন্দা ৩-২৩, মার্শ ২-১৪)। রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টস ১১ ওভারে ৯৪-৩ (স্মিথ ৪৬ ন.আ., ধোনি ৫)।
ডাকওয়ার্থ-লুইসে পুণে জয়ী ৩৪ রানে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy