বিরাট কোহলি (বাঁ দিকে) ও রোহিত শর্মা। ছবি: রয়টার্স
সাদা বলের ক্রিকেটে কি কেরিয়ার শেষ হয়ে গেল বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার! দেশের মাটিতে এক দিনের বিশ্বকাপের পর থেকে এই প্রশ্নই সব থেকে বেশি উঠছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে যে দল ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে এক দিনের ও টি-টোয়েন্টি দলে নেই রোহিত, কোহলি। তার পরে এই জল্পনা আরও বেড়েছে।
বিশ্বকাপের পরে বিরাট নাকি বোর্ডকে অনুরোধ করেছিলেন যে, লাল বলের ক্রিকেটেই এখন মন দিতে চান। সেই কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সাদা বলের ক্রিকেটে যেন তাঁকে না রাখা হয়। বোর্ড সেই অনুরোধ মেনে নিয়েছে। রোহিতও কি তেমনই অনুরোধ করেছিলেন? দল ঘোষণার পরে বোর্ড জানিয়েছে, রোহিতও বিরাটের মতোই সাদা বলের ক্রিকেট খেলতে চান না বলে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু দল ঘোষণার আগেও শোনা যাচ্ছিল, টি-টোয়েন্টিতে রোহিতকেই অধিনায়ক করা হবে। হঠাৎ করে ছবিটা কী ভাবে বদলে গেল? তা হলে কি সত্যিই রোহিতের অনুরোধ মেনে তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হল! না কি ম্যানেজমেন্ট শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাইরে রাখল!
এমনিতেও বিরাট ও রোহিতকে কুড়ি-বিশের ফরম্যাটে শেষ বার ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলতে দেখা গিয়েছে। তার পর থেকে আর জাতীয় দলের জার্সিতে ছোট ফরম্যাটে খেলেননি তাঁরা। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যে দল খেলছে, সেই দলই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে রয়েছে। আরও কয়েক জন ক্রিকেটারকে নেওয়া হয়েছে। তবে বেশির ভাগই তরুণ। বোর্ডের সিদ্ধান্তে স্পষ্ট যে, টি-টোয়েন্টিতে তরুণদের উপরেই ভরসা রাখছে তারা। তরুণ হলেও আইপিএলে খেলার সুবাদে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে খেলতে সমস্যা হচ্ছে না রিঙ্কু সিংহ, তিলক বর্মাদের। সামনের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তাই এখন থেকেই একটা দল তৈরি করতে চাইছে ভারত। সেখানে যে বিরাট, রোহিতদের আর জায়গা নেই, তা বোঝা যাচ্ছে।
কিন্তু এক দিনের ক্রিকেটে তো বিশ্বকাপেও খেলেছেন দু’জনে। শুধু তা-ই নয়, বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রানের তালিকায় প্রথম দুইয়ে রয়েছেন তাঁরা। তা হলে সেখানে কেন বদল করতে চাইবে বোর্ড?
উত্তরটা হয়তো লুকিয়ে রয়েছে ভবিষ্যতে। এর পরে ভারত আইসিসি প্রতিযোগিতা খেলবে ২০২৫ সালে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তত দিনে রোহিত ও বিরাটের বয়সও দু’বছর করে বেড়ে যাবে। রোহিতের বয়স হবে ৩৮। বিরাট ৩৭। সেই বয়সে এক দিনের ক্রিকেটের পাশাপাশি টেস্ট ক্রিকেট খেলার ধকল তাঁরা নিতে পারবেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তা ছাড়া যে হেতু টেস্ট দলে অভিজ্ঞতা প্রয়োজন তাই সেখানে বিরাট, রোহিতকে থাকতে হবে। এমনিতেই চেতেশ্বর পুজারা ও অজিঙ্ক রহানের টেস্ট কেরিয়ার শেষের পথে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সুযোগ পাননি তাঁরা। তাই অভিজ্ঞ ব্যাটার হিসাবে রোহিত, বিরাটকে খেলতেই হবে। সেই কারণেই দুই ক্রিকেটারের উপর থেকে ধকল কমাতে হয়তো তাঁদের একটি ফরম্যাটেই খেলাতে চাইছে ম্যানেজমেন্ট।
বিরাট, রোহিতও কি সেটাই চাইছেন? একটা বয়সের পরে ক্রিকেটারদের বেছে নিতে হয় যে তাঁরা কোন ফরম্যাটের উপর জোর দেবেন। সেখানে টেস্ট ক্রিকেট তাঁদের আদর্শ জায়গা। কারণ, লাল বলের ক্রিকেটে শুধু শক্তি নয়, মানসিক জোর ও অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়। নতুন প্রজন্মকে শিখিয়ে দিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। এখন যে ভাবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চলছে তাতে প্রতিটি সিরিজ় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। সেই কারণেই হয়তো বিরাট, রোহিতও বুঝতে পারছেন যে এ বার ধীরে ধীরে শুধুমাত্র একটি ফরম্যাটের দিকে এগোতে হবে তাঁদের। বোর্ড কিন্তু সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের টি-টোয়েন্টি দল: সূর্যকুমার যাদব (অধিনায়ক), রবীন্দ্র জাডেজা (সহ-অধিনায়ক), যশস্বী জয়সওয়াল, শুভমন গিল, রুতুরাজ গায়কোয়াড়, তিলক বর্মা, রিঙ্কু সিংহ, শ্রেয়স আয়ার, ঈশান কিশন, জীতেশ শর্মা, ওয়াশিংটন সুন্দর, রবি বিষ্ণোই, কুলদীপ যাদব, আরশদীপ সিংহ, মহম্মদ সিরাজ, মুকেশ কুমার, দীপক চাহার।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের এক দিনের দল: লোকেশ রাহুল (অধিনায়ক), রুতুরাজ গায়কোয়াড়, সাই সুদর্শন, তিলক বর্মা, রজত পটীদার, রিঙ্কু সিংহ, শ্রেয়স আয়ার, সঞ্জু স্যামসন, অক্ষর পটেল, ওয়াশিংটন সুন্দর, কুলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্র চহাল, মুকেশ কুমার, আবেশ খান, আরশদীপ সিংহ, দীপক চাহার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy