ইংল্যান্ডকে হারিয়ে মহিলাদের প্রথম অনূর্ধ্ব ১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হলেন শেফালিরা। ছবি: আইসিসি।
মহিলাদের প্রথম অনূর্ধ্ব ১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হল ভারত। রবিবার ফাইনালে শেফালি বর্মারা ৭ উইকেটে হারালেন ইংল্যান্ডকে। প্রথম ব্যাট করে ইংল্যান্ড ১৭.১ ওভারে করে ৬৮ রান। জবাবে ভারত ১৪ ওভারে করল ৩ উইকেটে ৬৯ রান। উল্লেখ্য, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ছেলেদের অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। সেই অর্থে বছর ঘোরার আগেই ক্রিকেটের আরও একটি বিশ্বকাপ এল ভারতের ঘরে।
কম রানের লক্ষ্য হলেও ভারতের ইনিংসের শুরুটা ভাল হয়নি। অধিনায়ক শেফালি ভাল শুরু করলেও দ্রুত আউট হয়ে যান। ওপেন করতে নেমে শেফালি করলেন ১১ বলে ১৫ রান। তাঁর ব্যাট থেকে এল একটি করে চার এবং ছয়। আর এক ওপেনার শ্বেতা সেহরাওয়াতও ৫ রান করে আউট হলেন। একটি চার মারলেন তিনি। ভারতীয় ইনিংসকে নির্ভরতা দিল তৃতীয় উইকেটে সৌম্যা তিওয়ারি এবং গোঙ্গাদি তৃষার জুটি। জয়ের লক্ষ্য বড় না থাকায় দু’জনেই ঝুঁকি না নিয়ে ব্যাট করার চেষ্টা করলেন। বল বুঝে খেললেন। ভাল বলকে যেমন সমীহ করলেন, তেমনই খারাপ বলে রান তুললে ভুল করলেন না। ২০ রানে ভারত ২ উইকেট হারানোর পর সৌম্যা-গোঙ্গাদির জুটিতে ধীরে ধীরে জয়ের রাস্তায় হাঁটতে শুরু করে।
প্রথম ১০ ওভারে ৪৮ রান তুলল ভারত। পরের ১০ ওভারের জন্য ভারতের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২১ রান। ইংল্যান্ডের ইনিংস ৬৮ রানে শেষ হওয়ার পরেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রয়োজনীয় আত্মবিশ্বাস পেয়ে যান শেফালিরা। লড়াই করার মতো রান তুললে না পেরে ইংল্যান্ড কিছুটা রক্ষণাত্মক রণনীতি নেয়। তাতেও লাভের লাভ হয়নি। গোঙ্গাদি ২৪ রান করে যখন সাজঘরে ফিরলেন, তখন ভারত জয় থেকে মাত্র ৩ রান দূরে। তিনি করলেন ২৯ বলে ২৪ রান। মারলেন তিনটি বাউন্ডারি। শেষ পর্যন্ত সৌম্য়া অপরাজিত থাকলেন ২৪ রান করে। তাঁর ৩৭ বলে ইনিংসটি সাজানো তিনটি চারের সাহায্যে। শেষ পর্যন্ত সৌম্যার সঙ্গে উইকেটে ছিলেন হৃষিতা বসু (অপরাজিত শূন্য)। ইংল্যান্ডের সফলতম বোলার অ্যালেক্সা স্টোনহাউস ৮ রানে ১ উইকেট নিলেন। একটি করে উইকেট পেয়েছেন হান্না বেকার এবং গ্রেস স্ক্রিভান্স।
ব্যাটারদের আগে ফাইনালে দাপট দেখালেন ভারতীয় বোলাররাও। বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব দিলেন বাংলার জোরে বোলার তিতাস সাধু। ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা সুবিধা করতে পারলেন না। ফাইনালের প্রথম থেকেই স্নায়ুর চাপে ভুগতে দেখা যায় তাঁদের। টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠান ভারতীয় দলের অধিনায়ক শেফালি। তাঁর সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না, তা প্রমাণ করে দিলেন ভারতীয় বোলাররা। নতুন বল হাতে দুই জোরে বোলারই ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলা দলের ব্যাটিংয়ে ধস নামালেন। তিতাসের সুইং সামলাতেই পারলেন না ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা। ৪ ওভার বল করে মাত্র ৬ রান খরচ করে ২ উইকেট তুলে নিলেন তিনি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওভার প্রতি মাত্র ১.৫ রান খরচ করলেন হুগলির চুঁচুড়ার বাসিন্দা। তিনি সাজঘরে ফেরালেন ওপেনার লিবার্টি হিপ (শূন্য) এবং চার নম্বরে নামা উইকেটরক্ষক-ব্যাটার সেরেন স্মেলকে (৩)। তিতাসের মতো কৃপণ না হলেও ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের অস্বস্তিতে রাখলেন অর্চনা দেবীও। তিনি আউট করলেন তিন নম্বরে নামা নিমাহ হল্যান্ড (১০) এবং ওপেনার তথা অধিনায়ক গ্রেস ক্রিভেন্সকে। ভাল বল করলেন পার্শ্ববী চোপড়াও। ১৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নিলেন তিনি। আউট করলেন রিয়ানা ম্যাকডোনাল্ড-গে (১৯) এবং চেরিস পাভেলিকে (২)।
ইংল্যান্ডের কেউই ব্যাট হাতে দলকে ভরসা দিতে পারলেন না। তাদের ইনিংসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ম্যাকডোনাল্ড-গে। ২৪ বলে ১৯ রানের ইনিংসটি তিনি সাজালেন তিনটি চারের সাহায্যে। প্রথম ওভার থেকেই উইকেট হারাতে শুরু করে ইংল্যান্ড। শুরুর চাপ তারা আর সামলাতে পারেনি। বরং ধারাবাহিক ভাবে সাজঘরে ফিরলেন ব্যাটাররা। উল্লেখযোগ্য কোনও জুটি তৈরি করতে পারলেন না ইংরেজরা। মাত্র ৫৩ রানেই ৮ উইকেট হারাল তারা। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড করল ৬৮ রান। দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস খেললেন স্টোনহাউস এবং সোফিয়া স্মেল। দু’জনের ব্যাট থেকেই এল ১১ রান করে। একটি করে উইকেট পেলেন শেফালি বর্মা, সোনম যাদব এবং মন্নত কাশ্যপরা। অনবদ্য বল করার জন্য ম্যাচের সেরা বাংলার তিতাসই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy