Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Ranji Trophy

Ranji Trophy 2022: আর্থিক অনটনকে হারিয়ে বাবার ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নপূরণ করছেন বাংলার সুদীপ

আর্থিক অনটন সুদীপের দীর্ঘদিনের সঙ্গী। তার মধ্যেও ছেলেকে ক্রিকেটার তৈরি করার স্বপ্ন দেখেছেন বাবা। সেই স্বপ্ন ডানা মেলল বেঙ্গালুরুর মাঠে।

শতরানের পর সুদীপ।

শতরানের পর সুদীপ। ছবি: টুইটার থেকে

নিজস্ব সংবাদদাতা
নৈহাটি শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২২ ১২:২১
Share: Save:

ট্রেনে-বাসে যাওয়ার সময় অনেকের তির্যক মন্তব্য শুনতে হয়েছে সুশান্ত ঘরামিকে। তিনি সুদীপ ঘরামির বাবা। ব্যঙ্গ করে অনেকে বলতেন, “ছেলে কি সচিন-সৌরভ হবে নাকি?” বেঙ্গালুরুতে ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে রঞ্জির কোয়ার্টার ফাইনালে দেড়’শ রান করে সুদীপ বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছে। এই লেখা প্রকাশিত হওয়ার সময় পর্যন্ত সুদীপ অপরাজিত।

ছেলে শতরান করার পর থেকেই সুশান্তের ফোন বেজে চলেছে। শুভেচ্ছায় ভাসছেন তিনি। ছেলের রঞ্জিতে প্রথম শতরান আনন্দ এনে দিয়েছে নৈহাটির বাড়িতেও। নিজের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন ছেলের মধ্যে দিয়ে সত্যি হয়েছে। অভিভূত সুশান্ত বলছিলেন, “আমি চাই সুদীপ ভারতের হয়ে খেলুক।”

বেঙ্গালুরুর জাস্ট ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মাঠে সুদীপ যখন শতরান করে ব্যাট তুলছেন, তখন নৈহাটির আম্রপল্লি এলাকাও আনন্দে ভাসছে। তাঁদের প্রিয় সুদীপ বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যে ছেলেটিকে ক্রিকেটার হওয়ার জন্য ছোটবেলা থেকে অভাবের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে, অনুশীলন করার জন্য ঘুরে বেড়াতে হয়েছে, সেই ছেলেই বেঙ্গালুরুর মাঠে বাংলার ভরসা।

সুশান্ত পেশায় রাজমিস্ত্রি। অভাব তাঁদের সব সময়ের সঙ্গী। নিজের সেই কারণে ক্রিকেট শেখা হয়নি। জেদ ছিল, ছেলেকে ক্রিকেটার তৈরি করবেন। আর্থিক অনটন নিয়ে ছেলেকে ক্রিকেটার বানানোর স্বপ্ন অনেকেই দেখতে সাহস পান না। সুশান্ত দেখলেন এবং সেই স্বপ্ন সত্যিও হল। রঞ্জির কোয়ার্টার ফাইনালে ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে প্রথম দিনেই শতরান করলেন সুদীপ। দিনের শেষে অপরাজিত ছিলেন ১০৬ রানে। দ্বিতীয়দিন ১৫০ পেরিয়ে গিয়েছেন।

সুদীপের বাবা ছেলের ফিল্ডিং দেখে তাঁকে ক্রিকেটার তৈরি করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ম্যাচ শেষে তাঁর প্রশংসা করার সময় অরুণ লাল বলে দিলেন, “দেশের সেরা পাঁচ ফিল্ডারের এক জন সুদীপ!”

নৈহাটিতে ক্রিকেট কোচ দেবেশ চক্রবর্তীর কাছে ছেলেকে নিয়ে গিয়েছিলেন সুশান্ত। সুদীপদের আর্থিক অবস্থা দেখে কোনও পারিশ্রমিক নিতেন না দেবেশ। কিছু দিনের মধ্যেই নৈহাটির ক্লাব থেকে বরখাস্ত করা হয় দেবেশকে। ধাক্কা খায় সুদীপের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নও। কিন্তু দেবেশ তাঁর ছাত্রের হাত ছাড়েননি। ইছাপুর, কল্যাণী, বারাসাতের বিভিন্ন কোচিং ক্যাম্পে সুদীপকে নিয়ে ঘুরতেন। সেখানে অনুরোধ করতেন সুদীপকে অনুশীলন করতে দেওয়ার জন্য। এই ভাবেই ঘুরে ঘুরে ক্রিকেট শেখা শুরু সুদীপের। শুরু স্বপ্ন সত্যি করার লড়াইয়ের।

১২ বছর ধরে স্বপ্ন দেখছিলেন সুশান্ত। সত্যি হল সোমবার। এ বার তাঁর স্বপ্ন ছেলেকে ভারতীয় দলের জার্সিতে দেখা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy