বাংলাকে লড়াইয়ে রাখলেন মনোজ এবং শাহবাজ। —ফাইল চিত্র
তিনি বাংলার জার্সিতে রঞ্জি জিততে চান। সেই খিদে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক। পায়ে চোট রয়েছে। ক্রেপ ব্যান্ডেজ পরেই নেমে পড়লেন সেমিফাইনালে। তাঁর অভিজ্ঞতা বাংলার প্রয়োজন। তিনি নিজে যেমন রঞ্জি জিততে চান, তেমনই বাংলাকে রঞ্জি জেতাতেও চান। সেই লড়াইয়ের মাঝে একটা চোট তাঁকে কাবু করতে পারে? অভিষেক রামন, অভিমন্যু ঈশ্বরনরা ফিরে গেলেও তিনি দাঁত কামড়ে ক্রিজে পড়ে রইলেন। বাংলার ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি দিনের শেষে ৮৪ রানে অপরাজিত। সঙ্গী শাহবাজ আহমেদ। তিনি অপরাজিত ৭২ রানে।
মধ্যপ্রদেশ প্রথম ইনিংসে ৩৪১ রান করে। কোয়ার্টার ফাইনালে ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে রেকর্ড গড়া বাংলা সেমিফাইনালে প্রথম ইনিংসের শুরুতে মুখ থুবড়ে পড়ল। যে ব্যাটাররা অন্তত অর্ধশতরান করেছিলেন কোয়ার্টার ফাইনালে, তাঁরা রানই পেলেন না বুধবার। অভিষেক রামন ০, সুদীপ ঘরামি ০, অনুষ্টুপ মজুমদার ৪, অভিমন্যু ঈশ্বরন ২২ এবং অভিষেক পোড়েল ৯ রানে আউট। প্রথম ওভারেই দু’উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলা। সেই ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই একে একে ফিরে গেলেন অভিমন্যুরা। একটা সময় ৫৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলা ধুঁকছিল।
সেই সময় ক্রিজে মনোজ তিওয়ারি এবং শাহবাজ আহমেদ। মধ্যপ্রদেশের সাজঘর উত্তেজিত। প্রথম ইনিংসেই বাংলাকে বেকায়দায় ফেলতে পেরে ম্যাচ পকেটে পুরে ফেলার হাসি দেখা যাচ্ছিল তাঁদের মুখে। সেই সব হাসি মিলিয়ে গেল দিনের শেষে। সৌজন্যে মনোজ এবং শাহবাজ।
সেমিফাইনালে নামার আগে হাঁটু ফুলে গিয়েছিল মনোজের। ম্যাচের আগের দিন জানিয়েছিলেন তিনি খেলবেন। পায়ে ক্রেপ ব্যান্ডেজ বেঁধেই খেলবেন। সেই পা নিয়েই বুধবার কখনও সুইপ, কখনও রিভার্স সুইপ মারলেন কুমার কার্তিকেয়দের। আলুরের পিচ মন্থর। স্পিন মন্ত্রেই বাজিমাত করতে চেয়েছিল মধ্যপ্রদেশ। ইনিংসের শুরু থেকেই দু’দিক দিয়ে দুই স্পিনারকে নিয়ে এসেছিল চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের দল। তাতে সুদীপরা ফিরে গেলেও মনোজকে আটকানো সহজ ছিল না। তিনি স্পিন খেলতে জানেন। স্পিনের ঘূর্ণিকে পরাস্ত করলেন সুইপ, রিভার্স সুইপ দিয়ে। ১৮২ বলে ৮৪ রানে অপরাজিত মনোজ মেরেছেন ন’টি চার।
আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে নিয়মিত প্রথম একাদশে জায়গা করে শাহবাজকে এই বাংলা দলের অন্যতম সেরা সদস্য মনে করেন কোচ অরুণ লাল। তাঁর মতে অলরাউন্ডাররাই বদলে দিতে পারে ম্যাচের রং। সেই শাহবাজ জুটি বাঁধলেন মনোজের সঙ্গে। বুধবার তাঁরা ১৪৩ রানের জুটি গড়েছেন। বৃহস্পতিবারও তাঁদের দিকেই তাকিয়ে থাকবে বাংলা। এখনও যে ১৪৪ রানে পিছিয়ে রয়েছেন মনোজরা। মন্ত্রীমশাই জানেন তাঁর কাজ শেষ হয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের নেমে পড়তে হবে রান করার লক্ষ্যে। তাঁর শতরান করতে দরকার আর ১৬ রান। কিন্তু সেখানে তিনি থামতে রাজি নন। বাংলাকে নিশ্চিন্ত রানে পৌঁছে তবেই স্বস্তি পাবেন প্রাক্তন অধিনায়ক।
অরুণ লাল চেয়েছিলেন তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রদেশের ইনিংস শেষ করতে। বুধবার আউটফিল্ড ভিজে থাকায় দেরিতে শুরু হয় দ্বিতীয় দিনের খেলা। হাতে চার উইকেট নিয়ে মধ্যপ্রদেশ দ্বিতীয় দিনে যোগ করে মাত্র ৭০ রান। পেসার মুকেশ কুমার নিয়েছেন চার উইকেট। তিন উইকেট নিয়েছেন শাহবাজ আহমেদ। দু’টি উইকেট নিয়েছেন আকাশ দীপ এবং একটি উইকেট নিয়েছেন প্রদীপ্ত প্রামাণিক।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy