Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সরে যাননি, সরিয়ে দেওয়া হল মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে

এত দিন তাঁর সম্পর্কে বলা হতো, কাউকে কোঁতল করার সুযোগই দেন না। নিজে থেকে ছেড়ে দিয়ে যান অধিনায়কত্ব বা দলের সদস্যের জায়গা। যেমন অস্ট্রেলিয়া সফরের মাঝপথে আচমকাই অবসর ঘোষণা করে দিয়েছিলেন টেস্ট থেকে।

নেতৃত্বের ব্যাটন ছাড়তে কি ফের বাধ্য হলেন ধোনি?

নেতৃত্বের ব্যাটন ছাড়তে কি ফের বাধ্য হলেন ধোনি?

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৪:০৬
Share: Save:

এত দিন তাঁর সম্পর্কে বলা হতো, কাউকে কোঁতল করার সুযোগই দেন না। নিজে থেকে ছেড়ে দিয়ে যান অধিনায়কত্ব বা দলের সদস্যের জায়গা।

যেমন অস্ট্রেলিয়া সফরের মাঝপথে আচমকাই অবসর ঘোষণা করে দিয়েছিলেন টেস্ট থেকে। তেমনই একদিনের দলের অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন নিজে থেকে। আইপিএলের ক্ষেত্রে সেই সুযোগ আর পেলেন না মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। দশম আইপিএলের নিলামের আগের দিনই তাঁকে অধিনায়কত্বের পদ থেকে ছেঁটে ফেলল রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টস।

ভারতীয় অধিনায়কত্ব ছাড়ার সময় ‘তিনি নিজেই সরে গিয়েছেন’ বলে ভারতীয় বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছিল। যদিও কারও কারও সন্দেহ, ধোনি সরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। কোনও কোনও মহলের দাবি, জাতীয় নির্বাচকেরা ঠিকই করে নিয়েছিলেন, নেতৃত্বে বদল আনবেন। ব্যাটিংয়ে ধার কমে যাওয়া ধোনিকে আর অধিনায়ক হিসাবে রাখতে চাইছিলেন না কেউ। তেমনই দুর্ধর্ষ ফর্মে থাকা কোহালি অনেক ন্যায্য দাবিদার হয়ে উঠেছিলেন।

কিন্তু ফ্র্যাঞ্চাইজির দুনিয়ায় সে সব সম্মানজনক দরজা আর অপেক্ষা করে থাকেনি। পুণের মালিক কলকাতার শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েন্‌কা বলে দিয়েছেন, ‘‘ধোনি নিজে পদত্যাগ করেনি। আমরা স্টিভ স্মিথকে নতুন অধিনায়ক হিসাবে নিয়োগ করেছি। গত মরসুমটা আমাদের মোটেও ভাল যায়নি। তাই তরুণ কাউকে চেয়েছিলাম। যে এসে দলটাকে ঢেলে সাজাতে পারবে।’’

আরও পড়ুন:

আজ আইপিএল নিলামে নজর থাকুক এঁদের দিকে

গোয়েন্‌কার বক্তব্য জানাজানি হওয়ার পর থেকেই তীব্র জল্পনা শুরু হয়ে যায় যে, এটা আইপিএলের আর একটি মালিক বনাম অধিনায়ক সংঘাতের কাহিনি নয় তো? কলকাতা নাইট রাইডার্সে যেমন শাহরুখ খানের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে পড়েছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। অথবা রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে রাহুল দ্রাবিড়ের প্রতি আস্থা হারিয়েছিলেন বিজয় মাল্য।

এই মরসুমে পুণের নেতৃত্বে স্টিভ স্মিথ।

বিভিন্ন সূত্র থেকে যা ইঙ্গিত, গোয়েন্‌কা আর ধোনি একমত হতে পারছিলেন না অনেক ব্যাপারেই। এবং, সেটা গত বছর থেকেই চলছিল। পুণের মালিক সবচেয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন দল পরিচালকদের শরীরীভাষা নিয়ে। দল যখন একের পর এক ম্যাচ হারছে, তখন তিনি এক দিন খোঁজ নিতে এসে দেখেন যে, ধোনি-সহ অনেক সিনিয়র অনুশীলনই করছেন না।

শোনা যায়, বিভ্রান্ত টিম মালিক নাকি তাজ্জব হয়ে জিজ্ঞেস করেন, দল হারছে অথচ আমরা প্র্যাকটিস করছি না কেন? তাঁকে জানানো হয়, সে দিন ‘অপশনাল প্র্যাকটিস’ রয়েছে। গোয়েন্‌কা নাকি বিস্মিত হয়ে যান শুনে যে, দল যখন হারছে অনুশীলন করলেও হয়, না করলেও হয় জাতীয় মনোভাব নেওয়া হচ্ছে। ধোনিকে জিজ্ঞেস করে তিনি খুব গ্রহণযোগ্য জবাব পাননি। কোচ স্টিভন ফ্লেমিংও খুব বুঝিয়ে উঠতে পেরেছিলেন বলে খবর নেই।

একটা প্রশ্ন উঠছিল যে, ধোনিকে অধিনায়কত্বের পদ থেকে সরানোর পরে ফ্লেমিংও অনিশ্চিত কি না। কারণ, পুণের দলে আসার সময়ে চেন্নাই সুপার কিংগসে তাঁর পুরনো সতীর্থদেরই এখানে নিয়ে এসেছিলেন ধোনি। এটাও যে পুণে কর্তৃপক্ষকে খুব খুশি করেছিল, এমন নয়। চেন্নাই থেকে ধোনির সঙ্গে আসা পুণের কয়েকজন সহকারী সদস্যকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেই খবর। তবে ফ্লেমিং থেকে যাবেন বলেই মনে হচ্ছে।

পুণের এই দলে ধোনিকে আপাতত ক্রিকেটার হিসাবেই থাকতে হচ্ছে। স্টিভ স্মিথই দল চালাবেন। তাঁর এবং ফ্লেমিংয়ের হাতে ব্যাটসম্যান ধোনির ভাগ্য। তবে অধিনায়ক ধোনির এখানেই বিদায় ঘটল, বলা যাচ্ছে না। নিশ্চিত থাকা যায় যে, আগামী বছর নির্বাসন কাটিয়ে ফেরা শ্রীনিবাসনের চেন্নাই সুপার কিংগসে তিনি ফিরে যাবেন। অধিনায়ক হিসাবে ফেয়ারওয়েল সম্ভবত চেন্নাইয়ের হলুদ জার্সিতেই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE