Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

স্পিন ব্যর্থতার দিনে দিল্লির ইনিংস শেষ ডিন্ডা-ঝড়ে

রবিবার ইডেনে বাংলার মরণ-বাঁচন ম্যাচের প্রথম দিন সেই ডিন্ডা-ঝড়েই উড়ে গেল দিল্লি। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দিল্লি অধিনায়ক নীতীশ রানা। হয়তো ভেবেছিলেন, প্রথম এক ঘণ্টা টিকে গেলেই ব্যাটিংয়ের আদর্শ হয়ে যাবে এই পিচ।

 ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত
শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:১১
Share: Save:

ধৈর্য, দক্ষতা ও মানসিক দৃঢ়তা। মরসুমের শুরু থেকেই এই তিনটি বিষয়ে জোর দিতে চেয়েছিলেন বাংলার মেন্টর অরুণ লাল। তাঁর কাছে রঞ্জি ট্রফি জেতার জন্য এই তিনটি বিষয়েই ছিল মোক্ষম। যা তিনি দলের এক জনের মধ্যে কিছুটা হলেও খুঁজে পেয়েছিলেন— অশোক ডিন্ডা।

রবিবার ইডেনে বাংলার মরণ-বাঁচন ম্যাচের প্রথম দিন সেই ডিন্ডা-ঝড়েই উড়ে গেল দিল্লি। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দিল্লি অধিনায়ক নীতীশ রানা। হয়তো ভেবেছিলেন, প্রথম এক ঘণ্টা টিকে গেলেই ব্যাটিংয়ের আদর্শ হয়ে যাবে এই পিচ। কিন্তু প্রথম ১৯ ওভারের মধ্যেই দিল্লির স্কোর দাঁড়ায় ৭৩-৫। সৌজন্যে ডিন্ডার দুরন্ত প্রথম স্পেল— ৯-৩-২১-৩। সারা দিনে ২২ ওভার বল করে ৬২ রান দিয়ে চার উইকেট নৈছনপুর এক্সপ্রেসের। দুই উইকেট মুকেশ কুমারের। একটি করে উইকেট নেন মনোজ তিওয়ারি, ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়, আমির গনি ও প্রদীপ্ত প্রামাণিক। ২৪০ রানে শেষ হয়ে যায় দিল্লির ইনিংস।

পিচ নিয়ে দলের ক্ষোভ থাকলেও ডিন্ডা কিন্তু নিজের কাজটি করে গিয়েছেন। দিনের প্রথম ওভারে কুণাল চাণ্ডেলাকে যে বলটি তিনি করেছিলেন, তাতে অনেক ব্যাটসম্যানই হয়তো সমস্যায় পড়তেন। লর্ডসে মুরলী বিজয়কে যে ভাবে বোল্ড করেছিলেন জেমস অ্যান্ডারসন, অনেকটা সে রকম ডেলিভারি। দিনের চতুর্থ বলে ডিন্ডার আউটসুইং মিডল স্টাম্প থেকে সুইং করে অফস্টাম্প উড়িয়ে দেয় কুণালের। দ্বিতীয় ওপেনারের উইকেটটি নিয়ে সব চেয়ে বেশি উৎসব করেন বঙ্গ পেসার। কারণ, ডিন্ডা মনে করেছিলেন দিনের ১৩ নম্বর ওভারেই আউট ছিলেন হিতেন দালাল।

ডিন্ডা বলেন, ‘‘হিতেনের ব্যাট ছুঁয়েই অগ্নিভের হাতে গিয়েছিল বল। পরে আম্পায়ারও জানান যে, তাঁর সিদ্ধান্ত ভুল ছিল।’’ প্যাভিলিয়ন এন্ড থেকে তার পরের ওভারেই হিতেনকে একই ভাবে পরাস্ত করেন ডিন্ডা। এবং অঙ্গভঙ্গি করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার রাস্তা দেখিয়ে দেন তাঁকে।

যদিও এই দাপট ধরে রাখতে ব্যর্থ বাংলার স্পিনারেরা। এই পরিস্থিতি থেকেও ২৪০ রান কী ভাবে করল দিল্লি?

তরুণ বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান জন্টি সিধু (৮৫) ও শিবম শর্মা (৪২)-র ষষ্ঠ উইকেটে ৯৬ রানের গড়া জুটি ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করে বাংলার বিপক্ষকে। পাশাপাশি অলরাউন্ডার শিবাঙ্ক বশিষ্ঠের অপরাজিত ৩৪ রানের ইনিংসও ব্যাটিং বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করে তাঁর দলকে। তবে এই বশিষ্ঠ হয়তো এত রান পেতেন না। দিনের ৬২তম ওভারে আমির গনির বলে স্লিপে ক্যাচ পড়ে মনোজের হাত থেকে। তখন ৩ রানে ব্যাট করছিলেন বশিষ্ঠ। অফস্পিনারকে কাট করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন তিনি। বল আসার আগেই মনোজ সরে যান তাঁর বাঁ দিকে। ঠিক তাঁর ডান পাশ দিয়ে বল চলে যায় বাউন্ডারির উদ্দেশে। বশিষ্ঠের পাশাপাশি নীতীশ রানা (২১)-র ক্যাচও পড়ে মনোজের হাত থেকেই। তখন বিপক্ষ অধিনায়কের রান ছিল পাঁচ। মুকেশ কুমারের বলে প্রথম স্লিপে দাঁড়িয়ে একেবারে সহজ ক্যাচ ফেলে দেন মনোজ। যা সচরাচর তাঁকে করতে দেখা যায় না। তবে মনোজই বিপক্ষের সব চেয়ে বড় জুটি ভেঙে দেন। তাঁর লোয়ার ফুলটস বলে স্কোয়ার ড্রাইভ করতে গিয়ে কভারে প্রদীপ্তর হাতে ক্যাচ তুলে দেন শিবম।

তবুও বাংলার পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না দলের মেন্টর অরুণ লাল। তিনি বলেন, ‘‘আরও কম রানে বিপক্ষকে বেঁধে দেওয়া উচিত ছিল।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘এই পিচে আমাদের ৪০০ রান করতেই হবে। দেখা যাক আমরা কতটা করতে পারি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket Ranji Trophy Bengal Delhi Ashok Dinda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE